ফরিদুল কবির, কালিগঞ্জ(সাতক্ষীরা)থেকে।। কালিগঞ্জের শাহরিয়ার কবির বিপ্লব (২৪) ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অনার্স পড়ুয়া মেধাবী শিক্ষার্থী। পাখির প্রতি ভালোবাসা ও পাখি পালনের শখ তার ছোটবেলা থেকেই। বিদেশি পাখি পালনে শখ পূরণের পাশাপাশি তার এখন ছোটখাটো খামারে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন পাখির ঝাঁক। পিতা-মাতার উৎসাহই তার অনুপ্রেরণা। সে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাড়িতে ফিরে এসে বিপ্লবের পাখি পালনের আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। পড়াশোনার পাশাপাশি কিভাবে বাড়িতে ভিন্নজাতের পাখি পোষা যায়। একদিন পরিচিত জনের পাখি পালন দেখে বিদেশি জাতের পাখি পালন করার ইচ্ছা জাগে তার। সেই মনোবাসনার কথা ব্যবসায়ী পিতা জাহাঙ্গীর আলী গাইন ও মাতা নার্গিজ পারভীন সহ চাচা হুমায়ন কবিরকে জানালে আর্থিক সহযোগিতাসহ পাখি পালনের ব্যবস্থা করে দেন তারা। বিপ্লবের মতে, জেনে-বুঝে পাখি পালন করতে পারলে আয়ের একটা ভালো পথ হতে পারে। তবে তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে পালন করেন না। সরেজমিনে গেলে শিক্ষার্থী শাহরিয়ার কবির বিপ্লব বলেন, করোনায় ভার্সিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তখন অনেক চিন্তা ভাবনা করে ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শখ করে প্রথমে বাড়িতে খাঁচার মধ্যে ৩ জোড়া বাজরিগার ও ২ জোড়া নেদারল্যান্ডসের জেব্রা ফিঞ্চ দিয়ে পাখি পালন শুরু করি। খুব বড় পরিসরে খামার তৈরি করা সম্ভব না হওয়ায়, ছোট চালাঘরে পাখি পালতে থাকি। তারা ডিম পাড়ে ও বাচ্চা ফোটায়। এখন তার খামারে ২ প্রজাতির ৩০টি জেব্রা ফিঞ্চ ও ৪০টি বাজরিগার রয়েছে। এসব পাখিকে খাওয়ানো হয় কাউন, ধান, চীনা, সূর্যমুখী ফুলের বিজ, ক্যানারি, ব্লাক সিড ইত্যাদি। বাজরিগার প্রতি জোড়ার মূল্য ৩০০-৪০০, জেব্রা ফিঞ্চ হয়াই ৫০০-৬০০, জেব্রা ফিঞ্চ ফন্ট ৩০০-৩৫০ টাকা বিক্রয় করি। এভাবে অনেক শিক্ষার্থী এখন পাখি পালন করে তাদের পড়াশুনার খরচ যোগাচ্ছে। তবে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা বলে মনে করেন সে। বিপ্লবের পিতা জাহাঙ্গীর আলী গাইন বলেন, শখের বসে পড়ালেখার পাশাপাশি আমার ছেলে কয়েক জোড়া বিদেশি পাখি সংগ্রহ করে। উদ্দেশ্য ছিল পাখি পালনের শখ পূরণ করবে। দিনে দিনে পাখিগুলো থেকে বংশবিস্তার করায় মাঝে মাঝে বিক্রয় করে থাকে সে। নতুন যারা পাখি পালতে চায় তারা ছেলের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মনোজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, বর্তমান সময়ে পাখি পালনে অনেক শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে। এটি ভালো উদ্যোগ। অনেকে বাড়িতে পাখি পালনের মাধ্যমে তারা তাদের পড়াশোনার খরচ মেটাচ্ছে। তবে খামারিদের পরামর্শ নিজেকে নিরাপদ রেখে নিয়মিত খামার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে ও প্রতি সপ্তাহে জীবাণুনাশক স্প্রে করবে। পাখি পালন করে লাভবান হতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সাথে খামারিদের যোগাযোগ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com