স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল

লাখাইয়ের বিল থেকে স্বল্পপুঁজিতে আয়: গাংকলা এখন জীবনধারার উৎস

লাখাইয়ের বিল থেকে স্বল্পপুঁজিতে আয়: গাংকলা এখন জীবনধারার উৎস

সেলিম মাহবুব : নদী বেষ্টিত লাখাইয়ের  বিল, ঝিল আর জলাভূমিতে এখন প্রাকৃতিকভাবে ফোটা শাপলা আর গাংকলার সমারোহ। 

ফুল প্রজাতির হলেও সবজি হিসাবে সুস্বাদু গাংকলা। বাজারে চাহিদা থাকায় নয়নজুড়ানো গাংকলা তুলে বিক্রি এখন বিকল্প আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে  কর্মহীন কৃষকের। 

প্রাকৃতিকভাবে হওয়ায় উৎপাদনে প্রয়োজন নেই পুঁজির। বিনা পুঁজিতেই গাংকলা আহরণ ও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান তারা। বিভিন্ন বয়সী মানুষ ঝুঁকছেন এ কাজে। গাংকলা তুলে বিক্রি করে চলছে সংসার।

জানা যায়, হবিগনজ জেলার লাখাইয়ের জলাভূমি ও বিভিন্ন  বিল থেকে প্রতিদিন নৌকায় গাংকলা আহরণ চলছে। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে গাংকলা তোলার কাজ। একেক জন প্রতিদিন ১০০-২০০ আটি পর্যন্ত গাংকলা তুলে থাকেন। খুচরা  প্রতি আটি শাপলা বিক্রি করছেন ১৫-২০ টাকা।

স্থানীয় বুল্লা বাজারে বিক্রির পাশাপাশি অধিকাংশ গাংকলা বিক্রি হয় লাখাইয়ের  বিভিন্ন বাজারে। দিনভর জলাভূমিতে থেকে আহরণের পর বিকালে রাখা হয় বাজারের । 

সাতবিলা বিলের এলাকায় দেখা যায়, বিলের দিগন্তজুড়ে ফুটে আছে অসংখ্য গাংকলা। সারি সারি নৌকায় ভোর থেকে বিলের জলে ফোটা গাংকলা তুলছেন কৃষকরা। গাংকলা ধুয়ে নির্দিষ্ট আকৃতিতে কেটে রাখছেন। 

১৩-১৪টি  করে আটি বেঁধে রাখছেন নৌকায়। প্রতিটি নৌকায় ফুলে ফুলে ভর্তি।
গাংকলা তোলায় ব্যস্ত পুর্ব বুল্লার ইসমাইল মিয়া বলেন, ‘আমি  মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি । 

প্রতিবছর বর্ষার পানিতে গাংকলা তুলি। বিনা পুজিতে  উপার্জনের মাধ্যম হলো গাংকলা  । ১০০-১৫০ আটি শাপলা তুলতে পারি প্রতিদিন। বিক্রি করে দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা আয় হয়। 

এই দিয়ে সংসার চলে যাচ্ছে।আরেকজন কৃষক বলেন, ‘শ্রাবণ থেকে চলতি আশ্বিন মাস পর্যন্ত বিলে গাংকলা  ফোটে। কোনো পুঁজির দরকার হয় না। গাংকলা  তুলতে একটু পরিশ্রম হয় আর কি। 

সারাদিন গাংকলা  তুলে বিল থেকে স্থানীয় বুল্লাবাজারে বিক্রি করতে আনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন নৌকায় গাংকলা  তোলে। এ মাস (আশ্বিন) পর্যন্ত তোলা যাবে। আল্লাহর রহমতে এই কাজে সবার ভালোই চলছে। 

আমরা কৃষক মানুষ, অন্য তো কামকাজ নাই। ,কৃষিবিদদের মতে গাংকলা  চাষ করতে হয় না। প্রাকৃতিকভাবে লাখাইয়ের হাওরে প্রচুর গাংকলা  হয়ে থাকে। পুষ্টির চাহিদা পূরণে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে গাংকলা । 

যেহেতু বাজারে খাদ্য হিসেবে চাহিদা আছে। তাই গাংকলা  তুলে বিক্রি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে, যেহেতু প্রাকৃতিক পরিবেশে গাংকলা  জন্মায়, সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়ানোর জন্য বাজারজাত করার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করার পরার্মশ দিচ্ছি।