ওমর ফারুক,
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে 'হানি ট্রাপা'র খ্যাত প্রতারক শহিদুলের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন শাহানারা বেগম নামের এক নারী। নিজেকে শহিদুলের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে শনিবার (১৬ আগস্ট) বেলা ১২টায় শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে শাহানারা জানান, হাওলভাঙ্গি গ্রামের আজিবর রহমান তার প্রথম স্বামী ছিলেন। তাদের সংসারে ৫ কন্যা সন্তান রয়েছে। ছোট মেয়ের বয়স যখন ৪ বছর, তখন তার প্রথম স্বামীর মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে একই এলাকার মৃত শমসের গাইনের ছেলে শহিদুল ইসলাম (বর্তমান ইউপি সদস্য) বিপদে পাশে দাড়ানোর নামে তার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। একপর্যায়ে তার সাংসারিক অস্বচ্ছলতার সুযোগ নিয়ে প্রেমের সম্পর্কের কথা বলে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি ১৭/০২/২০১৯ তারিখে নোটারি পাবলিকের মাধমে তাকে বিয়ে করেন। সংবাদ সম্মেলনে শাহানারা অভিযোগ করেন, বিয়ে করলেও শুরু থেকে শহিদুল তার ভরণ পোষণসহ খরচাপাতি দিতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের দারস্থ হলে শহিদুল তার বাহিনী দিয়ে কর্মস্থল মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেন। আটুলিয়া সোহরাবিয়া মাদ্রাসার এমএলএসএস পদে চাকুরীরত শাহানারা দাবি করেন, মারধর ও তালাক দেয়ার ভয় প্রদর্শনসহ তার পাত্রস্থ হওয়া মেয়েদের সংসার ভাঙার ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে খারাপ কাজ করাতে শুরু করে শহিদুল। তিনি আরো অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে স্বামী অন্যায্য আব্দার রক্ষা করতে পারবে না বলে বাড়ি থেকে চলে গেলে তার চাকুরী নষ্ট করাসহ তার সাথে বিশেষ মুহুর্তে ধারণকৃত ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে মেয়েদের সংসার ভাঙার ভয় দেখিয়ে বাইরে থেকে লোকজন আনিয়ে 'ব্লাক মেইলিং' শুরু করেন শহিদুল। তবে শহিদুলের এমন অপকর্মের সাথে আর তাল মিলাতে পারছেন না- দাবি করে তিনি শহিদুলের অত্যাচার নির্যাতন থেকে মুক্তির আকুতি জানিয়েছেন। লিখিত বক্তব্যে শাহানারা আরো দাবি করেন, শহিদুল বিভিন্ন লোককে তার বাড়িতে এনে অনৈতিক ছবি ও ভিডিও করে রেখেছিল। গোদাড়া গ্রামের সোহাগ (ক্যামেরাম্যান) কে দিয়ে তিনি এসব ভিডিও ও স্থির চিত্র ধারণ করতেন। বর্তমানে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সেব ব্যক্তিদের থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া শহিদুলের কাছে সংরক্ষিত সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করতে চাপ অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন ব্যক্তিকে নানা কাজে বাড়িতে ডেকে এনে শহিদুল গোদাড়ার সোহাগকে দিয়ে তিনি ছবি ও ভিডিও ধারণ করাতেন। পরবর্তীতে সেগুলোকে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ বলে চালিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অন্তত ১০ জনের থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও দাবি শাহানারার।