আলী আহসান রবি : ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনা ও ভিসা কেন্দ্র লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক হামলা ও সহিংস ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করতে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ রোববার (২৩ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এনে ভারতের সরকারকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বার্তা দেওয়া হয়। বিষয়টি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের আশপাশে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারে ভাঙচুরের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। এসব ঘটনায় বিভিন্ন উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভ কর্মসূচির বিষয়েও গভীর উদ্বেগ জানায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে জানায়, কূটনৈতিক স্থাপনায় পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা, ভাঙচুর কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক রীতিনীতির পরিপন্থী। এসব কর্মকাণ্ড শুধু কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলে না, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তি ও সহনশীলতার মৌলিক মূল্যবোধকেও ক্ষুণ্ন করে।
বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে এসব ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়। পাশাপাশি, ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন, কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনা ও কর্মীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ভারত সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে—এমনটাই প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।
আজকের আগে ১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। পরে এই তলবের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে দেশটির সহযোগিতা কামনা করা হয়। তারা যদি ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে সক্ষমও হন, তবে তাদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়। নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও প্রণয় ভার্মাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর, ১৭ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাল্টা তলব করা হয়।