মোঃ সজিব সরদার : পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে চোখ জুড়ানো সোনালি ধানের ঢেউয়ে যেন উৎসবের আমেজ। চারদিকে পাকা আমন ধানের ঝলকানিতে বদলে গেছে গ্রামের চিরচেনা দৃশ্যপট। মাঠভর্তি ধানের হাসিতে হাসছে কৃষকের মুখ।
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় দুলে দুলে পাকা ধান যেন কৃষকদের আহ্বান জানাচ্ছে—ঘরে তোলার সময় হয়েছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ ধান কাটছেন, কেউ শ্রমিকের খোঁজে ছুটছেন। পাশাপাশি কৃষানিরাও ধান সেদ্ধ, শুকানো ও সংরক্ষণের কাজে দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে , চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার শ্রীরামপুর, আংগারিয়া, মুরাদিয়া, লেবুখালী ও পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে মোট ৬ হাজার ৬০১ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে বাস্তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে চাষ হয়েছে।
উঁচু জমিতে আগাম জাতের ধান রোপণ করায় অনেক এলাকায় ইতোমধ্যে ধান কাটার কাজ শেষ হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়—প্রায় সব মাঠেই ধান পাকতে শুরু করেছে। পুরো এলাকা এখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক মো. ইলিয়াস খান বলেন,
“এবছর আবহাওয়া খুব ভালো ছিল। সময়মতো চারা রোপণ করতে পেরেছি, বড় কোনো রোগবালাইও হয়নি। তাই ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করি গত বছরের চেয়ে এবার বেশি ধান ঘরে তুলতে পারবো।
মুরাদিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কৃষক আবুল কালাম জানান,“আমাদের এলাকায় প্রতিটি মাঠেই আমনের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকদের মুখে মুখে একটাই কথা—এবার সত্যিই বাম্পার ফলন।
দুমকি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.ইমরান হোসেন বলেন,“কৃষকদের আমন চাষে উৎসাহিত করতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষিনির্ভর। নদীবিধৌত পলিমাটির জমি আমন ধান চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
তিনি আরও বলেন,“মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। পোকামাকড় দমনে আলোক ফাঁদ ও পারসিং পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।