মোতালেব বিশ্বাস,ইবি প্রতিনিধি: চেক ডিজঅনারের দায়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এলএমএসএস (ঝাড়ুদার) হাফিজুর রহমান একটি প্রতারণার মামলায় সাজা ভোগ করেছেন। আদালত কর্তৃক অভিযুক্ত হওয়ার পর ১০ মাস কারাভোগ করেন হাফিজ।
তবে তিনি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরীতে বহাল রয়েছেন। এ ঘটনায় অপসারণের চেয়ে তদন্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী আকবর হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ.এম আলী হাসান। ভুক্তভোগী আকবর হোসেন কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, ইবি কর্মচারী হাফিজুর রহমান আকবর হোসেনের কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা ধার হিসাবে গ্রহণ করেন। ধারের টাকা পরিশোধের জন্য ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অগ্রনী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০২০০০০২৯০৫৫৫১ হতে হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরিত ৭ লক্ষ টাকার একটি চেক প্রদান করেন এবং নগদায়নের জন্য পরামর্শ দেন। যার নম্বর O1A ৪৪৩০৩১৩।
পরে একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর হাফিজুরের পরামর্শে ব্যাংক থেকে টাকা নগদায়নের জন্য গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিয়মানুসারে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অপর্যাপ্ত তহবিল ও স্বাক্ষর মিলে না বলে চেক ডিজঅনার করে ডিজঅনার স্লিপ প্রদান করেন। চেক ডিজঅনারের বিষয়টি জানানো হলেও হাফিজু অর্থ পরিশোধ করেনি।
পরে হাফিজুরের ঠিকানায় ৩০ দিনের মধ্যে অর্থ পরিশোধের জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলে লিগ্যাল নোটিশ গ্রহন না করায় কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আকবর হোসেন।
এদিকে হাফিজুরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান হওয়ায় গ্রেফতার অথবা আদালতে আত্মসমর্পণের তারিখ হতে ১০ মাসের কারাদন্ড এবং চেকে উল্লিখিত ৭ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড দেন বিজ্ঞ আদালত। পরে হাফিজুরকে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী আকবর হোসেন বলেন, হাফিজুর রহমান একজন শক্তিশালী প্রতারক চক্রের সদস্য। সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। সেটি আদালতে প্রমানিত হয়েছে। জেল খেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে কিভাবে হাফিজ। তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হাফিজের অপসারণ চেয়ে আবেদন করেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাফিজুর বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। ও আমার চাকরী খাওয়ার জন্য এরকম করতেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, কোনো কর্মচারীকে আদালত শাস্তি দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক তাঁকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার রাখে। অভিযুক্ত কর্মচারী যেহেতু হল প্রশাসনের অধীনস্ত, তাই হল প্রশাসনের সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে পাঠাতে হবে। তারপরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে বিধি মোতাবেক বরখাস্ত করবে।
এ বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন বলেন, হাফিজুর ১০ মাস জেলে থাকার পরেও সে চাকরিতে বহাল থাকবে কিনা না সেটা তো আমার হাতে না। এই বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে।