মোঃ আবু তৈয়ব:
চট্টগ্রামের রৌফাবাদ এলাকার মাদক ব্যবসায়ী খাদিজা বেগমকে (৪২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় ১ হাজার ১৭০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রৌফাবাদের খালপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ বলছে, খাদিজা জুয়ার বোর্ড ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য আশপাশের এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেন। একাধিক মোবাইল ফোন থেকে দূরে বসে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করতেন তিনি। এছাড়াও খাদিজার বাড়িতে পুলিশ অথবা অন্য কোনো বাহিনী অভিযানের জন্য প্রবেশ করলে আসামির নিযুক্ত একাধিক সংবাদদাতা খাদিজাকে অভিযানের সংবাদ আগেই দিয়ে দিত। এ কারণে তাকে এতদিন গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, খাদিজাকে কৌশলে শনিবার রাতে রৌফাবাদের খালপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় খাদিজার স্বামী মো. মান্নান ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। খাদিজার দেওয়া তথ্য মতে, তার ঘর থেকে ১ হাজার ১৭০ পিস ইয়াবা জব্দ হয়। এ সময় ৪টি মোবাইলফোন জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খাদিজা দীর্ঘদিন ধরে রৌফাবাদ পাহাড়ি এলাকায় চাঁদাবাজি, সরকারি পাহাড় দখল, খাস জমি দখল, জুয়ার আসর বসানোসহ বিভিন্ন রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিলেন। খাদিজা ও তার স্বামী আব্দুল মন্নান রৌফাবাদ এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। তার বাড়ার পেছনে খাল, অন্যদিকে পাহাড়, আরেকদিকে অক্সিজেন রেল বিট এলাকা। খাদিজার রৌফাবাদ এলাকায় চুক্তিভিত্তিক কিছু নারী ও তরুণ আছে। তাদের দিয়ে অক্সিজেন রেল বিট, দুর্গম পাহাড় এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় মাদক ক্রয় বিক্রয় করতেন। এছাড়াও খাদিজা তার স্বামীর সঙ্গে মিলে রৌফাবাদ স্টারশিপের পেছনের খাল পাড় ও পাহাড়ি এলাকায় জুয়া পরিচালনা করতেন। এলাকার খাস জমি, বিতর্কিত জমি চুক্তিভিত্তিক নারীদের দিয়ে দখল করতেন।
ওসি বলেন, খাদিজা যেসব এলাকায় জুয়ার বোর্ড ও মাদক বিক্রি করতেন সেসব এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেন। যা একাধিক মোবাইল ফোন থেকে দূরে বসে নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করতেন। এছাড়াও খাদিজার বাড়িতে পুলিশ অথবা অন্য কোনো বাহিনী অভিযানের জন্য প্রবেশ করলে তার নিযুক্ত একাধিক সংবাদদাতা খাদিজাকে অভিযানের খবর আগেই দিয়ে দিত। এ কারণে তাকে এতদিন পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুলিশ বলছে, রৌফাবাদে খাদিজার বাড়িটি পাহাড়ি এলাকায়। সেখানে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। অভিযান পরিচালনা করতে গেলে পুলিশকে ২০ মিনিট পায়ে হেঁটে তার বাড়িতে যেতে হয়ে। এ সুযোগেই তিনি পালিয়ে যেতেন।
ওসি বলেন, খাদিজা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও খাদিজার বিরুদ্ধে আরও দুইটি মামলা আছে। তার স্বামীকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।