সাকিব আলম মামুন,রাংগামাটি জেলা প্রতিনিধিঃলংগদু উপজেলার কাচালং নদীর পূর্বপাড়ের তিনটি ইউনিয়ন অর্থাৎ বগাচতর, গুলশাখালী ও ভাসান্যদমের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সড়ক পথে যাতায়াতায়ের এক মাত্র সেতু এই গাউছপুর সেতুটি।
সেতুটি ৪নং বগাচতর ইউপির অন্তর্ভুক্ত ২নং গাউসপুর ওয়ার্ড ও ৩নং ফরেস্ট অফিস ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী সীমান্তে অবস্থিত।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে হাজারো পেশার মানুষ ও যানবাহন। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া হাজারো শিক্ষার্থী; ব্যবসায়ীরা ও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মজীবী মানুষ এ সেতুটির উপর দিয়ে দৈনিক যাতায়াত করছে।
এছাড়াও হাজারো মোটরযান, ট্রলি, অটোরিক্সা ও মিনি ট্রাক চালকদের জীবিকা নির্বাহের জন্য যত্রতত্র আসা-যাওয়া করতে হয় এই সেতুর উপর দিয়ে।
সেতুটি কত বছর আগে নির্মিত হয়েছিল তা সঠিক করে বলতেও পারে না স্থানীয় জনসাধারণ। তবে অনেক পুড়নো এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ বলে জানা গেছে এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে। এলাকার একজন স্থানীয় ব্যক্তির কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরেই এমন ভাঙাচুরা অবস্থাতেই দেখে আসছি। তখন এই পথে গাড়ি চলাচল ছিল না, নদী পারাপারে অসুবিধা এবং শুধুমাত্র পায়ে হাটার জন্যই নির্মান করা হয়েছিল এই সেতুটি। কাজেই প্রস্থ দেওয়া হয়েছিল যথেষ্ঠ কম। এতোটাই সরু যে একটি মোটর সাইকেল উঠলেও আর পথচারীদের হাটার জায়গা থাকে না।
বর্তমানে এই পথে অসংখ্য মোটর সাইকেল, লরি, জীপ, মালবাহী গাড়ি সহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। কিন্তু সেতুটার অবস্থা এতোটাই ঝূঁকিপূর্ণ যে কোন সময় ধসে পড়ে মারাত্মক দূর্ঘটনার সম্মুখীন হয় হাজারো মানুষ তা কেউ জানে না। দুই পাশের রেলিং ভেঙে গেছে পুরোপুরি। আর নিচে খরস্রোতা নদীর পানির ধাক্কায় সেতুর খুঁটিগুলোর নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় সেগুলো সেতুটি’কে শক্তিশালী ভাবে দাড় করিয়ে রাখার পরিবর্তে উল্টো ঝুঁলে থেকে যেকোনো মুহূর্তে দূর্ঘটনার ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা, সবার চোখের সামনে অথচ এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। কয়েক বছর আগে রাজনগর বিজিবি জোনের পক্ষ থেকে সামান্য সংস্কার করে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ লিখে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরে এটি সংস্কার বা পুনঃনির্মানে আর এগিয়ে আসেনি কেউ।
সংশ্লিষ্ট তিনটি ইউনিয়নের জনগণের এবং যানবাহন চলাচলের একমাত্র সেতু এটা; তবুও বেহাল অবস্থা!
২নং ও ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জনাব বিল্লাল খান ও মুসা যৌথভাবে জানান, এই পথে যাতায়াতকারী হাজারো মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে জরুরী ভিত্তিতে একটি প্রশস্ত সেতু নির্মানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমরা কথা বলেছি এবং লিখিত আবেদন করেও জোর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার সেতু নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয় নি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি সেতুটির নতুন করে নির্মাণের জন্য; যাতে এলাকাবাসী উপকৃত হয়।