উনার নাম শেলু আকন্দ। জামালপুরের সাহসী সাংবাদিক তিনি। সন্ত্রাসি চক্রের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দেয়ায় তিনি আজ নিধারুন পঙ্গু। চক্রটি কিন্তু শেলু আকন্দের পৈতৃক সম্পদ লুটপাট করছিলোনা। লুটপাট করেছিল রাষ্ট্রীয় সম্পদ। তাইতো রাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে জনৈক এক সাংবাদিকের ওপর হামলা করেছিল। শেলুর সামনে হামলা করায় তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন। তাইতো তিনি আজ খোড়া, পঙ্গু কিংবা প্রতিবন্ধী। ধিক্কার জানাতে ইচ্চে করে ওই সকল নষ্ট মানুষগুলোকে যারা শেল্টার দিচ্ছে। কারা ওদের শেল্টারদাতা।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। সাহসী, সদালাপী শেলু গত তিন মাস ধরে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় বাঁচার আকুতি নিয়ে ছটফট করছে। যার দুটি পা আজ অকেজো। চিকিৎসকরা বলেছেন তিনি আর আগেরমত চলাফেরা করতে পারবেন না। কী অপরাধ ছিলো শেলুর? রাষ্ট্র কি জবাব দিতে পারবে?
কী অপরাধ ছিলো শেলুর: তিনি একজন সাংবাদিককে নির্মম ভাবে মারপিটের প্রতিবাদ করেছিলেন। আর অসহায় সাংবাদিকের উপর হামলা মারপিটের মামলায় স্বাক্ষী দিয়েছেন। এই অপরাধে তাকে রাতের অন্ধকারে একদল সন্ত্রাসী তার উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। লোহার রড়, জিআই পাইপ দিয়ে তার দুটি পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।
সন্ত্রাসীরা তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে মনে করেছিল তাকে চিরতরে শেষ করে দিয়েছে। তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে তার লাশ নদীতে ফেলে দেবার পরিকল্পার সময় এক নারীর চিৎকারে তাকে ফেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। মৃত্যুর মুখোমুখি শেলু তখনও বেঁচে ছিলেন। শেলু মরেনি।
শেলুর শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে এবং জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান ও প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানকে তার মোবাইল ফোনে বলেছিলেন ভাই ওরা আমাকে মেরে ফেলেছে। আমি নদীর পাড়ে পড়ে আছি আমাকে বাঁচাও। পাগলের মতো ছুটে গিয়ে তারা দেখতে পেয়েছিলেন মৃত্যুর মুখোমুখি শেলুর আক্রান্ত দেহখানা।
সন্ত্রাসীরা এমন ভাবে তার দুটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছিল যে তাকে তুলে হাসপাতালে নেয়ার সেই অবস্থাও ছিলোনা। শেলুকে স্থানীয় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমসহ ময়না আকন্দ , প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান গুড়িয়ে দেয়া পা দুটো জড়িয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা মর্মাহত এমন ভাবে নরপশুরা তাকে আহত করেছে। কোন রকম পা দুটো ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
শেলু পঙ্গু হাসপাতালে ২ মাস পড়ে ছিল। এখন ঢাকায় মেয়ে বাসায় বিছানা আর জানালাকে সঙ্গী করে তাকিয়ে তাকিয়ে অবাক পৃথিবীর নির্মমতা বিচারের আশায় দিন কাটাচ্ছেন। আসলেই কি ন্যায়বিচার পাবেন শেলু? এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রতিনিয়ত সাংবাদিকরা মামলা হামলা, লাঞ্ছিতের শিকার হচ্ছেন। তবে এর শেষ কোথায়? প্রয়োজন সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের।
আসুন, ঐক্যবদ্ধ কন্ঠে আওয়াজ তুলি। সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ করো করতে হবে। জাতির জনকের সোনারবাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হলে চাই সাংবাদিক নির্যাতনমুক্ত একটি আগামির বাংলাদেশ।
আহমেদ আবু জাফর, প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটি ০১৭১২৩০৬৫০১, মে ২৬, ২০২০ খ্রী:
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com