রাজশাহী ব্যুরোঃ রুয়েট এর ড্রাইভার আব্দুস সালাম হত্যা মামলায় রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুানালের বিচারক অনুপ কুমার চারজনকে যাবৎজীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। আজ বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে এই রায় দেন তিনি। আসামীরা হলেন হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী সোহেল রানা, নুরনবী হোসেন হৃদয়, আনোয়ার হোসেন সায়মন ও সাব্বীর। এই মামলায় মোট আসামী ছয়জন। এরমধ্যে দুইজন শিশু থাকায় তাদের মামলা নারী ও শিশু আদালতে চলমান রয়েছে। শিশু আসামীরা হলেন ফয়সাল আহম্মেদ ও শিমুল অরফে পলাশ।
আব্দুস সালামের পক্ষের আইনজীবি বিশেষ ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু বলেন, এই রায়ে তিনি সন্তোষ্ট। মামলার বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বাবু বলেন, ২০১৮ সালেরর এপ্রিল মাসের ৪তারিখ রাত সাড়ে ৮টার দিকে রুয়েটের নির্জন স্থানে সোহেল রানার নেতৃত্বে অন্যান্য আসামী মিলে আব্দুস সালামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন।
এ্যাডভোকেট আরো বলেন, রুয়েটের মধ্যে একটি গ্যারেজের মালিক সোহেল রানার সৎ ভাই টিটু। এর নিকট সোহেল রানা এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মাহিন, হৃদয়, সাব্বির ও পলাশকে গ্যারেজ পুড়িয়ে দিতে বলেন সোহেল রানা। কিন্তু ওদের মধ্যে মাহিন রাজি হয়না। এতে করে সোহেল ক্ষিপ্ত হয়ে তার অন্যান্য সহযোগিদের নিয়ে মাহিনকে মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। মৃত্য মনে করে তারা ফেলে রেখে চলে গেলে মাহিনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতলে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসা করে তিনি সুস্থ্য হন বলে জানান এ্যাডভোকেট বাবু।
পরে এই বিষয় নিয়ে মামলা হলে সোহেল রানা মাহিনকে মামলা তুলে নিতে বলেন। কিন্তু মাহিন যাবতীয় খরচ পরিশোধ করার শর্ত দেন এবং মামলা তুলবেন না বলে জানান। এই ঘটনায় ড্রাইভার আব্দুস সালাম লিড দিচ্ছে ধারনা করে সোহেল গংরা আব্দুুস সালামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন আব্দুস সালাম রুয়েট গেটে চা পান করে বাসায় ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা সোহেল গংরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন।
তিনি আরো বলেন, জায়গাটি অন্ধকার হওয়ায় সে সময়ে কেউ এই হত্যাকান্ড না দেখলেও আসলামের ছেলে পিয়াস বাদি হয়ে মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সন্দেহ বশত: শিমুলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার তথ্যমতে আলামত উদ্ধার ও অন্য্যান্য আসামীদের আটক করে পুলিশ। আজ এই মামলায় চারজনের যাবৎজীবন হলো বলে জানান এ্যাডভোটেক এন্তাজুল হক বাবু।
এই রায়ে আসামীরা মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকাড় বলে বাহিরে চিৎকার করতে থাকেন। তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে বলতে থাকেন। এদিকে নিহত আব্দুস সালামের ছেলে পিয়াস বলেন, এই রায়ে তারা সন্তোষ্ট নন। তারা সর্বোচ্চ রায়ের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান তিনি।