দু'চারটি গিরগিটির জন্য পুরো গণমাধ্যমকে দায়ী করা যাবেনা
ঘটনার তাৎক্ষনিকতাই সংবাদ। সাংবাদিকরা ঘটনার পরপরই খবরটি প্রকাশ করে। ঠিক ওই ঘটনাটি তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ মাস পেরিয়ে বছর শেষে প্রতিবেদন জমা দেন আদালতে। বিচারক সেটি আমলে নিয়ে যুগব্যাপী আইনী জটিলতা কাটিয়ে বিচারের রায় ঘোষণা করেন।
তৎক্ষনে তাৎক্ষনিক সংবাদের পরের দুই স্টেজ কিংবা ধাপের খবর কেউ রাখতে যান না। আলোচিত ঘটনাটির মামলায় পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদনে চুড়ান্ত না কি চার্জশীট দিয়েছেন, কেউ খবর রাখেন না। খবর রাখেন না লোমহর্ষক ওই ঘটনাটির সাথে জড়িতরা যে বেকসুর খালাস হলো!
তাৎক্ষনিক সংবাদটি প্রকাশ করতে গিয়ে আজকাল দূর্ণামের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হচ্ছেন সাংবাদিকরা। কারন ; একঘন্টা আগের ঘটনাটি যখন চোখের বারান্দায় লাইভ হচ্ছে, খুটিনাটি সত্যমিথ্যা তথ্য উপস্থাপন হচ্ছে। কিংবা অনলাইন পত্রিকায় নিউজ চলে আসছে অথবা কালকের ঘটনাটি প্রিন্টে প্রতিবেদন ভাসছে। তখনইতো সত্য মিথ্যা আর সাংবাদিকের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তখনি সাংবাদিকরা আলোচনা/সমালোচনায় ভাসে। একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্নহীন সাংবাদিকের লেখনিতে তদন্ত কাজে বিঘ্ন, বিচার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি এমনকি ব্যক্তিজীবনে অনেকের সংসার ভেঙ্গেছে অগনিত। এসব নাজুক পরিস্থিতিতে আজ খুববেশি প্রয়োজন সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক সাংবাদিকতা। পেশাটিতে জবাবদিহিতা না থাকায় দায়বদ্ধতার স্থানটি সংকুচিত হয়ে গেছে। গুজবের মত নোংরামিতে মেতেছে কখনো বা কেউ কেউ।
আসুন; এবারের গণমাধ্যম সপ্তাহের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পেশাটি রক্ষায় সমাজের সকলে মিলে এগিয়ে আসি। সাংবাদিকদের আর ভুল না বুঝি। ব্যক্তি,পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরি। তাদেরকে ভালোবাসতে শিখি। দেখেনতো; এরা পবিত্র শবেবরাত, শবেকদর, রোজা, ঈদ, কোরবানি, পুজা, বড়দিনের সব মোহ ভুলে নিত্যদিনের খবর আপনাদের চোখের বারান্দায় তুলে দেন। তারা কেউ কারো ভাই, বোন, পুত্র,পিতা নয়তো চাচা-মামা। দুচারটি গিরগিটির জন্য পুরো গণমাধ্যমকে দায়ি করা যাবেনা। এদেরকে চিহ্নিত করে গণমাধ্যমের শক্র কিংবা রাক্ষুসে সাংবাদিক তালিকায় রেখে দেই।
মনে রাখবেন, আপনার পকেটের রাজস্বে রাষ্ট্রের সব বিভাগ চলে। কেবলই সাংবাদিক তারা রাষ্ট্রের কাছ থেকে বেতনভাতা নেয়না। তাদেরও পেট, জগৎ, সংসার সবই আছে। সাংবাদিকরা জাতির বিবেকখ্যাতের কারনে তারা বিবেকবর্জিত কাজ করতে পারেনা। ধানের মাঝে চিটা; তেমনি চালের মধ্যে মরাও আছে। মাথায় উঁকুনও থাকবে। সব মিলিয়ে গোটা জাতিকে এই মহামারী করোনাকালে আরো বেশি আন্তরিক, সংবেদনশীল, ত্যাগের মধ্যদিয়ে দেশরক্ষায় নিবেদিত হতে হবে। ত্যাগ আর ভােগ একত্রে চলবেনা।
সাংবাদিককে আজকাল
সাংঘাতিক, সাম্বাদিক,সোম্বাদিক কোথাও হলুদ,
রাক্ষুসে সাংবাদিক, ভুয়া কিংবা অপ-সাংবাদিক নামে ডাকা হয়। এথেকে গোটা সাংবাদিক সমাজ পরিত্রান চায়। বহু সাংবাদিক কোটিপতি আবার কেউ কেউ কাটায় চরমজীবন। এইসকল চান্দাবাজ,ধান্ধাবাজদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের শক্ত অবস্থান রয়েছে।
শেষকথা; যেহেতু সাংবাদিকরা জাতির বিবেক, রাষ্ট্রের আয়না কিংবা দর্পন। যেটাই বলেন সম্মানের দিক থেকে অতি উচ্চমানের কথা। এই সম্মান ধরে রাখতে পেশার প্রতি আন্তরিক হতে হবে। পেশার জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, ন্যায়পরায়ণতার দীক্ষা নিতে হবে। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় কিছু বিপদগামী সাংবাদিকরা লোকচক্ষু লজ্জ্বা ভুলে গিয়ে বিবেক বিক্রি করে পেশাটিকে জলাঞ্জলি দিয়ে অট্টালিকা গড়েছে। তারা আজ ধিক্কৃত,লজ্জিত।
লেখক: আহমেদ আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম- বিএমএসএফ, কেন্দ্রীয় কমিটি, ০১৭১২৩০৬৫০১ bmsf.bd24 @gmail.com, ২ মে ২০২১ খ্রী:।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com