উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।
নড়াইলের পল্লীতে ভ্যানচালককে কুপিয়ে খুন ও অটোভ্যান চালকের রহস্যজনক মৃত্যু। নড়াইলের লোহাগড়ায় মিজানুর শরীফ (৬০) নামে এক ভ্যান চালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার (১৭মে) দুপুরে উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের শামুককোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিজানুর শামুককোলা গ্রামের ওয়াদুদ শরীফের ছেলে। এ ঘটনায় মফিদুল কাজী (৫৫) ও আশরাফ আলী (৬২) নামে দুইজন আহত হয়েছে। আহতদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার শামুককোলা গ্রামে পূর্বশত্রæতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলীম কাজী ও হোসেন কাজীর লোকজনের মধ্যে দ্ব›দ্ব সংঘাত চলে আসছিল। সোমবার আলীম কাজী গ্রæপের ওবায়দুর কাজীর গরু ধরে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষ গ্রæপের লোকজন। এর জের ধরে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে দুই গ্রæপের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় প্রতিপক্ষ হোসেন কাজীর লোকজন ভ্যান চালক মিজানুর শরীফের বুকে ধারালো সড়কি দিয়ে কোপ মারলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার) সহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হেনা মিলন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হযেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে নড়াইলের অটোভ্যান চালকের রহস্যজনক মৃত্যু। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সালামাবাদ ইউনিয়নে রমাকান্ত মজুমদার (৪৭) নামে অটোভ্যান ড্রাইভারের গলায় ফাঁস নিয়ে মৃত্যু হয়েছে।
১৬ মে (সোমবার) রাত ১০ টায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। মৃত্যুকালে রমাকান্ত সুব্রত মজুমদার (১৮) ও দেবব্রত মজুমদার (১৪ নামে দু’ পুত্র ও অঙ্গিতা নামে ৭ বছরের একটি কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। রমাকান্ত ওই গ্রামের শক্তিপদ মজুমদারের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মোবাইলে অন্য মেয়ের সাথে কথা বলায় গত ১৪ মে (শনিবার) রমাকান্তের সাথে তার স্ত্রী নিলিমা মজুমদারের ঝগড়া হলে সে রাগ করে বাড়ী থেকে চলে যায়। গতকাল সোমবার সন্ধার পরে তাদের গোয়াল ঘরে গরুর একগাছা দড়ি না দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হলে বাড়ীর আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে তাদের বাড়ীর অদুরে শুকুর মোল্যার বাড়ীর পূর্ব পাশে আম গাছে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে কাউকে না জানিয়ে লাশ উদ্ধার করে বাড়ী নিয়ে এসে সকলকে খবর দেয় বলে তারা জানায়।
এদিকে রমাকান্তের বাড়ী আসার খবর কেউ জানেনা অথচ গরুর দড়ি না পেয়ে তার পরিবার কি করে বুঝলো যে, রমাকান্তই ওই দড়ি নিয়ে বাড়ীর অদুরে শুকুর মোল্যার ভিটায় গলায় ফাঁস দিয়েছে? সচেতন মহলে এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
এছাড়া রমাকান্তের ছোট ছেলে দেবব্রত মজুমদার ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকদের সামনে যথেষ্ট অসংগতিপূর্ণ কথাবার্তা বলেছে।
এ বিষয়ে কালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, ময়না তদন্তের জন্য লাশ নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।