ক্রমশ থাবা বিস্তার করছে ক্যানসার। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকাল রিসার্চের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে ১২ শতাংশ। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ আক্রন্ত হবেন বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারে। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ১৩.৯ লাখ।
রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে ভারতে তামাকজাত দ্রব্য সেবন থেকে ক্যানসার হবে মোট সংখ্যার প্রায় ২৭.১ শতাংশের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন উত্তরপূর্ব ভারতের মানুষ। এরপরেই তালিকায় রয়েছে গ্যাসট্রোইন্টেসটিনাল ট্র্যাক্ট এবং স্তন ক্যানসারের সংখ্যা। পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে ফুসফুস, মুখ, পাকস্থলী এবং ইসোফেগাসের ক্যানসার। মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যাবে স্তন এবং সার্ভিক্স ইউটেরি-র ক্যানসার।
মঙ্গলবারই আইসিএমআর এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ ইনফরম্যাটিক্স অ্যান্ড রিসার্চের তরফে প্রকাশিত হয়েছে ন্যাশনাল ক্যানসার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম রিপোর্ট ২০২০। ২০২০ সালের ক্যানসার সংক্রমণ, মৃত্যুর সংখ্যা এবং ভারতে চিকিত্সা পদ্ধতির বিভিন্ন তথ্য এবং ট্রেন্ডের উপর নির্ভর করেই তৈরি করা হয়েছে এই রিপোর্ট। ক্যানসার ডেটা তৈরি করতে ICMR তথ্য সংগ্রহ করেছে ২৮টি পপুলেশন বেসড ক্যানসার রেজিট্রি এবং ৫৮টি হাসপাতাল ক্যানসার রেজিস্ট্রি থেকে।
২০২০ সালে ৬,৭৯,৪২১ জন পুরুষের শরীরে ক্যানসার পাওয়া গিয়েছে। ২০২৫ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ৭,৬৩,৫৭৫ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ২০২০ সালে ৭,১২,৭৫৮ জন মহিলার ক্যানসার ধরা পড়েছে। ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে ৮,০৬,২১৮ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মোট ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে মহিলাদের স্তনের ক্যানসারের সংখ্যা ২ লাখ অর্থাত্ ১৪.৮ শতাংশ, সার্ভিক্সের ক্যানসার ৭৫ হাজার অর্থাত্ ৫.৪ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে নারী পুরুষ নির্বিশেষে গ্যাসট্রোইনটেস্টিনাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের। অর্থাত্ মোট ক্যানসার আক্রান্তের প্রায় ১৯.৭ শতাংশ।
ভারতে ক্যানসার চিকিত্সায় এখনও প্রধানত ভরসা রাখা হচ্ছে অস্ত্রোপচরা, কেমো থিরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপির উপরই। এই তিন পদ্ধতিই সাধারণত ব্যবহার করা হয় স্তন, মস্তিষ্ক এবং ঘাড়ের ক্যানসার চিকিত্সার ক্ষেত্রে। সার্ভিক্স ক্যানসারে মূলত কেমো থেরাপি এবং রেডিয়েশনের সাহায্যই নেওয়া হয়ে থাকে।
দিল্লির AIIMS-এর রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ডা পি কে জুলকা জানিয়েছেন, ‘গত বেশ কিছু বছরে আমাদের দেশে ক্যানসারের চিকিত্সা উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। এখন আমরা টার্গেটেড থেরাপির ব্যবহার করি, ফলে চিকিত্সায় দ্রুত সাড়া পাওয়া যায়। ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও, সুখবর হল বহু মানুষ প্রাথমিক স্টেজেই চিকিত্সকের কাছে আসছেন। ফলে সেরে ওঠার সম্ভাবনাও বাড়ছে। আমাদের হাতে এখন উন্নতমানের পরীক্ষার সুবিধে রয়েছে। আগে স্টেজ ৪ ফুসফুস ক্যানসারের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের আয়ু ভাবাই যেত না। কিন্তু উন্নতমানের চিকিত্সা এই অসাধ্যও সাধন করেছে।’
সূত্রঃ এই সময়
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com