বিল গাজনার মাঠে
……..জাহাঙ্গীর পানু……..
আমি দেখেছি কত রং বিল গাজনার মাঠে
যেখানে কৃষকের স্বপ্ন হাতছানি দিয়ে ডাকে।
দেখেছি সোনালী ধানক্ষেত দিগন্তে জোড়া
পেঁয়াজের কচি দানার আঁটি স্বযত্নে মোড়া।
সবুজ ধানক্ষেতে কৃষকের স্বপ্নের লুকোচুরি
পাটের কচি পাতায় হাসে বসিয়া মুখোমুখি।
পাটের নিড়ানি দিয়ে রাখে স্রষ্টার পানে হাত
শক্ত কাণ্ডের উপর দাড়িয়ে অদুর ভবিষ্যৎ।
মনে পড়ে শৈশব কৈশরের কত রকম স্মৃতি
সারি সারি বসে থাকা পেঁয়াজ রোপনের ছবি।
পানি সেচে শুকিয়ে কোপায় জমি মনে খুব বল
পেঁয়াজের কচি ডগায় হাসে সারা বছরের সম্বল।
পৌষ মাসের হাড়কাঁপানো শীতের সকাল
কুয়াশার চাদরে ঢাকা পরে মাঠের ফসল।
চৈত্র মাসে পেঁয়াজ ওঠে ভরে আসে গাড়ি
কাচারি ঘরের চাতাল ভরে গৃহস্থের বাড়ি।
বর্ষায় বাদল নামে বন্যা আসে বিলে
কৃষকেরা ধোয় পাট বন্যার জলে।
রোদে শুকিয় পাট ছড়িয়ে আঁশটে
বেচাকেনা করে তারা গঞ্জের হাটে।
জেলেদের বের জালে মাছ পরে ধরা
কেউ আবার ধরে মাছ পাতিয়া খরা।
কৈ বাইন টেংরা পুঁটি কতরকম মাছ
সৌখিন জেলেরা ধরে সকাল সাঁঝ।
পদ্ম শাপলা ঢোল কলমি কচুরির ফুল ফোটে
শাপলা ফুলের ডাটায় মানুষের খাদ্য জোটে।
বর্ষাকালে বিলে ফোটে পদ্ম শাপলা ফুল।
খয়রান ব্রীজে দেখা যায মানুষের হুলস্থুল।
এপার ওপার পারাপারের গয়নার নাও
স্যালো মেশিন লাগিয়ে ঘোরে কত গাঁও।
মুখে হাসি নতুন জামা সাথে মিষ্টির হাঁড়ি
পাল তোলা নৌকায় বর চলে শশুর বাড়ি।
শীতের শিশিরে ভেজা সকালের মাঠ
বিকেলে তেমাথায় বসে গ্রামের হাট।
নিশিতে বেজে ওঠে রাখালের বাঁশি
মনের মাঝে সুর, মুখে গৃহস্থের হাসি।
সারাদিন জেলের দল মাছ ধরে বিলে
অবসর বেলা যায় নৌকা বাইচ দেখে।
কতরকম ছবি ভাসে মোদের হৃদয় পটে
অর্থের চারণভূমি বিল গাজনার মাঠে।