জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মোটা দাগে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সকলে। চলছে নানা প্রতিবাদ-প্রতিরোধ। প্রতিবাদ ঠেকাতে শিলাবর্ষন মোটেই কাম্য নয় বরং বিশ্ব বাজার পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রীয় ভাবে পাড়া-মহল্লায় গ্রহনযোগ্য জনমত তৈরীতে সরকারের বিভাগ গুলোকে কাজ করা উচিৎ। চলমান "যা খুশি" বাজার নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানও কিন্তু জরুরী। যেহেতু কেউ কেউ ভিন দেশের উদাহরন টেনে দেশকে শীলঙ্কার পথে হাটাতেও কার্পন্য করছেনা। সর্বপরি ; শীলঙ্কার ঐ চিত্র যেন বাংলাদেশে কখনো সৃষ্টি হতে না পারে সেজন্য সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণের মত ছোট্ট একটি চ্যালেঞ্জ নেয়াটাই উত্তম। যেখানে বাজারে গিয়ে আগের মজুতদারী প্রথা ভেঙ্গে প্রয়োজনে ২শ গ্রাম গরুর গোশত, ৩ শ গ্রাম ইলিশ মাছ, ১শ গ্রাম তেল কিনতে পারেন। যেন প্রয়োজন ছাড়া বস্তায় বস্তায় চাল,আলু,ডাল,তেল কেউ গুদামজাত করতে না পারেন এজন্য তীক্ষ্ণ নজরদারী দরকার।
নয়তো; জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের নাম (গত ক'দিনের চিত্র) করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে একটি গোষ্ঠী রাষ্ট্রের অভাবনীয় ক্ষতির সম্মুখিন করতে পারে। দলগুলোকে মনে রাখা উচিৎ জ্বালাও-পোড়াও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি , জীবনহানি, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধন কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা হতে পারেনা।
এই মূহুর্তে শুধু বাজার মনিটরিং করাটাই যথেষ্ট নয়; দরকার যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা। তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে যাত্রীদের সাথে প্রায়শই গাড়ির স্টাফদের সাথে ঝগড়াঝাঁটি, হাতাহাতি, লাঞ্ছিতের ঘটনা নিত্যদিনের সাথী। অধিকাংশ সরকার বিরোধী গাড়ি ব্যবসায়ীরা তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে গাড়ি বন্ধ করে যাত্রীদের উস্কে দিচ্ছে। ফলে রুটের যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করে গাদাগাদি,ঠাসাঠাসিতে বাড়ি ফিরছেন। যেখানে গাড়িওয়ালারা ২০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা, ৩০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নিচ্ছেন; আর দোষ চাপাচ্ছেন সরকারের ঘাড়ে। রাষ্ট্রীয় ট্রাফিক বিভাগ এই মূহুর্তে বিষয়টি দেখতে পারেন।
এদিকে রাজধানীর যানজট নিরসনে ট্টাফিক বিভাগের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনকে কাজে খাটাতে পারে। হয়তো অনেকে হাসবেন ট্টাফিকে তৃতীয় লিঙ্গ কেন? জবাবে ভাবতে হবে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন তারাও নাগরিক। আর তারা সবসময়ই রাস্তায় থাকেন; তাদেরকে সিটি কর্পোরেশন জনস্বার্থে স্বল্প বেতনে, অস্থায়ী নিয়োগে যদি কাজে খাটায় তবে ঢাকার যানজট প্রথম দিনেই অর্ধেকে নেমে আসবে, এটা আমার বিশ্বাস। সম্ভব হলে ঢাকাসহ সারাদেশের রোডের সিগন্যাল বাতিগুলো পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করা উচিৎ। ট্টাফিক পুলিশকে এক জায়গায় দাঁড় না করিয়ে সিগন্যাল অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দিন,দেখবেন যানজট থাকছেনা। পাশাপাশি রাজধানীর বাস ষ্টপিজগুলো থেকে অবৈধ ছুটকি দোকান, ব্যবসা উচ্ছেদ করে যাত্রীদের জন্য দ্রুত উম্মুক্ত করে দিন,ফল ভালো হতে পারে।
দূরবর্তী দুটি দেশের যুদ্ধের ফলে সম্ভাবনাময় বীরের জাতি বাংলাদেশকে গ্লানি টানতে হবে তাও কিন্তু কাম্য নয়। রাষ্ট্রকে এখনি উচিৎ কৃষি,মৎস্য,পোল্টি, গো-খামারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তূকি দিয়ে এগিয়ে থাকা। বিদ্যুৎ ঘাটতি কমাতে ব্যক্তি পর্যায়ে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে উৎসাহিত করা যেতে পারে।
দেশে চলমান পরিস্থিতিতে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মর্যাদা দেয়া উচিৎ। ঠিক এমনি এক মূহুর্তে জনৈক এক প্রবাসীকে কাস্টমস কর্মকর্তা সোহেল রানার গালে চড় মেরে নি:সন্দহে ফৌজদারী অপরাধ করেছেন। তার জন্য ঐ কাস্টমস অফিসারকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে প্রবাসীদেরকে সম্মান দেখানো উচিৎ। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়ে গেছে।
দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের মাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে চলছে। কথায় কথায় সাংবাদিক নির্যাতন, লাঞ্ছিত,হামলা-মামলায় পেশাটি বিপর্যন্ত। এদিকে পুলিশের ঔদ্ধত্যতাও ছাড়িয়ে গেছে। ৮ আগষ্ট
সুনামগঞ্জ আদালত পাড়ায় সংবাদ সংগ্রহের সময় চ্যানেল24 ও যমুনার টিভির সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের সাথে পুলিশের অসদাচরণের ঘটনা ঘটেছে। যমুনা টিভির প্রতিনিধির মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। সাথে থাকা সহকর্মী ফোনটি ফেরত চাইলে পুলিশ সদস্য তার ওপরও চড়াও হয়ে লাঠি নিয়ে এগিয়ে আসেন। ঘটনাটি উপস্থিত আইনজীবীরা দেখে এগিয়ে আসলে তাদের সাথেও পুলিশ সদস্যরা অসদাচরণ করেন। এ ঘটনায় আইনজীবীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে দ্রুত ঐ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানান। পরে এ ঘটনায় আইনজীবী সমিতি ও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা বৈঠক করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে এখনও শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহনের খবর মেলেনি।
অন্যদিকে টেকনাফের ইউএনও কান্ডে দৃষ্টান্তমূলক কোন বিচার কিন্তু এখন অবধি সাংবাদিক সমাজের চোখে পড়েনি। সাংবাদিকদেরকে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি নির্দেশনা দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। দেখবেন, সাংবাদিকরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে রাষ্টের চোরগুন্ডাদের ধরিয়ে দেবেন নিমিষেই। কারা দেশের টাকা লুটপাট করে সুইস ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা জমা করেছে ঐ ডাকাতের খবরও আপনি পেয়ে যাবেন; জাতি জানতে পারবেন।
এদিকে জনগনের সাথে বক্তব্যের নামে ঠাট্টাতামাশা করা কিছু মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুনত্ব আনা যেতে পারে রাষ্টের স্বার্থে,জনগনের স্বার্থে।
সর্বপরি; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সোনার বাংলায় ষোল কোটির এই দেশে সকলে মিশে থাকুক অনাবিল সুখে-শান্তিতে। অপ-রাজনীতি থাকুক-শেকলবন্ধী। ভোটের সময় ভোট দেবে এমন পরিবেশ তৈরী হোক-এ প্রত্যাশা কিন্তু সকলেরই। হানাহানি, রক্তক্ষয়ী-প্রাণহানীর মত অপ-রাজনীতি মুক্ত হোক সম্ভাবনাময় লাল সবুজের এই দেশে...
লেখক::আহমেদ আবু জাফর, প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম- বিএমএমএফ
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com