মোঃ ফিরোজ হোসাইন :আবারও গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আত্রাই নদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করেছে । টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় বন্যার পানির সঙ্গে যুদ্ধের পর কৃষকেরা চাষাবাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও পানি বাড়ায় শঙ্কায় রয়েছেন আত্রাই উপজেলার কৃষক সহ হাজারো অসহায় পানিবন্দি মানুষ।বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । পানির এই বৃদ্ধিতে নদীর অরক্ষিত তীরে ভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে। এ ছাড়া নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক বন্যার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বন্যায় ফসল হারানো কৃষক আবার নতুন ফসল লাগানোর প্রস্তুতি নিলেও তারা এখন আতঙ্কে আছে।বেশ কয়েক দিন ধরে নদীর পানি বাড়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতিতে মাইকিং করা হয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে । এ কারণে এবারও সেপ্টেম্বরে বন্যার আশঙ্কায় অনেক কৃষক শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু করতে দ্বিধায় ভুগছেন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বন্যায় এখনো বিধ্বস্ত বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো। ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি মেরামত করতে পারেননি নিম্ন আয়ের মানুষ রাস্তাঘাট ভেঙে চৌচির। সড়কে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। ব্রিজ-কালভার্টের সংযোগ সড়ক পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় অনেক এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি নামলেও শুরু হয়নি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কাজ। দীর্ঘদিনের বন্যায় অনেক পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এতে নদীতে পানি বাড়তে দেখলেই আতঙ্ক জেঁকে বসছে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে মনিয়ারী, ভোঁপাড়া ও শাহাগোলা ইউনিয়নে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে আমন চাষ করা হয়। গত বছর আমন চাষের মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চিনি আতপ ধানের চাষ হয়েছিল। এতে করে কৃষকরা ব্যাপক লাভবানও হয়েছিল। এবারে আগাম বন্যার পানি মাঠে চলে আসায় আমনচাষ ব্যহত হতে পারে।উপজেলার সাহাগোলা গ্রামের সোলেমান আলী বলেন, আমাদের বোরো ধান কেটে শেষ না করতেই মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মাঠ পানিতে ভরে গেছে। জমির পানি একটু কমলেও আবারও বাড়ার কারনে আমন ধানের আবাদ এবারে করা সম্ভব হবে না।বাঁকা গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার জমিগুলোতে যেমন বোরো চাষ হয়। তেমনি আমন ধানে চাষও ব্যাপক হয়ে থাকে। গতবার আমরা প্রচুর পরিমানে চিনি আতপ ধানের চাষ করেছিলাম। তাতে ফলনও হয়েছিল ভাল। কিন্তু এবারে বীজতলা তৈরি করতেই পারলাম না। কিভাবে আমন চাষ করবো তা নিয়ে হতাশায় রয়েছি।এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, হঠাৎ করে আবারও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি আবারও বেড়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অল্প সময়ে পানি নেমে না গেলে রবিশস্য করতে কিছুটা বিঘ্নিত হবে৷
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com