সেলিম মাহবুব : তাহিরপুর উপজেলার তাহিরপুর—বাদাঘাট সড়কের দুই পাশ থেকে প্রতিদিন রাতের আঁধারে ২—৩টি করে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এতে করে মাটিয়ান হাওরের পূর্বদিক দিয়ে অবস্থিত সড়কে হাওরের ঢেউ ও ঢলের পানিতে মাটি ক্ষয় বেড়েছে। এতে উপজেলার অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের একমাত্র সড়কটিতে ভাঙনের হুমকি বেড়েছে। সড়কটির গাছ রক্ষায় দ্রুত উদ্যোগ, জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নতুন করে আরও বৃক্ষ রোপনের দাবি জানিয়েছেন এই সড়কে চলাচলকারী লোকজন।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটির সদর ইউনিয়নের জামালগড় এলাকা থেকে মাটিয়ান হাওরের তীরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা লাটিম, মেহগনি ও রেন্ট্রিসহ স্থানীয় জাতের বিভিন্ন গাছ সড়কের মাটি সুরক্ষিত রাখছে। ১৫—২০ বছর বয়সী এসব গাছ পথের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে এবং পথচারীদের ছায়াও দিয়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি রাতের আঁধারে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষায় গাছগুলো কাটা হচ্ছে। এবছর এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫—৪০টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যেই সড়কের সব গাছ উধাও হয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
উজান তাহিরপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি সড়কের পার্শ্ববর্তী গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। গাছগুলো কেটে ফেললে সড়কটি হুমকির মধ্যে পড়বে। আমরা সকলেই প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে সড়কের পাশের গাছগুলো বিলীন হয়ে যাবে। এতে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি হবে, অন্যদিকে সড়কটিও ভাঙনে পড়ে বিলীন হবে। এছাড়া উপজেলার অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের মাটিয়ান হাওরের উত্তরপাড় দিয়ে গড়ে তোলা এই সড়কটির অপরূপ সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে।
টাকাটুকিয়া গ্রমের বাসিন্দা দেবাশীষ রায় বলেন,তাহিরপুর উপজেলার অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে এটি এমনিতেই ঝুঁকিতে। হাওরের পার ধরে চলা এই সড়কপথটি দিয়ে যাতায়াতে অপরূপ সৌন্দর্যে্য প্রতিদিন মুগ্ধ হই। কিন্তু গাছ কর্তনে সড়ক ও এর সৌন্দর্য দুটোই বিলীন হবে।
তাছাড়া , অবৈধভাবে সরকারি গাছ কাটা শুধু পরিবেশ নয়, জীববৈচিত্র্যের জন্যও ভয়াবহ হুমকি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক বলেন, আমি উপজেলায় নতুন এসেছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।