লিয়াকত, রাজশাহী : রাজশাহীর দুগার্পুর উপজেলার পুরাতন তাহেরপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠনে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মকবুল হেসেনের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
দুগার্পুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিন নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, প্রফেসর মকবুল হোসেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে যোগদানের পর থেকেই হঠকারী সিদ্ধান্তে এককভাবে শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা করতে গিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছেন। আমার স্কুলের ১১ সদস্যের ম্যানেজিং কমিটির মধ্য থেকে পাঁচজন পদত্যাগ করলেও জালিয়াতি করে বোর্ড চেয়ারম্যান ৬ জনের পদত্যাগপত্র দেখিয়ে কমিটি ভেঙ্গে দেন। পরে তার এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কমিটির এক সদস্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তাকে লিখিতভাবে জানান যে, ‘তিনি পদত্যাগ করেননি’। তবুও তার লিখিত আপত্তি উপেক্ষা করে ওই কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, পুনরায় শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী তিন সদস্যের নাম প্রস্তাব করে এডহক কমিটি জমা দেয়া হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের মতামতকে উপেক্ষা করে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান তার পছন্দের ব্যক্তিকে স্কুলের সভাপতি করেন। যাকে সভাপতি করা হয়েছে তিনি ওই স্কুলেরই সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কেরানি আব্দুস সাত্তার প্রাং। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের সাথে তার সংখ্যতা থাকায় বিতর্কিত এ ব্যক্তিকে সভাপতি করা হয়েছে। বোর্ড চেয়ারম্যানের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। উদ্ভূত পরিস্তিতিতে এডহক কমিটির আর কোনো কার্যকারিতা নেই বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে বোর্ড চেয়ারম্যানের মনগড়া এডহক কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, দাবি মানা না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে শিক্ষা বোর্ডের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও একই উপজেলার শাহ নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি থেকে দুই সদস্য পদত্যাগ করায় সেই কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তের কারণে বগুড়ার দিমাইদিঘী ও শাজাহানপুরের গোহাইল ইসলামীয়া স্কুল এন্ড কলেজের এডহক কমিটি থেকে দুইজন করে চার সদস্য পদত্যাগ করেছেন। ফলে ওই দুটি কমিটিরও কার্যকারিতা নেই বলে সূত্রটি উল্লেখ করেছে।
শিক্ষা বোর্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্রে আরো জানা গেছে, নিয়মানুযায়ী এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এডহক কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা না ভেঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। সূত্রটি আরো জানায়, এরপর শিক্ষা বোর্ডে ডেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ডেকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে, ‘এসব ব্যক্তিকে দিয়ে কমিটি চালিয়ে নেন’। এসব উপদেশেও সুফল বয়ে আনছে না। ফলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা বোর্ড মনোনিত কমিটি ভেঙ্গে দিতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক এক চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর দেবাশিষ রঞ্জন রায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এসব অভিযোগ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মকবুল হেসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com