মান্নার মিয়া, সুনামগঞ্জ : শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাকঁ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর গ্রামে বৈধভাবে ক্রয়কৃত জমিতে ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্রেতা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর গেদামিয়ার ছেলে আব্দুস সালাম (৫৫) জীবদাড়া মৌজায় অবস্থিত মোট ৯৫ শতক বোর রকম ভূমি ও ১০ শতক বাড়ি রকম ভূমি ক্রয় করেন একই গ্রামের মৃত ডুমাই উল্লাহর ছেলে উকিল আলী ও মোঃশামসুল হকের কাছ থেকে। এর মধ্যে ২৯ শতক বোর রকম ভূমি ও ৫ শতক বাড়ি রকম ভূমি মোট ৩৪ শতক জমি রেজিস্টারি করার জন্য বাকী থাকায়, জমি বিক্রয়ের সময় নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা সম্পাদন করা হয় এবং বিক্রেতা মোঃশামসুল হক ও উকিল আলী জমির স্বত্ব ও দখল বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দেন যে, পরবর্তীতেূ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করে দেবেন।
জমির ক্রেতা আব্দুস সালাম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি উকিল আলী কে নগদ ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ও মোঃশামসুল হককে ২ লাখ টাকা পরিশোধ করে জমি ক্রয় করেন। হলফনামায় বিক্রেতারা উল্লেখ করেন যে,জমিটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি এবং ভবিষ্যতে তাদের কিংবা তাদের উত্তরাধিকারীদের কোনো প্রকার দাবি বা আপত্তি থাকবে না।
তবে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি আব্দুস সালাম ক্রয়কৃত বাড়ি রকম ভূমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করলে বিক্রেতা উকিল আলীর ভাতিজারা—মৃত উকিল আলীর ছেলে দিলাল হোসেন, রফিক মিয়া ও খালেদ হোসেন নির্মাণ কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম বলেন,
“আমি বৈধভাবে টাকা দিয়ে জমি কিনেছি। নোটারি হলফনামা আছে এবং দখল বুঝে পেয়েছি। রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা করা হয়নি। এখন বাড়ির জায়গায় ঘর তুলতে গেলে তারা জোরপূর্বক বাধা দিচ্ছে। এতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও কোনো কার্যকর সমাধান পাওয়া যায়নি। তাই তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় ওয়ার্ড প্রতিনিধি মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন,
“ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমি দু’পক্ষকেই সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিই। পরে তারা আমার কথা মেনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখে।”
স্থানীয়দের উদ্বেগ
স্থানীয়রা জানান, দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে। তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পাশাপাশি ভূমি আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।