মোঃ মনির হোসেন শাহীন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বিদ্যালয় চলাকালে ওই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি হামলা চালিয়ে কক্ষটি ভাংচুর ও তছনছ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে কক্ষটিতে তালা লাগিয়ে দেন ওই সাবেক সভাপতি।
ওই কক্ষটিকে 'রান্নাঘর ' বানিয়ে সেখানে শিক্ষকেরা নিয়মিত রান্নাবান্না করায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিনষ্ট হতো, এ অভিযোগে কক্ষটিতে হামলা চালানো হয় বলে হামলাকারী কালের কণ্ঠের কাছে স্বীকারও করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার (০৪/০৩/২০) সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলাকারী ও স্কুলের সংশ্লিষ্টদের তলব করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি ও শ্যামগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রুস্তম আহমেদ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে স্কুলটি পরিদর্শনে যান। এসময় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে দুপুরের রান্নাবান্নার আয়োজন চলছিলো বলে অভিযোগ। বিষয়টির প্রতিবাদ করতে গেলে সাবেক সভাপতির সঙ্গে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার তর্কবিতর্ক হয়।
এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে রুস্তম চেয়ারম্যান কক্ষটিতে থাকা গ্যাসের চুলা ও রান্নাবান্নার যাবতীয় সামগ্রী ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলেন। পরে কক্ষটিতে তালা লাগিয়ে চলে যান সাবেক ওই সভাপতি।
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান, পাশ্ববর্তী সলিমগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম রাজা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
এ বিষয়ে সাবেক সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আহমেদ নিজেকে এখনও সভাপতি দাবি করে বলেন,'বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা আমার প্রয়াত বাবা। আমি ২০ বছর ধরে এর সভাপতি। বিদ্যালয়টির একটি কক্ষ দীর্ঘদিন ধরে 'রান্নাঘর' বানিয়ে সেখানে নিয়মিত রান্নাবান্না হয়। আমি গিয়ে এসব বন্ধ করার অনুরোধ করলে, ডালিয়া নামে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা আমার সঙ্গে মারাত্মক দুর্ব্যবহার করে স্কুল থেকে আমাকে বের হয়ে যেতে বলেন। তাই রাগে আমি রান্নাবান্নার সব ভেঙ্গে কক্ষটিতে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।'
তবে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মিল্কি মো. রেজা বলেন,'কক্ষটিতে কখনই রান্নাবান্না হয়নি। মূলত চা খাওয়ার জন্য সেখানে একটি গ্যাসের চুলা ছিলো। আর সেখানে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকজন শিক্ষিকার কাঁচা বাজার রক্ষিত ছিলো। সেগুলো দেখেই তিনি অশ্রাব্য ভাষায় শিক্ষকদের গালিগালাজ করে কক্ষটি তছনছ করেন।
শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিমউদ্দিন ধনু মেম্বার বলেন,'ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অথচ এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার বদলে রহস্যজনক কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মীমাংসার উদ্যোগ নাকি নেয়া হয়েছে।'
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন,'এ ঘটনায় বুধবার (আজ) সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে তলব করেছেন।'
এ বিষয়ে ইউএনও মোহাম্মদ মাসুমের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কথা বলা যায়নি।
তবে নবীনগরের সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল বলেন,"ঘটনাটি আমি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশও দিয়েছি।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, E-mail: mkprotidin@gmail.com, Contact: (+88) 01643-565087, 01922-619387; Mailing Address: House# 4/A, Main Road, Ati Model Town, Ati, Keraniganj, Dhaka-1312
© All rights reserved © MKProtidin.Com