মো:শফিকুল ইসলাম।।
মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে আমি লামা উপজেলার সকল মৎস্যচাষি, উদ্যোক্তা ও মৎসজীবীসহ মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। 'ভরবো মাছে মোদের দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ' প্রতিপাদ্য নিয়ে 'জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪' উদ্যাপিত হচ্ছে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মৎস্যসম্পদের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে বলেছিলেন "মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ"। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে টেকসই উৎপাদন নীতি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ফলে দেশ আজ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের জিডিপির ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মৎস্যখাতের অবদান।
মাছ চাষের নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, চাষি পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে মৎস্যচাষ বহুমুখীকরণ, অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয় ব্যবস্থাপনা, মৎস্য আইন প্রয়োগ জোরদারকরণ, মৎস্য সেক্টরে নানা উদ্যোগের ফলে দেশে মৎস্য উৎপাদনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৪৯ লক্ষ ১৫ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে যা ২০০৭-০৮ অর্থবছরের মোট উৎপাদনের (২৩.২৯ লক্ষ মেট্রিক টন) দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। আমরা তেলাপিয়া উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ এবং এশিয়ায় ৩য়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৫ম এবং ইলিশ উৎপাদনে ১ম। ইলিশ ও বাগদা চিংড়ি জিআই স্বীকৃতি প্রাপ্তির ফলে বাংলাদেশের মাছের নিজস্ব পরিচয় ও স্বকীয়তা নিয়ে সারাবিশ্বে রঙালির এক নতুন পরিচয় তৈরি হয়েছে।
দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অনগ্রসর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণে মৎস্যচাষ বাড়াতে গৃহীত হয়েছে "পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন" প্রকল্প । প্রকল্পটির মাধ্যমে লামা উপজেলার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সুফলভোগীদের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় পাহাড়ি দুর্গম পার্বত্য এলাকায় মৎস্যচাষ উপযোগী ক্রিক উন্নয়ন, কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রদর্শনী খামার স্থাপন, বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে । ফলে মৎস্য চাষের নতুন নতুন জলাশয় তৈরি হয়েছে যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পানির অভাব দূর করছে এবং বেকার যুবক-নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র কূটনৈতিক দূরদর্শিতা ও নিরলস প্রচেষ্টায় ঐতিহাসিক সমুদ্র বিজয়ের মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতির নব দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। সুনীল অর্থনীতির বিকাশে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থায় গভীর সমুদ্র হতে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছের প্রাপ্যতা ও আহরণের সম্ভাব্যতা বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর।
মৎস্য খাত দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির যোগান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখা ও রপ্তানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে নিরাপদ ও মানসম্মত মৎস্যপণ্য নিশ্চিত করতে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে বিশ্বে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭১ হাজার ৪৭৭ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা অর্জিত হয়েছে।
আমি আশা করি, সরকারের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের অন্যতম গর্বিত অংশীদার হবে মৎস্যখাত । জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪' উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী আয়োজিত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com