মাজহারুল রাসেল : আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের প্রায় অর্ধ শতাধিক কারখানা লাচ্ছা সেমাইসহ বিভিন্ন সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে।
জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা, সদর, বন্দর, সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অর্ধ শতাধিক সেমাই তৈরির কারখানা। আর এ সব কারখানায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সব উপকরণ দিয়ে দেদারছে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার সেমাই। অধিক মুনাফার লোভে সেমাই তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক সব ক্ষতিকর উপকরণ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জে, ফতুল্লা ও সদর থানা এলাকায় রমজান শুরুর পূর্ব থেকেই বিভিন্ন সংস্থার অসাধু কর্মকর্তাদের মোটা অংকের অগ্রিম উৎকোচের বিনিময়ে ম্যানেজ করে অবৈধ সকল কারখানা (কোন অনুমতি ছাড়া এবং চোরাই গ্যাস সংযোগ) চালু রেখেছে প্রতি বছরের মতোই ।
লাচ্ছা সেমাই ছাড়াও প্রতি বছরের মতোই মুড়ি তৈরীর প্রায় ২৫/৩০ টি কারখানা বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে জনমানুষের মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি রাষ্ট্রের সম্পদ ও রাজস্বের লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে গুটি কয়েকজন ঘুষখোর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ।
অথচ এসব দেখার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) একেবারে নির্বিকার । বিএসটিআইয়ের অসাধু একটি চক্র এই রমজান মাসকে সামনে রেখে উৎকোচ আদায়ে তাকিয়ে থাকে অসাধু ব্যবসায়ীদের দিকে। যেমন চাতক পাখি বৃষ্টির জন্য আকাশের পানে তাকিয়ে থাকে তেমনি উচ্ছিষ্ট ভোগী অসাধু কর্মকর্তারা তাকিয়ে থাকে রমজান মাসের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ।
শহরের তৈরি লাচ্ছা সেমাইয়ের জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি রয়েছে এমন সুগন্ধা লাচ্ছা সেমাই কারখানায় গত বছরের মতো এবারো যে প্রতারণা করে নাই তার হিসেব কেউ রাখে নাই।
২০২০ সালের রমজানের সময় বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে অত্যান্ত নিম্নমানের লাচ্ছা সেমাই তৈরীসহ অভিনব কায়দায় প্রতারণা করায় কয়েক হাজার প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই ধ্বংস করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ।
এবারো রমজান মাসের শুরুতেই এখানে লাচ্ছা সেমাই তৈরি ধুম পড়ে। সেমাই তৈরি কারিগররা দিন রাত সমানতালে সুগন্ধা সেমাই কারখানা কাজ করে চলেছে। কিন্তু কে রেখেছে নগরীর চিহ্নিত এই প্রতারকদের মানহীন সেমাইয়ের খবর ।
এ সব মৌসুমী ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে অধিক মুনাফা। তারা মানুষের স্বাস্থ্যের দিকটি বিবেচনায় না এনে মুনাফার বিষয়টি মাথায় রেখে নিম্ন মানের উপকরণ ব্যবহার করছে লাচ্ছা সেমাই তৈরিতে।