রাজনীতি

বাগেরহাট-১ আসনে বিএনপির ৮ প্রার্থী, জামায়াতের একক প্রার্থী ঘোষণা

বাগেরহাট-১ আসনে বিএনপির ৮ প্রার্থী, জামায়াতের একক প্রার্থী ঘোষণা

মাসুম বিল্লাহ : বাগেরহাট সদর, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন। নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে ৩টি করা হয়েছে। সর্বশেষ ভোটার তালিকায় এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯০ জন ও মহিলা ২ লাখ ৪০ হাজার ২৬১ জন। একটা আসন কমানোর ফলে নতুন বিন্যাসের ফলে প্রতিটি আসনের সঙ্গে নতুন একটি উপজেলা জুড়ে দেয়া হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে প্রার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে তারা যে উপজেলায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে তা এখন অন্য আসনের অংশ। তবুও থেমে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নতুনভাবে মাঠ গোছাচ্ছেন তারা। বিএনপি’র পক্ষ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতা প্রকাশ ও জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীও দলীয় সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন
  আসনে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে ৮ জন মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পেতে তারা জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। মাঠে নেমেছেন কোমর বেঁধে। এর মধ্যে রয়েছেন- সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি শিল্পপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএএইচ সেলিম, জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ ওহিদুজ্জামান দিপু, জেলা বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা, সাবেক জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও বর্তমান জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সুজন মোল্লা। এ আসন থেকে জামায়াতের পক্ষ থেকে জেলা যুব বিভাগের প্রধান শেখ মনজুরুল হক রাহাদকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় প্রার্থী চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা মুজিবুর রহমান শামীম। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এসএম শাহাদাত হোসেনও এলাকায় প্রচারণায় নেয়েছেন। সৈয়দ মোর্শেদ আনোয়ার সোহেল এনসিপি থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে দলীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া বাম ও অন্যান্য ইসলামী দলসহ ছোট দলগুলোর কোন প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণার খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ভ্রমণ

তিন উপজেলায় আলোচনার মূলকেন্দ্র বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে। কে শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পাবেন? এ আলোচনা সবার মুখে। তবে মনোনয়ন নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র পালাবদল হয়। তবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রতিযোগিতার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এ কারণে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের সক্রিয়তায় দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সাধারণ মানুষ। সবমিলিয়ে এ আসনে উৎসাহ উদ্দীপনায় নির্বাচনী হাওয়া বইছে। বিএনপি’র ভেতরে মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকলেও মাঠে তাদের তৎপরতা দেখার মতো। ভোটাররা জানান, ৫ই আগস্টের পরে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় ভূমিকা ও প্রচারণায় এগিয়ে আছেন জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি এমএ সালাম। অপরদিকে সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএএইচ সেলিম তার ব্যক্তিগত পরিচিতি ও ইমেজের কারণে মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এ ছাড়াও ক্লিন ইমেজ হিসেবে পরিচিত বাগেরহাটের প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তলিম। তার অবস্থানও ভালো বলে জানায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামের একক প্রার্থী হিসেবে জেলা যুব বিভাগের প্রধান শেখ মনজুরুল হক রাহাদ গত ৫ই আগস্টের পর ক্লিন ইমেজ বজায় রেখেছেন। ভোটের মাঠে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার ফলে এরই মধ্যে ভোটারদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। এ অবস্থায় আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হযরত খানজাহান (র.) এর পুণ্যভূমি দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটির নেতৃত্ব কার হাতে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।