বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ফার্নিচার শিল্পে আমাদের বেশ সম্ভাবনা আছে। এ শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন।
আজ সোমবার দুপুরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ -চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের কনফারেন্স হলে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো ও বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশন আয়োজিত বাংলাদেশ ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রি: আনলকিং এক্সপোর্ট পটেনশিয়াল শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
পরিবর্তন সুযোগের সুচনা করে উল্লেখ করে
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন , ফার্নিচার শিল্পে অল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্য ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব না। তবে এখাতে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে।আমাদের সকল রিসোর্স একত্রিত করে,রাষ্ট্রীয় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কত দ্রুত ফার্নিচার বিশ্বে স্থান করে নিতে পারি তা ভাবতে হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন , বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য ছিলো ভারত কেন্দ্রিক। একারনে সম্ভবত রপ্তানি বাজার খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। বিশ্ববাজার টার্গেট করে আমাদের ফার্নিচার উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে।
আমাদের অর্থনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে তা চিন্তার বাইরে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন , বিগত সরকারের আমলে ব্যাংকিং, গার্মেন্টসসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরের সম্ভাবনাকে অসম্ভবভাবে নষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে ব্যবসায়ীসহ এদেশের জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে। দেশের সম্ভাবনাকে নষ্ট করা হয়েছে, আমাদের ডিগনিটিকে নষ্ট করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে তাদের দুর্বৃত্তায়নের বোঝা আমাদের বহন করতে হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বহন করতে হবে।
শুধু বন্ড সুবিধা দিয়ে ব্যবসা বাড়ানো সম্ভব না।বন্ড সুবিধার কারনে দেশে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ হয়েছে তবে অনেক শিল্পের ক্ষতি করেছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন , ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসবে,এটা ফেরাতে পারবেন না।বাণিজ্য উদারীকরণ হবে,নিজেদের সক্ষমতা না বাড়ালে ভবিষ্যতে টিকতে পারবেন না।
বেশি সংখ্যক দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করলে ব্যবসা বাড়বে এটা ঠিক না।ইউরোপের যে দেশের মার্কেটে আমাদের এক্সেস আছে তাদের সাথে এফটিএ করলে বরং দেশের ক্ষতি হবে।এফটিএ করতে হবে সে সকল দেশের সাথে যাদের সাথে আমাদের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অনেক ক্ষেত্রেই বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি বন্ধ করতে হবে। বন্ড, এফটিএ সুবিধা দিয়ে যতটা কাজ হবে তার থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নেবে। অনেক দেশেই আমরা শুল্কছাড় সুবিধা পাচ্ছি।
সেমিনারে কী-নোট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশন এর পরিচালক দেওয়ান আতিফ রশিদ।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ এর সাবেক প্রফেসর আবু ইউসুফ,
বুয়েটের ম্যাটারিয়ালস এন্ড ম্যাট্যালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রফেসর ড. আহমেদ শরীফ,ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ডিজাইন এর ডীন প্রফেসর ফুয়াদ এইচ মল্লিক,প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আহসান খান চৌধুরী, হাতিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান প্রমূখ।
উল্লেখ্য , রপ্তানি প্রসার ও প্রণোদনামূলক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে প্রতিবছর একটি পণ্যকে প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার বা বর্ষপণ্য ঘোষণা করা হয়। এ বছর বর্ষপণ্য হিসেবে ফার্নিচারকে বর্ষ পণ্য ঘোষণা করা হয়।
গত পহেলা জানুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফার্নিচারকে ২০২৫ সালের বর্ষ পণ্য ঘোষণা করেন।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com