শেখর মজুমদার, স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি।।
স্বরূপকাঠিতে ডিলারদের মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল বিক্রিতে চলছে নানা ধরনের অনিয়ম। খাদ্য বিভাগ ও ট্যাগ অফিসারদের তদারকির অভাবে বাড়তি দামে বস্ত্মায় বস্ত্মায় চাল পাচার করছে ডিলাররা। চতুর ডিলাররা সকালে দরিদ্রদের কাছে পাঁচ কেজি করে চাল বিক্রি শুরম্ন করেন। দুপুরের পরে সুযোগ মতো হোটেল মালিক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীদের কাছে বস্ত্মায় ভরে চাল পাচার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাড়তি দামে বাইরের পার্টির কাছে চাল বিক্রি করে ডিলাররা লাভবান হলেও সরকারের মহৎ উদ্যোগ ভেস্ত্মে যাচ্ছে।
জানাগেছে খাদ্য বিভাগ চারজন ডিলারের মাধ্যমে স্বরূপকাঠি পৌর এলাকায় প্রতিদিন ৮ মেঃ টন করে সপ্তাহে ৪০ মেঃ টন চাল খোলা বাজারে বিক্রি করছেন। ৩০ টাকা কেজি দরে প্রতি পরিবার দৈনিক পাঁচ কেজি করে চাল কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। খোলা বাজারে চাল বিক্রির শুরম্ন থেকে ডিলাররা উত্তোলন করা চালের একটি অংশ বেশী দামে বাইরে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে চাল বিক্রিতে অনিয়ম প্রতিরোধে স্বরূপকাঠি পৌর পরিষদ কার্ড প্রথা চালু করেন। নির্ধারিত কার্ডের মাধ্যমে পৌর এলাকার দরিদ্র নাগরিকদের জন্য প্রতিদিন ৬ মেঃ টন ও বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা মানুষের জন্য দুই মেট্রিক টন চাল বিক্রির ব্যবস্থা রাখা হয়। কার্ড বিতরনেও রয়েছে অনেক অভিযোগ। কার্ডের বাইরে থাকা ভাসমান লোকদের কাছে বিক্রির জন্য দুই টন চাল নিয়ে কারসাজি করে ডিলাররা। এ ছাড়া কার্ড থাকার পরেও পৌর এলাকার অনেক পরিবার একটু দেরী করে গেলে অনেক সময় চাল কিনতে পারেন না। ২নং ওয়ার্ডের হোসেন আলীর পুত্র আঃ করিম অভিযোগ করেন পৌরসভার সামনে ডিলার ফারম্নক হোসেনের কাছে দুইদিন দুপুরে গিয়ে চাল পাননি। অথচ তার সামনে থেকে এক হোটেল মালিককে দুই বস্ত্মা চাল দেয়া হয়। সদর ইউপির রাহুতকাঠি গ্রামের সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম অভিযোগ করেন তার বাড়ির দুই আত্মীয় ডিলার কাজী সরোয়ারের কাছে দুইদিন গিয়ে চাল কিনতে পারেনি। পরে ওই সাংবাদিক নিজে তার আত্মীয়দের নিয়ে ডিলারের কাছে গেলেও তাদের চাল দেয়া হয়নি। গত বৃহসপতিবার দুপুরে ডিলার ফারম্নক পৌরসভার সামনে বসেই দুই হোটেল মালিক ও কুদ্দুস নামে দুই ব্যক্তির কাছে ৫০কেজির দুই বস্ত্মা চাল বিক্রি করেন। এ সময় সাংবাদিকরা বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে পৌর মেয়র ও একজন কাউন্সিলরের সুপরিশে দিচ্ছেন বলে দাবী করেন ডিলার ফারম্নক। এ বিষয় মেয়র গোলাম কবির ফোনে দৃঢ়তার সাথে অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং ডিলারকে তিরস্কার করেন। এসব অনিয়মের বিষয় নিয়ে কথা বললে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মতিউর রহমান জানান খোলা বাজারে চাল বিক্রির জন্য নিয়োজিত চারজন ডিলারের কার্যক্রম তদারকি করতে ৪জন ট্যাগ অফিসার দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তাদের দেখার কথা বলে জানান খাদ্য কর্মকর্তা। ট্যাগ অফিসার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলেনুর বেগম বলেন গত সপ্তাহে তিনি ঢাকা ছিলেন এবং এ সপ্তাহে বাড়ি আসার পরে একদিন ডিলারের দোকানে গিয়েছিলেন। খাদ্য পরিদর্শক ও ট্যাগ অফিসার এইচ এম আনোয়ার হোসেন বলেন,খোঁজ খবর নিচ্ছি,তবে কখন বস্ত্মায় বিক্রি করে ধরিয়ে দিতে পারলে সাংবাদিককে পুরষ্কৃত করবেন বলে জানান। জানাগেছে এ সব ট্যাগ অফিসাররা সুযোগ পেলে সপ্তাহে ২-১দিন ডিলারদের দোকানে গিয়ে চা-পান খেয়ে চলে আসেন। মাষ্টাররোল অনুমোদনসহ অন্যান্য স্বাক্ষর কাজ অফিসে গিয়ে সেরে আসেন বলে জানান জনৈক ডিলার।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com