তুমি কেউ নও — এই কথাটা যতবার শোনো,
তারচেয়ে বেশি বার মনে রেখো,
তুমি— তুমিই।
একমাত্র, অদ্বিতীয়, অপরিবর্তনীয়।
তোমার হাত — কাগজ নয়,
যে কেউ ইচ্ছেমতো ছিঁড়ে ফেলবে।
এ হাত সৃষ্টি করে, ধরে রাখে,
আশ্রয় দেয়, আবার ছেড়েও দেয়।
তোমার মুখ — নীরবতার পর্দা নয়,
যে কেউ যা খুশি সেলাই করবে,
চুপ করিয়ে দেবে, না চাইলেও।
তোমার মুখে শব্দ আছে, প্রতিধ্বনি আছে,
বুকে জমে আছে কান্নার মতো কিছু সত্য।
কাঁধ তোমার নিজের, এটা হ্যাঙ্গার নয়—
তাকে ঝুলিয়ে রেখো না -
কোনও অসমাপ্ত বোঝায়।
তোমার শরীর; কোনও বিচারযোগ্য বস্তু নয়, চামড়ার রঙ, আকার, গড়ন—
এই সবই তোমার-- একেকটা কবিতা।
নিজেকে লুকিও না, নিজেকে ছোট করো না --কারও ভুল মাপজোখে।
মন যদি কাচ হয়, তবে সে স্বচ্ছ
সে আলো ধরে রাখে
ভেঙে গেলে ধারালো হয় ঠিকই,
কেউ কি বলেছে, কাচ শুধু ভাঙার জন্যই?
জীবন তোমার সিনেমা নয়—
যেখানে কেউ চাইলে থেমে যাবে গল্প।
তুমি লিখো নিজেই নিজের চিত্রনাট্য,
চাইলে প্রতিদিন নতুন কিছু দৃশ্য।
হৃদয় ; কোনো তালাবদ্ধ ঘর নয়,
যেখানে পুরনো প্রেমের চিঠিগুলো জমে থাকে অথবা ভয় কিংবা আক্ষেপ নিয়ে,
ওটা একটা দরজা—
তুমি সুন্দর—এ কথাটাকে কেউ তোমার কাছ থেকে নিতে পারে? তোমার হাসি,
তোমার হাঁটা, তোমার চুলে থাকা অগোছালো বিকেল—
সবই তো নিজস্ব শিল্প।
বলোতো;
তোমার হাসি ছাড়া কি ভোরটা জমে?
তোমার কান্না ছাড়া কি বৃষ্টি নামে?
পৃথিবী যদি কখনো বলে
"এখানে তোমার জায়গা নেই"—
তাকে মনে করিয়ে দাও,
এই পৃথিবীর বুকেই-- তুমি নিয়েছিলে
প্রথম শ্বাস।
তুমি এক আকাশ—যা কেউ মেপে দেখেনি, তোমার সম্ভাবনার শেষ কথা কেউ লেখেনি।
তুমি সুর, তুমি আলো,
তুমি আগুনের শিখা,
তুমি হও তোমার--এ-ই হোক শেষ কথা।
আর বাকি সব --- কেবলই শব্দ।
লেখক : বাংলাদেশ পুলিশের আইন প্রশিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান।