জাতীয়

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে - সিইসি এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে - সিইসি এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন

আলী আহসান রবি : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ, এম, এম, নাসির উদ্দিন বলেছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। আইনের শাসন কাকে বলে, আমরা তা দেখিয়ে দিতে চাই। যোগসাজশ করে 'ম্যানেজড নির্বাচন'-এর অপবাদ আমরা ঘোচাতে চাই। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অডিটোরিয়ামে 'গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬' উপলক্ষ্যে রিটার্নিং অফিসার ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা' বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

দেশ আজ একটি যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তা সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়বদ্ধ থাকব। তিনি বলেন, 'এই দেশটা আমার, আপনার—সকলের। দেশকে সঠিক অবস্থায় রেখে যাওয়া আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।'

নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আইনের শাসন নিশ্চিত করবেন। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিচ্যুতি যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা সবাই মিলে নির্বাচনি দায়িত্ব সঠিকভাবে পরিপালন করব। এজন্য নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যেককে সঠিক কাজটি সঠিক সময়ে এবং কার্যকর উপায়ে সম্পন্ন করতে হবে।

সিইসি আরও বলেন, "আপনারা যখন সাহসী সিদ্ধান্ত নেবেন, আইন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেবেন এবং বিধিবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন, তখন নির্বাচন কমিশন আপনাদের পাশে থাকবে।"

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনারা নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট আইনকানুন ভালোভাবে পড়বেন এবং সে অনুযায়ী প্রিসাইডিং অফিসারদের গাইড করবেন। সিইসি নির্বাচন-সংক্রান্ত অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে তাগিদ দেন।

সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি পরিপালন-সংক্রান্ত পদক্ষেপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারের উদ্যোগ নিতে হবে। এতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। সিইসি সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ এহছানুল হক, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ দেলোয়ার হোসেন।

সভায় সকল বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা-সহ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার প্রতিরোধ, গুজব মোকাবিলা-সহ নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।