নিজস্ব প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও জেলা প্রশাসনের সম্মিলিত অভিযানে বন্ধ হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে চলা অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদীর পাড় কাটা কার্যক্রম। এতে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ এখন স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি কিছু প্রভাবশালী মহল যাদুকাটা নদীর খাস জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলছিল। এতে নদীর পাড় ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ে এবং আশপাশের গ্রামের জমিও হুমকির মুখে পড়ে। বিষয়টি টের পেয়ে ২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)-এর প্রস্তাবনায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযানে নামে।
এরপর থেকেই নিয়মিত টহল ও নজরদারি চালানো হচ্ছে নদীতে। শুক্রবার সকালে বিজিবির সদস্যদের টহল জোরদারের দৃশ্য স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ছড়িয়েছে। বর্তমানে যাদুকাটা নদী, বারিকেলটিলা ও শিমুলবাগান এলাকা আবারও তার আগের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফিরে পাচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয় কৃষক ও জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, “নদীর পাড় কেটে বালু তুললে জমি ধসে যেত। এখন বিজিবি ও প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা নিশ্চিন্তে ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি রক্ষা করতে পারছি।”
২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, “ভবিষ্যতে কেউ নিয়ম ভঙ্গ করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে সিভিল প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিজিবির সদস্যদের মূল দায়িত্ব সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধ হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনেরও নিয়মিত তদারকি প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “যাদুকাটা, বারিকেলটিলা, শিমুলবাগানসহ আশপাশের এলাকা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন ও ধর্মীয় স্পট। এখানে রয়েছে শাহ আরেফিন (রহ.)-এর মাজার ও শ্রী শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর বাড়ি। এসব ঐতিহাসিক স্থান সুরক্ষিত থাকলে শুধু নদী ভাঙন রোধ নয়, দেশের পর্যটন শিল্পও বিকশিত হবে।”
এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন— নদীর বর্তমান স্থিতিশীল পরিবেশ যেন বজায় থাকে এবং ইজারাভুক্ত এলাকা থেকে বৈধ উপায়ে সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের সুযোগ বজায় রাখা হয়।