প্রিয় সহযোদ্ধা/সহযোগি সাংবাদিক/শুভার্থী বন্ধুগণের উদ্দেশ্যে ভক্তিপূর্ন ছালাম, শুভেচ্ছা, এবং ভালোবাসা। আপনার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম- বিএমএমএফ দশবছরে পথচলছে; ভাবতেই অবাক লাগার মত। নীতিতে অটল, দেশমাতৃকার টানে প্রতিটি প্রহরে যোগ দেয়া কর্মবীরের পরিশ্রম, সময়, মেধা পদধূলি, সহযোগিতায় বিএমএমএফ আজ দৃঢ়পথে।নানা চড়াই উৎড়াইয়ে বিএমএসএফের নেতাকর্মীদের ভিড়ে সমস্ত পাপ যেন ধুঁলোয় মাটি। আমরা সাংবাদিকদের রুটিরুজির ১৪ দফা নিয়ে কথা বলছি। জাতীয় গণমাধ্যম সম্পাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাচ্ছি। সাংবাদিকদের তালিকা চাচ্ছি। ২০১৩ সাল থেকেই কথা বলছি। কে শোনলেন, কে শোনছেন, কে শোনছেন না তা বড় কথা নয়; বলতে শুরু করেছি মাত্র। কেননা; ৫০টি বছর কিন্তু কম কথা নয়। কী পেলাম; তা বড় কথা মনে হয়না। তবে গণমাধ্যমের প্রতিটি স্তরে কর্মরত সাংবাদিকদের স্বার্থেই কিন্তু সাংবাদিকদের প্রাণের এ ১৪ দফা। আসুন; আপনিও আমাদের সহযোগি হোন। আমাদের সাথে যুক্তহোন ১৪ দফা আন্দোলনে। এ আন্দোলন ' সাংবাদিকদের রুটিরুজি, মর্যাদা, আর দাবি আদায়ের আন্দোলন'। এ আন্দোলন গণমাধ্যমের আন্দোলন। এ আন্দোলন সাংবাদিকদের বেঁচে থাকার আন্দোলন। আমরাও বেঁচে থাকতে চাই। লড়াই করতে চাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। সচেতন করতে চাই প্রতিটি দরজা। আমরা সাংবাদিক। সমাজের প্রতিটি প্রাণীর অন্যায়-অপরাধের সাথে বিনাঅস্ত্রে প্রতিদিন লড়াই করে যাচ্ছে গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকরা। রাষ্ট্রের চতুর্থস্তম্ভ খ্যাত গণমাধ্যম বিতর্কে বিপর্যস্থ। ভুয়া সাংবাদিক বানানোর হিড়িক, চাঁদাবাজি, সাইবার যন্ত্রের গ্যাড়াকলে সাংবাদিক সমাজ অতিষ্ঠ প্রায়। গণমাধ্যমের নেতৃত্বগুণে ভরপূর এই অঙ্গনে স্বাধীনতার এই সূবর্ণজয়ন্তীকালেও অন্যসকল পেশাজীবির চাইতে একটু বেশিই ক্ষতিগ্রস্থ। সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে কমপক্ষে একঘন্টা বেশি দায়িত্বশীল এই সাংবাদিকরা বরাবরই অবহেলিত। বিশেষ করে কোভিট-১৯ কালে দেশের সাংবাদিক সমাজ দূর্ণীতিপরায়নদের দ্বারা অধিক ক্ষতিগ্রস্থ। বহু সাংবাদিক মিথ্যা মামলা-হামলা ও লাঞ্ছিতের শিকার হয়ে কারাবন্দী, জুলুম,হুলিয়ারও শিকার। পেশাটিকে দৌঁড়ের ওপর রাখতে পারলেই যেন ওরাই মহাসুখী।
মহাসৃস্টির এই ভাগ্যাকাশে সবপ্রাণী যেমন বেঁচে থাকে তেমনি সাংবাদিকরাও বেঁচে আছেন। এতোটুকু নিরাপত্তাহীন কোন পেশার মানুষই কিন্তু বিনাঅস্ত্রে ওইসকল শকুনদের কাছে যায়নি। কিন্তু সাংবাদিকরা কিন্তু সাথেপাশে ছিলো।
২০১৯ সাল থেকেই কিন্তু সামাজিক দায়বদ্ধতার বেড়াজালে আটকা অধিকাংশ সাংবাদিকরা বেতন-ভাতাহীন হয়েও কড়া নেড়েছে মানুষের দরজায়। যেমনটি ৫২'র ভাষা আন্দোলন, ৬৯'র গণঅভ্যুত্থান, ৭১'র মহান মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের সাংবাদিকদের যথেচ্ছ অবদান কেউ পিঁছে ফেলতে পারার নয়। ওইসকল আন্দোলনে যেমনি বোমা, বুলেট, আগ্নেয়াস্ত্রকে ভয়পেতো তেমনি এ করোনাকালে মরণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অদৃশ্য মৃত্যুর নিশ্চিত হাতছানীর মাঝেও সাংবাদিকরা মাঠেময়দানে প্রথমসারিরও সামনে অডিও-ভিডিও, তথ্য সংগ্রহের কাজ করে চলছেন।
সরকারী-বেসরকারী ত্রান, সহযোগিতায় ক্যামেরা আর ছবিতে সাংবাদিকদের চেহারা দেখাগেলেও তারা কিন্তু অধিকাংশ খালিহাতে বাড়ি ফেরায় বিশ্বাসী।
আমরা ঐক্যের কথা বলবো। রুটিরুজির কথা বলবো।পেশার মর্যাদা, অধিকার-দাবির পক্ষে কথা বলবো। আমরা অপরাধ, দূর্ণীতি-অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবো। আমরা মজলুমের কথা বলবো। আমরা সাম্যের কথা বলবো। আমরা ঐক্যের কথা বলবো। আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস রক্ষায় পাশে থাকবো।আমরা সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক সাংবাদিকতার কথা বলবো। আমরা সাংবাদিক নির্যাতন মুক্ত বাংলাদেশ চাইবো। চাইতে হবে, তাই চাইবো। জানেনতো চাইলেই কিন্তু মেলেনা, জনমত লাগে।
এদাবিগুলোর পক্ষে সারাদেশের সাড়ে তিন'শ ইউনিটে প্রায় পনের হাজার সাংবাদিক দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। এছাড়া অধিকাংশ দাবির পক্ষে রয়েছে দেশের হাজার হাজার সাংবাদিক। এসব সাংবাদিক বন্ধুদের হৃদয়বন্ধণে আটক রাখতে ইতিমধ্যে এ্যাপসের মাধ্যমে সদস্য চিহ্নিত কর্মসূচী বা সদস্য সংগ্রহ অভিযান ২০২১ নামে একটি কর্মসূচী চালু আছে। ইতিমধ্যে সারাদেশের প্রায় একহাজার নতুন সদস্য গত একমাসে যুক্ত হয়েছেন। দেশের বাইরে বিএমএসএফের ও ৪/৫টি শাখা রয়েছে।
সাংবাদিক নির্যাতনরোধে সহযোগি সংগঠন হিসেবে গঠিত হয়েছে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ। আমি এটির সমন্বয়কারীর দায়িত্বপালন করে ইতিমধ্যে প্রায় ৪০/৪৫ টি শাখা কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়েছে। এর আওতায় অন্তত ২/৩ হাজার সাংবাদিক কাজ করে চলছেন। এবছরের শেষের দিকে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির জাতীয় কাউন্সিলের চিন্তাভাবনা আছে।
জেগে ওঠো বাংলার বিবেক শ্লোগানে সাংবাদিকদের কল্যান ও সেবারব্রতে বিএমএসএফের উদ্যোগে ঢাকায় জার্নালিস্ট শেল্টারহোম নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যেখানে ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা স্বল্পমূল্যে থাকা-খাবার সুবিধা পাবেন। সংগঠনের আইন সহায়তা সেলের মাধ্যমে মামলা-হামলার শিকার সাংবাদিকদের আইনী সহায়তা শুরু থেকেই চলমান। চিকিৎসা সেলের দু'জন এমবিবিএস ডাক্তারের মাধ্যমে করোনাকালে চিকিৎসার তথ্য প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলছেন।
সংগঠনের মূখপত্র মিডিয়া ক্যানভাসকে মাসিক পত্রিকায় রুপান্তর, সাংবাদিকদের দ্বারা পরিচালিত একটি নিউজ পোর্টাল চালুর চিন্তাভাবনাসহ নানা কল্যানমূখী প্রকল্পের পরিকল্পনা আমাদের হাতে রয়েছে।
আগামী পহেলা ডিসেম্বর ৫ম বিজয় শোভাযাত্রা-২০২১ কে সামনে রেখে ঢিলেঢালা বিএমএসএফকে নতুন সাজে সাজাতে চাই। কেন্দ্র- উপজেলা- জেলা পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান চলছে। কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদকদের সমন্বয়ে মনিটরিং ইউনিট এসব মনিটরিংয়ের দায়পালন করছেন। সাংগঠনিক সম্পাদকদের নেতৃত্বে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তপোক্তকরণ কাজ পূরোদমে চলছে। প্রশিক্ষণ বিভাগ অপেক্ষাকৃত নবীন সাংবাদিকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ৭১২ জনের মধ্যে ৩৯২ জন সাংবাদিককে প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছেন। পাইলট প্রকল্প হিসেবে হাতেনেয়া প্রশিক্ষণ প্রকল্পটি ভবিষ্যতেও চলমান রাখতে চাই।
ডিসেম্বরের আগে ৩০ অক্টোবর-২০২১ তারিখের মধ্যে সকল শাখা কমিটি গঠনের ব্যাপারে বিভাগীয় পর্যায়ে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতিগণের সমন্বয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অন্যদিকে; যুগ্ম- সম্পাদকদের নেতৃত্বে বিএমএসএফের মাঠপর্যায়ে শাখার সংখ্যা, নিস্ক্রিয় ইউনিট সংখ্যা ও একটিভ শাখা যাচাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সকল ইউনিটসমুহের অধিকাংশ তালিকা কেন্দ্রে জমা হতে পারে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের নেতৃত্বে কমিটিগঠনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের দ্বারা জেলা/ উপজেলা শাখা দেখভাল করছেন।
১১ পুরানাপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কমিটির জাতীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে ১২১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতৃত্বে বিএমএসএফ পরিচালিত হচ্ছে। বিগত চতুর্থ জাতীয় কাউন্সিলে-২০২০ খ্রী: জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। বলে রাখা ভালো; এ কাউন্সিলে ৯০জন সদস্য নিয়ে নির্বাহী কমিটি যাত্রা শুরু করে। কিন্তু অল্পদিনের মাঝে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ- ২০২১ উদযাপন, দেশব্যাপী দুটি জাতীয় কর্মসূচী অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছেন। আইটি বিভাগের সহযোগিতায় নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচী, জুম মিটিংয়ের প্রবর্তন, শাখাসমুহের কোড নাম্বার, সদস্যদের কোড এবং পরিচয়পত্র, এ্যাপসের মাধ্যমে প্রায় সহস্রাধিক সাংবাদিকের মতামত গ্রহন, মুজিববর্ষ ও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ও সাংবাদিক প্রশিক্ষণ, অনুষ্ঠিতব্য ( সেপ্টেম্বর ২০ থেকে ২০ নভেম্বর) সাংগঠনিক সফর। পহেলা ডিসেম্বর থেকে তিনদিন ব্যাপী বিজয়শোভাযাত্রা সারাদেশের সাংবাদিকদের মিলন মেলায় পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ১৯ আগস্ট বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা সভা ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সংগঠনকে শক্তিশালী করতে ইতিমধ্যে কমিটির বাকি দু'দফায় ১৫জনকে সংযুক্তি করে কেন্দ্রে মনোনীত করা হয়েছে। আরো ১০ জনের নাম ঘোষণার অপেক্ষা। একাধিক উপ-কমিটির মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগবান করতে নানা উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে। বিগত কমিটিসমুহে কেন্দ্র পরিচালনায় দায়িত্বপালনকৃত নেতৃবৃন্দকে পুনরায় কেন্দ্রে সংস্থানের পরিকল্পনা আছে।
এই সকল কাজকর্ম এগিয়ে নিতে নিজেকে সাধ্যমত ১৪ দফার পেছনে কাজে লাগাতে আপনিও প্রস্তুতি নিন। আসুন; বিএমএসএফকে এগিয়ে নিতে, সদস্যদের সাহস যোগাতে আপনিও সংগঠনের পাশে দাঁড়ান/সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ান। আমরা আপনার প্রয়োজনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে পারি। এই সকল কমর্মকান্ড পরিচালনার জন্য সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ/ বিএমএসএফের উপজেলা-জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মতামত ও পরামর্শ খুব বেশি জরুরী। আজ ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৯.০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিতব্য ভার্চুয়াল আলোচনায় আপনাদের অংশগ্রহন আমি/আমরা/বিএমএসএফ বিশেষ ভাবে আশা করছে। লেখাটির কোন অংশ কিংবা বাক্য কারো খারাপ লাগলে জানাবেন; দূ:খ প্রকাশ করে নেবো। ভালমন্দ যেকোন ব্যাপারে কমেন্টস করলে পরিবর্তনের সুযোগ পাবো। ধৈয্য ধরে পড়ার জন্য আপনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
[তবে সংগঠনের বিশাল এই কর্মযজ্ঞ থেকে রেহাই পেতে সংগঠনের সকল পর্যায়ের সদস্যদের কাঁধে কিছুটা হলেও দায় রাখতে চাই। আশা করি পেছনের সকল বিপত্তি পাশ কাটিয়ে আপনার প্রাণের সংগঠনের দায়ভার কাঁধে দিতেই আপনাকে ট্যাগ করা হলো। ]
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সহায় হোন, আমিন।
জয়বাংলা।
আহমেদ আবু জাফর
প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ।কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি।
১০ সেপ্টেম্বর ২০২১।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com