উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ নড়াইলের লোহাগড়ায় বন বিভাগের বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কামঠানা-কাউড়িখোলা সড়কের দু’পাশের প্রায় ১৫০টি বিভিন্ন প্রজাতির সরকারী গাছ বিনা টেন্ডারে কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
এই গাছগুলির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা।
এলাকাবাসির অভিযোগে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিন কামঠানা-কাউড়িখোলা সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় দুই পাশ দিয়ে বাবলা, রেন্ট্রি, মেহগনি, গামারীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় কয়েক শতাধিক গাছ ছিল।
গাছগুলি রোপন করেছিলো কাউড়িখোলা-কামঠানা বনায়ন সমিতি সদস্যরা।সমিতির সভাপতির দায়িত্ব আছেন মনি মিয়া, প্রায় ৩০ বছর ধরে তাদের তত্বাবধায়নে গাছগুলো বড় হয়ে উঠে।
অথচ সমিতির সদস্যদের এবং ইউনিয়ন পরিষদের প্রাপ্য অংশ না দিয়ে এমনকি তাদের না জানিয়ে বিনা টেন্ডারে গাছগুলি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমনটি অভিযোগ ওঠে মনি মিয়া, অাজম, ও বনায়ন সমিতি কয়েক জন সদস্য, নাম না প্রকাশ্যে কিছু এলাকার মানুষ ও সদস্যগণ অভিযোগ করে বলেন, গাছ কাটার ব্যাপারে কোন মিটিং বা রেজুলেশন না করে গাছ কাটার কাজ শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে সমিতির সভাপতি মনি মিয়া শেখের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। এর একদিন পরে মনি মিয়ার সাথে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা অফিসের সাথে যোগাযোগ করে গাছ কাটতেছি, ও গাপ অফিসে পাঠাবো, সাংবাদিকদের প্রশ্নে মনি মিয়া আরো বলেন, আমরা অফিসের ফরেস্টার দের সাথে যোগাযোগ করে গাছ কাটছি।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল শিকদার ও সমিতির সম্পাদক আব্দুর ছত্তারসহ কমিটির অনেকেই জানান, আমাদের না জানিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বন বিভাগের লোকেরা শ্রমিক দিয়ে রাস্তার দুই পাশের রোপন করা মূল্যবান রেন্ট্রি, বাবলা, গামারীসহ প্রায় ২০০টি অতি মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে গেছে। যার মূল্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা।
স্থানীয় অনেকেই জানান, বন বিভাগের লোকসহ ওই সমিতির দুই একজন মিলে কাটা গাছের বেশীর ভাগ গুড়ি লোহাগড়ার কালনা সড়কের পাশে অবস্থিত সমিল এলাকার তিন-চার জায়গায় রেখে সেখান থেকে বিক্রি করছে। সেখান থেকে বেশ কিছু গাছের গুড়ি গত শনিবার সকালে ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে যেতেও দেখা গেছে।
সোমবার ‘সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে, কামঠানা-কাউড়িখোলা সড়ক চওড়া করে পাকাকরনের জন্য ভেকু ম্যাশিন দিয়ে রাস্তা খোড়া হচ্ছে।
সড়কের দুই পাশে প্রায় শতাধিক গাছের গোড়া কাটা ও গর্ত করে গোড়ার অংশ খুচে নিয়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে। কাটা গাছের কিছু গুড়ি রাস্তার পাশে রয়েছে। অনেক গুড়ি পার্শ্ববর্তী কামঠানা গ্রামের ইমরুল মুন্সি ও আলমগীরের বাড়ীতে লুকানো ছিলো।
লোহাগড়ার কয়েকটি স’মিলের পাশে বড় গাছের গুড়ি রাখা হয়ে ছিলো। এছাড়া উপজেলা বন বিভাগ চত্বরে ছোট বড় প্রায় ২০/২৫ টি গাছের ছোট ছোট গুড়ি নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত বন বিভাগের কর্মচারী ইকবাল হোসেন জানান, কামঠানা-কাউড়িখোলা সড়কটির বর্তমান অবস্থা থেকে চওড়া করা হচ্ছে। যার কারণে দু’পশের বেশ কিছু গাছ কাটা হয়েছে।
গাছ গুলি উপজেলা বন বিভাগের অফিস চত্বরে রাখা হচ্ছে । তিনি বিক্রয়ের বিষয়ে কিছুই বলতে পারেন না।
স’মিলের পাশে রাখা গাছের গুড়ি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান কে বা কারা সেখানে রেখেছে তা তিনি সেটা জানেন না।
এ ব্যাপারে জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, সড়ক ও জনপত বিভাগ আমাদের না জানিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করায় রাস্তার পাশের কিছু গাছ ভেঙ্গে পড়ার আশংকায় কেটে লোহাগড়ার বন বিভাগের অফিস চত্বরে রেখে দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়। দ্রুত সড়কের কাজ শুরু হওয়ায় টেন্ডার বা যে সকল নিয়ম কানুন আমাদের আছে তার কোনটাই করা সম্ভব হয়নি। পথে বা অন্য কোথাও কেউ কোন গাছ রেখেছে কিনা বা বিক্রি করেছে কিনা তা আমার জানা নেই।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com