কুবি প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ‘উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনার তদন্ত পূর্বক তথ্য উদঘাটন এবং শিক্ষক সমিতির ‘দাবি-দাওয়া’ পর্যালোচনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত দুইটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ এপ্রিলের উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তদন্ত পূর্বক তথ্য উদঘাটনের জন্য ৯৩ তম জরুরি সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্রকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) খালেদা আক্তার ও সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী।
এদিকে একই সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহেরকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্যান্যরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া, আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, ও সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী।
এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, এখানে বলা হয়েছে আলোচনা করবে কিন্তু আমাদের সাথে কোনো আলোচনা করা হয়নি। যেখানে উপাচার্য নিজেই হামলা করেছেন সেখানে তার নেতৃত্বে সিন্ডিকেট সভায় কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত আসবে বলে মনে করি না।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর ভিসির কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কিছু দাবি দাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে দুইজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক সদস্যরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেন। এরই জেরে তিন দফা ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি সাত দফা দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষক সমিতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষকরা। সবশেষ, গত (২৮ এপ্রিল) শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ভিসি, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ ভিসিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকদের কিল, ঘুষি ও ধাক্কা দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান দখলে নেন। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
এছাড়াও শিক্ষক সমিতির ৭ দফা দাবি হল —১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা ও ঘটনার তদন্ত করা। পাশাপাশি হামলায় মদদ দেওয়া প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে অপসারণ করা।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে ঢাকার অতিথিশালা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা; অধ্যাপক গ্রেড ১ ও ২-তে আবেদন করা শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ এবং ইতিমধ্যে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাহার করা; শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি স্থায়ীকরণে আইনবহির্ভূত শর্তারোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা; ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা প্রত্যাহার করে আগের নীতিমালা বহাল এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com