স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার কালাঘর গ্রামে প্রেমঘটিত বিরোধকে কেন্দ্র করে এক নিরীহ পরিবারের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। হামলার শিকার হয়েছেন গ্রামের মোছাঃ মাজেদা আক্তার (৪৫) এবং তার স্বামী লাল বাদশা। বর্তমানে তারা বিধবা জুবেদা খাতুনের বাড়িতে আশ্রয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভুক্তভোগী মাজেদা আক্তার জানান, তার ভাই খায়রুল ইসলামের ছেলে সম্রাট (২৪) মুজিবুর রহমানের মেয়ে ও মেম্বার আব্দুল মান্নানের ভাতিজি সুমাইয়া আক্তারকে (২০) ভালোবেসে পালিয়ে বিবাহ করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন তারা।
তিনি আরও জানান, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাতের আঁধারে মেম্বার আব্দুল মান্নান ও মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে তাদের নেতৃত্বে একদল লোক পুকুরপাড়ের প্রায় ২০-২৫টি গাছ কেটে ফেলে। বাধা দিলে তার ও স্বামীর ওপর হামলা চালানো হয়। এরপর রাতেই হামলাকারীরা বাড়িতে প্রবেশ করে মারধর করে তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়।
অভিযোগে বলা হয়, হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। লুটকৃত মালামালের মধ্যে ছিল প্রায় ১৫ মণ চাল, ২২ মণ ধান, চুলার ব্যাটারি, একটি মোটর, গ্যাস চুলা ও সিলিন্ডার, একটি বাইসাইকেল, সোনার চেইন ১টি, রুপার চেইন ২টি, ২০টি হাঁস, ২২টি মুরগি সহ আনুমানিক তিন লক্ষ টাকার সম্পদ।
মাজেদা আক্তার বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, কোনো অন্যায় করিনি। শুধু প্রেমঘটিত বিষয়ে প্রতিশোধ নিতে মান্নান মেম্বার আমাদের সর্বস্ব নষ্ট করেছে। আমরা এখন রাস্তায়।”
ভুক্তভোগী পরিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে মধ্যনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। মাজেদা আক্তার জানান, এসআই বিকাশ রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করলেও পরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের প্রভাবে কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং স্থানীয় সালিশের দোহাই দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমি ও আমার পরিবার এখন গৃহহীন। দেশের আইন ও প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার এবং নিরাপত্তা চাই।”
অভিযোগে নামাজা ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, “আমি এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা ও বানোয়াটভাবে নাটক সাজানো হয়েছে।”