লিয়াকত রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহী মহানগরীর ছোটবনগ্রাম চন্দ্রিমা থানা এলাকায় সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় তৈরীর জন্য ভূমি অধিগ্রহন মালিকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় নগরীর ছোটবনগ্রাম এলাকায় অধিগ্রহনকৃত জমির টাকার চেক প্রদান অনষ্ঠানটিতে বিভাগীয় কমিশনার ডক্টর হুমায়ন কবীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ চেক প্রদান করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জমি প্রতিটি মানুষের মূল্যবান সম্পদ। এই জমি নিয়েও বেশী বিরোধের সৃষ্টি হয়। আবার জমি ছাড়া কোন কাজ করা সম্ভবও হয়না। বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট, শিল্পকারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ যেকোন স্থাপনাই হোকনা কেন জমি অবশ্যই প্রয়োজন। জমি ক্রয় করে অনেকেই সরকারকে কর ফাঁকি দেয়ার জন্য জমির মূল্য দলিলে কম করে উল্লেখ করেন। ঐ সকল লোক পরে ঠকে যান।
কারন সরকার জমি অধিগ্রহন করলে অত্র এলাকার প্রকৃত মূল্যের তিনগুন দিয়ে থাকেন। সে সময়ে দলিলে কম থাকলে কম পাবে সে। সেজন্য জমি ক্রয় করে প্রকৃত মূল্য দলিলে উল্লেখ করার জন্য জমির মালিকদে পরামর্শ দেন তিনি। সেইসাথে বিক্রেতাদের মূল্য কম উল্লেখকৃত দলিলে স্বাক্ষর না করার অনুরোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, বতর্মান সরকার জবাবদিহিতামূলক স্বচ্ছ ও দূর্নীতিমুক্ত সরকার। এই সরকারের প্রধান ও দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বচ্ছতার সাথে দেশ পরিচালনা করছেন। পূর্বে অধিগ্রহনকৃত জমির টাকা উত্তোলন করতে স্যান্ডেলের তলা ক্ষয় হয়ে গেলেও টাকা পেতেন না জামির মালিকগণ। কিন্তু এই সরকার অধিগ্রহনকৃত স্থানে গিয়ে জমির টাকা পরিশোধ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী অতি অল্প সময়ে মধ্যে অধিগ্রহনের টাকা আজ প্রদান করা হলো।
এক সাথে অনেকগুলো টাকা জমির মালিকদের প্রদান করা হলো। এই টাকা নিয়ে ব্যবসা কিংবা ইন্ডাস্ট্রি করাও সম্ভব। এছাড়াও টাকাগুলো একা ভোগ না করে ওয়রিশদের নিয়মানুযায়ী বুঝে দেয়ার জন্য উপস্থিত চেক গ্রহনকারীদের প্রতি আহবান জানান তিনি। সেইসাথে নারীদের না ঠকানোর পরামর্শ দেন বিভাগীয় কমিশনার। বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি দুই একর জমি বিপরীতে নয় জনের মধ্যে মোট ত্রিশ কোটি টাকার চেক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
সভাপতির বক্তব্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অতি দ্রুত সময়ে কোন প্রকার হয়রানী ও দুর্নীতি ছাড়াই এই টাকার চেক প্রদান করা হলো। কেউ যদি এই টাকা পতে কোন প্রকার লেনদেন করে থাকনে তাহলে তাঁকে জানানোর কথা বলেন।
কারন তিনি নিজে এবং জেলা প্রশাসন কোনভাবেই দুর্নীতির সাথে যুক্ত নয়। তিনি আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নিয়ে নানা দূর্নীতির কথা উঠে এসেছে। কিন্তু রাজশাহীতে কোথায় এমনটা হয়নি। ভবিষ্যতেও হবেনা বলে জানান জেলা প্রশাসক। তিনি আরো বলেন, এই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক প্রকার গর্বিত দাতাও জমির মালিকগণ হয়েছেন।
তবে দ্রুত সময়ে এবং কোন প্রকার হয়রানী ছাড়াই এতোগুলো টাকার চেক পেয়ে চেক গ্রহিতারা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীসহ বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ধন্যবাদ জানান।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নয়টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় চেক প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ডক্টর আাব্দুল মান্নান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিজিত সরকার, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন, পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল আকতার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আহসান উদ্দিনসহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালান করেন সহকারী কমিশনার নাজমুল হোসাইন।