মনির হোসেন শাহিন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেপুর ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর এককালীন ২৫০০ টাকা প্রদানের তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অবশেষে ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী আসনের মেম্বার পূর্ণিমা রাণী বণিককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।তবে একই অভিযোগে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ ও স্থানীয় আরেক মেম্বার জামাল মিয়া বরখাস্ত না হওয়ায় অভিযোগ প্রদানকারী আওয়ামী লীগ নেতা তার অভিযোগটি পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি মুঠোফোনে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকেও জানানো হয়েছে বলে আজ বুধবার সকালে সাংবাদিকদের কে নিশ্চিত করেছেন আবেদনকারী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুম।জানা যায়, লাউর ফতেপুর ইউপির চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদের সহযোগিতায় স্থানীয় একাধিক মেম্বার প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার ওই তালিকায় প্রকৃত দরিদ্রদের বদলে নিজেদের আত্মীয়-স্বজন ও বিত্তশালীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ এনে গত ২ জুন জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল্লাহ আল মাসুম। অভিযোগে বলা হয়, ১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার পূর্ণিমা বণিক ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল মিয়া দরিদ্রদের বাদ দিয়ে নিজেদের বাবা, মা, ছেলে, মেয়ে পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয় ও স্বজনদের নাম তালিকাভুক্ত করেন। পাশাপাশি চেয়ারম্যান নিজেও সুস্থ ও স্বচ্ছল লোকদেরকে হতদরিদ্র দেখিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতাসহ প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার তালিকায় নাম দেন।সূত্র জানায়, এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানের নির্দেশে আবেদনটির তদন্ত করেন নবীনগরের উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র মহিলা মেম্বার (সংরক্ষিত) পূর্ণিমা রাণী বণিককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।এ বিষয়ে আবেদনকারী আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, 'আমার আবেদনে একজন নারী মেম্বারকে বরখাস্ত করা হলেও, সুনির্দিষ্ট আরো বেশি অভিযোগ থাকার পরও চেয়ারম্যান ফারুক ও মেম্বার জামাল বরখাস্ত না হওয়াটা রহস্যজনক। তদন্ত কমিটি ম্যানেজ হয়ে এই অন্যায় কাজটি করেছে। আমি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার স্যারকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানিয়েছি। তিনি আমাকে অভিযোগটির পুনঃতদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।'বিষয়টির তদন্ত করা তিন সদস্যের অন্যতম নবীনগরের উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, 'ওই নারী মেম্বার পূর্ণিমা তার ছেলে আর বউকে তালিকাভুক্ত করার বিষয়টিসহ জামাল মেম্বারের বাবা ও নিকট আত্মীয়কে তালিকাভুক্তির বিষয়টিও তদন্তে পাওয়া গেছে। তবে জামাল মেম্বারের বাবা একজন হিন্দু নারীকে বিয়ে করায়, তাকে ত্যায্য করার মানবিক দিকটিও তদন্ত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল। আর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা আমরা পাইনি।'এ বিষয়ে নবীনগরের ইউএনও মোহাম্মদ মাসুম আজ ১০ই জুন বুধবার সকালে সাংবাদিকের কে বলেন, 'ডিসি স্যারের নির্দেশে বিষয়টির দ্রুত তদন্ত করিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পূর্ণিমা বণিক বরখাস্ত হয়েছেন।'
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত-উত-দৌলা খানের সঙ্গে এবাথিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন সংবাদ মাধ্যমে 'নবীনগরে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার তালিকায় ফের অনিয়মের অভিযোগ' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com