খুলনার কয়রায় একটি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারের সকল কে অচেতন করে নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার ও মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরিবারের অসুস্থ ৪ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরের দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান খোকন সহ গ্রামবাসীরা।
এর আগে শনিবার রাতে উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মহেশ্বরীপুর গ্রামের নিতাই বিশ্বাসের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের প্রধান নিতাই বিশ্বাস (৬১) পুত্র উজ্জ্বল বিশ্বাস (৩৮) উজ্জলের স্ত্রী পূর্ণিমা বিশ্বাস (২৫) ও তাদের আট বছরের শিশু পুত্র বিজয় বিশ্বাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
ভুক্তভোগী নিতাই বিশ্বাসের ভাই মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ওই পরিবারের সকল সদস্য প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, সকালে নিতাইয়ের পুত্র উজ্জ্বল প্রতিদিনের ন্যায় ভোরবেলা বাড়ির পাশের বিলে মাছ ধরার পাতা জাল উঠানোর উদ্দেশ্যে ঘুম ঘুম অবস্থায় বাড়ির সামনে রাস্তায় পৌঁছালে সেখানে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায়। এ সময় প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরা দেখতে পেয়ে অচেতন অবস্থায় তাকে বাড়িতে নিয়ে এসে দেখে বাড়ির সকলেই ঘুমে অচেতন ও তাদের আট বছরের শিশু পুত্র বিজয়ের মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে, তখন প্রতিবেশীরা বুঝতে পেরে তাৎক্ষণিক তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে দুই ঘন্টা পর উজ্জ্বল বাদে সকলের জ্ঞান ফিরে আসে।
নিতাই বিশ্বাসের ভাই মনোরঞ্জন বিশ্বাস আরো বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না, উজ্জলের স্ত্রী পূর্ণিমা বিশ্বাস বাড়ীর আঙিনায় রান্নাঘরে একা রান্নার কাজ করছিল, এ সময় প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর মোড়ল রান্নাঘরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে পূর্ণিমার কাছে কয়েকটি ঝাল হাওলাত চায়, তখন পূর্ণিমা জানায় বাড়িতে কোন ঝাল নেই, তখন জাহাঙ্গীর অন্য বাড়ী থেকে কয়েকটি ঝাল নিয়ে আসার জন্য পূর্ণিমা কে অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীর অনুরোধে পূর্ণিমা পাশের বাড়ি থেকে ঝাল হাওলাত নিয়ে এসে দেখে জাহাঙ্গীর সেখানে নেই। ভুক্তভোগীর ধারণা ঝাল হাওলাতের সুযোগে জাহাঙ্গীর রান্নাঘরে ঢুকে খাবারের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক হিরন্ময় ঢালী বলেন, উজ্জ্বল বাদে সকলেই সুস্থ আছেন, তবে সেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যাবে, তিনি বলেন, পরিবারটির সকলকে চেতনা নাশক ঔষধের অতিরিক্ত মাত্রা প্রয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে সকলেই আশঙ্কা মুক্ত। ধীরে ধীরে তাদের অবস্থার উন্নতি হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান খোকন বলেন, আমি সেখানে যেতে পারিনি তবে এলাকাবাসীর মুখ থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি।
একই কথা বলেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ শিকারী।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কয়রা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com