উজ্জ্বল রায়, (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের নড়াগাতী থানার মুলশ্রী গ্রামে প্রতারণার শিকার পটুয়াখালীর মেয়ে নীলা বেগমকে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে স্বামীর ঘরে স্থান পেয়েছে। ২৫ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) রাতে পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহামুদুল ইসলাম, স্থাণীয় মাতুব্বর কাবুল মল্লিক ও ইউসুফ শিকদার সমন্বয়ে গঠিত শালিসী বোর্ড রাতে ওই গ্রামের কোবাদ শিকদারের বাড়ীতে গোপন শালিসের মাধ্যমে এ রায় দেন।
ভুক্তভোগী নীলা বেগম কবিরের নাম ঠিকানা গোপন রেখে বিয়ে করায় পুনরায় তাদের সঠিক ঠিকানা দিয়ে বিয়ে না দেওয়ায় ওই রায়ে সন্তুষ্ট নয় বলে জানান। ২৬ (আগষ্ট) সকালে সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে শালিসীগণ জানান,তাদের আগের কোর্টের এফিডেভিট এবং নিকাহ রেজিষ্ট্রারের মাধ্যমে তাদের যে বিবাহ সম্পাদন হয়েছিলো সেই অনুযায়ী তারা স্বামী স্ত্রীর মর্যাদায় থাকবে। আমরা যাবতীয় কাগজ পত্র দেখে এ রায় দিয়েছি। তবে প্রতারণা করে ঠিকানা গোপন করায় কবিরের সাথে পুনরায় বিয়ে দেওয়ার ব্যপারে তারা কোন মন্তব্য করেননি।
মুলশ্রী গ্রামের সাজ্জাদ ভূঁইয়া, রকিত শেখসহ অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই মেয়ে ও কবির ঢাকায় চাকুরী করতো। প্রতিমাসে তাকে ১৫ হাজার টাকা দিত বলে শুনেছি। কবির বাড়ীতে আসার পর মোটরসাইকেল কিনবে শুনেছি এছাড়া তার মায়ের গলায় সোনার চেইনও দেখেছে তারা। ওই মেয়ে ওদের বাড়ীত উঠলে তা খুলে রেখেছে বলে তারা জানায়। তবে কবিরের আসল নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে পুনরায় ছহিশুদ্ধভাবে মেয়েটিকে বিয়ে করা উচিৎ বলে তারা মনে করেন। এদিকে নীলা বেগমের শশুর বাড়ীতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচারণ করে। ভুক্তভোগীর সাথে দেখা করতে দেয়নি প্রতারক কবিরের স্বজনরা। তারা জানায়, শালিসের রায় মেনে তারা বউ ঘরে তুলেছে। এখন আর কোন সমস্যা নেই। তবে সঠিক নাম-ঠিকানায় পুনরায় কাবিনের মাধ্যম্যে তাদের বিয়ে করিয়ে নিবেন বলে বলে জানিয়েছেন কবিরের ভাইয়ের স্ত্রী।
এ ব্যাপারে পহরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে আমরা বসেছিলাম তারা ২ মাস ঘর সংসার করেছে এটা সত্য তাই আমরা তাদের বলেছি যে তারা ঐ মেয়ে ঘরে তোলার জন্য। এবং ঘর সংসার করার জন্য। কবির ভূয়া আইডি কার্ড ও নাম ঠিকানা ভূল দিয়ে কাবিন করেছিলো, কিন্তু এখন সঠিক ঠিকানা দিয়ে বিয়ে পড়ানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন,না আমরা নতুন করে তার সঠিক ঠিকানা দিয়ে বিয়ে দেয়নি।আমরা ঝামেলায় যেতে চাচ্ছিনা। চেয়ারম্যান ও শালিসগনদের এমন শালিস করার জন্য এলাকায় শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
স্থানীয়রা বলেন,যারা এমন শালিস করেছে তারা দায়স্বারা বিচার করেছে।কবিরের সঠিক ঠিকানা পাওয়ার পরে কেনো তাদের নতুন করে কাবিন করানো হলোনা। এর কারন কি?ভুল ঠিকানা ও ভুল কাবিনে কি তারা সংসার করবে।তারা মনে করেন যারা এই শালিস করেছে তারা কবিরের পক্ষ নিয়ে করেছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২১ ও ২২ আগষ্ট দু’দিন ব্যাপি স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে কবিরের বাড়ীতেই আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে অবস্থান করে নীলা। অন্যের পরিচয়পত্রে নিজের ছবি লাগিয়ে প্রতারনা করে বিয়ে করেছিল নীলাকে। অতঃপর, কবিরের বন্ধুর সহায়তায় মুলশ্রী গ্রামের মোহর শেখের ছেলে কবিরের বাড়ীতে আসে নীলা। স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে আবার কবিরের বাড়িতে অবস্থান করে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিল।