ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, বহুকাল আগে থেকেই ধর্মীয় এবং আড়ম্বরপূর্ণ কোনো অনুষ্ঠানে গোসল করে গায়ে সুগন্ধি মাখার রেওয়াজ ছিল। এটিকে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেও ধরা হতো। মুঘল রানি নুরজাহান গোলাপের তেল ও গোলাপজল দিয়ে গোসল করতেন। সুগন্ধি শিল্পের বিস্তারে তাঁর ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে জানা যায় ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে.....
সম্রাট বাবরের ছিল গোলাপের প্রতি আসক্তি এজন্য ইরান থেকে তার জন্য আসত সহস্র বোতল ভর্তি হরেক রকমের গোলাপের নির্যাস। বাবর ইরানের ইস্পাহান ও ইরাকের বসরা থেকে উৎকৃষ্ট প্রজাতির গোলাপ এনেছিলেন তার বাগানের জন্য। এই গোলাপের সম্মানে ভারতের কিছু গোলাপ এখনও বসরাই গোলাপ নামে পরিচিত। মোগল যুগে সুগন্ধি চর্চার সবচেয়ে বেশি বিস্তৃতি ঘটে সম্রাট জাহাঙ্গীর ও তার পত্নী সম্রাজ্ঞী নূরজাহানের সময়ে। সম্রাট জাহাঙ্গীর তার ঘোড়ার লেজেও নাকি মেখে দিতেন নানারকম সুগন্ধি, যাতে করে চলার পথের আকাশ-বাতাস ছেয়ে যায় সুগন্ধের সৌরভে। সৌন্দর্য চর্চায় নূরজাহানের সবচেয়ে খ্যাতিমান আবিষ্কার গোলাপের আতর, যার পোশাকি নাম ‘আতরে জাহাঙ্গীরী’। তবে আতর তৈরির আরেকটি প্রাচীন স্থান হল ভারতের মুর্শিদাবাদ। মোগল আমল থেকে এখানকার আজগর হোসেনের তৈরি গোলাপি আতর ভুবন বিখ্যাত। নুরজাহানের বিশিষ্ট গোসলখানাটিও একটি গবেষণার বিষয়। বিলাসবহুল গোসলখানার চৌবাচ্চায় গোলাপ মিশ্রিত পানিতে তরলাকার ভাসমান পদার্থের মধ্যে গোলাপের নির্যাস ছড়িয়ে রাখা হতো। তার স্নানের পানিতে আতর, গোলাপ, চন্দন, রূপটান ও অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রী মিশ্রিত থাকত।
সুকন্যা নামের এক গবেষক নূরজাহান শিরোনামের এক জীবনী গ্রন্থে লিখেছেন : “নূরজাহান নিজে সুরভিত হতেন গোলাপ নির্যাসের স্নানে, যার দৈনিক খরচ পড়ত তৎকালীন তিন হাজার টাকা”। নূরজাহানের উদ্যোগে কাশ্মীরের বিশিষ্ট উদ্যান শালিমার, নিশাতবাগ প্রভৃতি স্থাপনা ঘটে....
লেখকঃ রাজশাহী পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক "হাসান হাফিজুর রহমান।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com