আইন ও বিচার

দিনাজপুরে পুলিশের নাম-ছবি ব্যবহার করে নগদ একাউন্ট হ্যাক, ২৫ হাজার টাকা প্রতারণা

দিনাজপুরে পুলিশের নাম-ছবি ব্যবহার করে নগদ একাউন্ট হ্যাক, ২৫ হাজার টাকা প্রতারণা

মোঃ আহসানুজ্জামান : দিনাজপুরে এক ব্যক্তির নগদ একাউন্ট হ্যাক করে পুলিশের নাম ছবি ব্যবহার করে মামলার ভয় দেখিয়ে ২৫ হাজার টাকা নেয়ায় থানায় অভিযোগ। ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ২ টার সময় দিনাজপুর সদর উপজেলা ১০ নং কমলপুর ইউনিয়ন এলাকায় এক ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্র জানা যায়। পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে ব্ল্যাকমেল করে এক দম্পতির কাছ থেকে অভিনব কৌশলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি ভয়ংকর প্রতারক চক্র। এখানেই শেষ নয়,টাকা দেওয়ার পরেও চক্রটি ওই দম্পতির কাছ থেকে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি এবং মুখমন্ডলের ভিডিও নিয়েছে বলে জানান ভক্তভোগী।ভুক্তভোগী দম্পতি জানান,০১৬০৯৫৮৯২৪১, ০১৭৭১৩৬৭১৪৪ নাম্বার থেকে তার মোবাইল ০১৭৪০৪৯৫১২৭ নম্বরে একটি কল আসে। ফোনকারী ব্যক্তি নিজেকে একজন পুলিশের এস আই হিসেবে পরিচয় দেয়,এবং জানায় যে তার নগদ নম্বারে একটি মামলা করা হয়েছে। এবং আপনার নগদ একাউন্টটি হ্যাক হয়েছে দ্রুত সমাধান না করলে বিপদ হতে পারে। প্রতারক চক্র বলেন আমাদের ০১৭৭১৩৬৭১৪৪ মোবাইল নম্বরে ২৫ হাজার টাকা ক্যাশ ইন'করতে,অন্যথায় স্বামী-স্ত্রীর নামে মামলা দেওয়া হবে। পুলিশের নাম শুনে এবং মামলার ভয় পেয়ে আতঙ্কে পড়ে যান ওই দম্পতি। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করা এবং বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা প্রতারকের কথা বিশ্বাস করে ফেলেন।প্রতারক চক্র বলে যে দ্রুত নিকটস্থ একটি দোকানে যান এবং মোবাইল ০১৭৭১৩৬৭১৪৪ নম্বরে ২৫ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করেন না হয় আপনার বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তখন আপনাদের জন্য আমরা কিছু করতে পারবো না,এবং  আমাদের আর করার কিছুই থাকবে না,আপনার বাসায় পুলিশ চলে যাবে। আপনি যা করবেন দ্রুত,একথা শুনে ভুক্তভোগী দিশেহারা,ভুক্তভোগী ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেন যে ভাই আমার কাছে তো টাকা নাই আমি টাকা কোথায় পাবো। দোকানে গেলে তো টাকাটা লাগবে,তখন ওই পুলিশ কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে পরামর্শ দেন আপনি দোকানে যান,গিয়ে দোকানদারকে বলবেন ২৫ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করতে,যদি দোকানদার আগে টাকার কথা বলে তখন আপনি বলবেন যে টাকাটা দিচ্ছি আপনি ক্যাশ ইন করেন। আপনার কোন সমস্যা হবে না কারণ টাকাটা নগদ একাউন্টে ঢুকবে না। আপনার নগদ একাউন্ট চালু হয়ে যাবে এবং আপনার  সমস্যা সমাধান হবে যাবে। পুলিশ কর্মকর্তার কথা সরল বিশ্বাসে দোকানদারকে বলে ভাই এই নগদ নাম্বারে টাকাটা ঢুকিয়ে দেনতো তখন দোকানদার টাকাটা ঢুকিয়ে দেয়,এবং নগদ নাম্বারে টাকাটা ঢুকে যায়। তখন তো ভুক্তভোগীর মাথা ঘুরে যায় কি হবে এখন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আবার বলে যে টাকাটা তো ঢুকে নাই আপনি আরেক দোকানে দিয়ে এভাবে ট্রাই করেন।দোকানদার ভুক্তভোগী কে বলে আপনি যে নাম্বারটা দিলেন ওই নাম্বারে তো ২৫ হাজার টাকা ক্যাশ ইন হয়েছে আপনি টাকা দিয়ে যান।তখন টাকা কোথায় পাবে। তবে দোকানদারের তখন সন্দেহ হয় বলে আপনি কাকে টাকা দিচ্ছেন। দোকানদার কে বিষয়টি খুলে বলতে অনীহা প্রকাশ করে।কিছুক্ষণ পরই আবার প্রতারক চক্রটি আরও ২৫ হাজার টাকা দাবি করে। তখন দোকানদারটি বিষয়টি বুঝতে পারে এবং ভুক্তভোগীকে বুঝিয়ে বলে এবং পরিবারকে খবর দিতে বলে পরিবারের লোকজন এসে বিষয়টি এই পরিস্থিতি দেখে সন্দেহ হয় এবং তারা টাকা দিতে অস্বীকার করেন। তখন প্রতারকরা তাদের নামে মামলা হুমকি দিতে থাকে।টাকা দিতে অস্বীকার করায় প্রতারক চক্র বারবার ওই দম্পতিকে কল করে হয় রানি করতে থাকে এবং তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি এবং মুখমন্ডলের ভিডিও স্ক্যান করে নেয়। ধারণা করা হচ্ছে,ভবিষ্যতে ব্ল্যাকমেইল করার জন্যই প্রতারকরা এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে।পুলিশ পরিচয় ব্যবহার করে এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি সাইবার অপরাধের একটি নতুন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে অন্যদেরকেও এভাবে ফাঁসাতে পারে তাই এই নগদ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও সচেতন ব্যক্তিবর্গ।