গাজীপুরের সফিপুরে সৌদি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়ামির উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও হাসপাতাল- কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনে ভূমি উপদেষ্টা
১৯৮১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ওয়ামি কমপ্লেক্সের জন্য ৭ একর জায়গা দান করেন
গাজীপুর,২২ নভেম্বর ২০২৪: ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন , ১৯৮১ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ওয়ামি, সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের প্রায় অর্ধশত দেশের যুব প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক যুব কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তৎকালীন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যুব উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য গাজীপুরের সফিপুরের সাত একর জমিটুকু ওয়ামিকে প্রদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। সেখানে আজ ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল। তিনি আজ গাজীপুরের সফিপুরে সৌদি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়ামির উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন ওয়ামি মসজিদ কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও হাসপাতাল- কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান, সৌদি আরবের ওয়ামি সচিবালয়ের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল প্রফেসর ড. আবদুল হামিদ ইউসুফ আল মাজরু, রিয়াদস্থ ওয়ামি প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক ফয়সাল সাআ’দ আব্দুল্লাহ বিন জাবর ও ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক আল আমের।এতে ওয়ামি বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মোহামাদ রেদওয়ানুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনে রয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট সুপরিসর মসজিদ, ১০০ জন এতিম শিশুর জন্য উন্নত মানসম্পন্ন আবাসন ব্যবস্থা, ১টি ক্যাডেট মাদ্রাসা, ১টি নূরানী ও হিফজ মাদ্রাসা, ১টি লাইব্রেরি হল, ১টি হলরুম ও কনফারেন্স রুম, তরুণ শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল লার্নিং জন্য ১টি আইটি প্রশিক্ষণ সেন্টার ও ডাইনিং হল। কমপ্লেক্স এর প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে একটি হাসপাতাল, স্কুল, ভোকেশনাল সেন্টার, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ডরমিটরি ও প্লে গ্রাউন্ড নির্মাণ।
ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন ,অন্যতম মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে ভ্রাতৃপ্রতিম সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এজন্য তিনি উপস্থিত সৌদি রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি সফররত ওয়ামি প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সফরে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠির কল্যাণে আরো পরিকল্পিত ভূমিকা পালনের আহবান জানান। তিনি বলেন, ওয়ামি কর্তৃক বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপী মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণে পরিকল্পিত কর্মসূচির মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ,কর্মমুখী বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ , মেধাবীদের শিক্ষা বৃত্তি, ধর্মীয় শিক্ষা দান সহ আর্ত -মানবতার সেবায় কাজ করছে।তিনি ভ্রাতৃ প্রতিম সৌদি সরকার ও তাদের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ সরকারেকর পক্ষ থেকে ওয়ামিকে সার্বিক সহায়তার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য , ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামী) সৌদি আরব ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা যা বিগত ৫২ বছর যাবৎ বিশ্বের প্রায় সবকয়টি দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দূর্যোগে জরুরী ত্রাণ তৎপরতা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানাবিধ আর্থ-সামাজিক ও যুব উন্নয়নমূলক কর্মসূচী পরিচালনা করে আসছে। এর প্রধান কার্যালয় সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত। ১৯৭২ সালে রিয়াদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক যুব সম্মেলনে গৃহিত প্রস্তাবনার আলোকে সৌদি আরবের তৎকালীন মহামান্য বাদশাহ কিং ফয়সাল এর রাজকীয় ফরমানে ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামী) প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থাসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামের সক্রিয় সদস্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী ভূমিকা রেখে আসছে।২০০০ সাল থেকে ওয়ামী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর নিবন্ধিত সংস্থা হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলাসমূহে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
পরে অতিথিগণ বেলুন উড়িয়ে নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং নির্মিতব্য হাসপাতাল ও স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া অতিথিবৃন্দ নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।