রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
‘‘কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না নয়’’-আইজিপি গাজীপুরের সফিপুরে সৌদি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়ামির উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স উদ্বোধন কালিগঞ্জে ইকরা তা’লীমুল কুরআন নূরানী মাদ্রাসায় সুধী ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে ৩৪৭বোতল ফেন্সিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: সংস্কার কমিশন সদস্য তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের সাথে আমাদের সংযোগ বাড়াতে চাই-পার্বত্য উপদেষ্টা সকল টেলিভিশন চ্যানেল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ‘জুলাই অনির্বাণ’-শীর্ষক ভিডিওচিত্র প্রচারের উদ্যোগ আ.লীগ নিজেরাই নিজেদের পতন ডেকে এনেছে : জামায়াত আমির ব্রেক ফেল হয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে ২ কিঃমিঃ দূরে গিয়ে থামলো ট্রেন গণমাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় সভা আয়োজনসহ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ

হরিপুর জমিদার বাড়িকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের সহযোগিতা চায় শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ জুন, ২০২০, ১.৪৩ পিএম
  • ৩২২ বার পঠিত

এম এ এইচ চৌধুরী মিথুন:উত্তর জনপদের জেলা ঠাকুরগাঁও থেকে প্রাই ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত সীমান্তবর্তী উপজেলা হরিপুরে কেন্দ্রস্থলে এখনো মাথা উচু করে দারিয়ে আছে বহু বছরের পুরনো হরিপুর জমিদার বাড়িটি।এই জমিদার বাড়িটি হরিপুর জমিদার বাড়ি বা রাজবাড়ী নামেই পরিচিত।যা হরিপুরের ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব বহন করে।বলা জাই বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে হরিপুর কে আলাদাভাবে পরিচিত জানান দেয় এই জমিদার বাড়ি টি কিন্তু কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অবহেলায় অযত্নে ময়লাস্তূপে পরিণত হয়ে গিয়েছিল হরিপুর উপজেলার এই ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি। যে জমিদার বাড়িটি একসময় রঙ্গিন আলোয় ঝলমল করত সেই জমিদার বাড়ি টি কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষ ও পাশ্ববর্তী বাজারের লোকজন মলত্যাগ করার কাজে ব্যবহার করত।ফলে নোংরা নর্দমায় পরিণত হয়েছিল জমিদার বাড়ি টি।যেই জমিদার বাড়ি টি দেখার জন্য ও এর ইতিহাস জানার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতো। কিন্তু অবহেলা ও অযত্নে রাজবাড়ীটি হয়ে উঠেছিল মলত্যাগ ও দুর্গন্ধে ভরা এক নিষিদ্ধ পল্লী যা রিদয়ের মণিকোঠায় আঘাত করেছিল স্থানীয় শিশু কিশোর সহ তরুণ শিক্ষার্থীদের। তারা নিজস্ব ভাবনার জায়গা থেকে ভেবেছিল বাংলাদেশের অনেক পুরনো ঐতিহ্য শুধু যত্ন না হওয়ার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।কিন্তু হরিপুর জমিদার বাড়িটির সেই তুলনায় এখনো কিছুই হয়নি। আমরা সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করলে এই ঐতিহ্য কে ধরে রাখা সম্ভব।যা কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে।তাদের স্বপ্ন গোটা বিশ্ব থেকে একটা সময় মানুষ ছুটে আসবে হরিপুর জমিদার বাড়িটি দেখার জন্য।এটি হবে একটি পর্যটন এলাকা।যদি এমন কিছু করতে পারি তাহলে হরিপুরের মতো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হয়ে উঠবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। যেই ভাবনা নিয়েই স্থানীয় শিশু কিশোর সহ তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শুরু হলো হরিপুর জমিদার বাড়িটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ।যে জার বাড়ি থেকে ঝাড়ু,কোদাল, কাস্তে হাতে নিয়ে যাত্রা শুরু করলো মিশন হরিপুর জমিদার বাড়ি। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে টিফিন খরচ ও হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে নিঃস্বার্থভাবে শ্রমের ফলে ময়লা স্তুপে পরিণত হওয়া বহু বছর পুরনো হরিপুর জমিদার বাড়িটির চেহেরায় বদলে দিয়েছে শিক্ষাথীরা।দর্শনাথীদের ও স্থানীয় বাজারের মানুষদের মলত্যাগের জন্য করেছে নির্ধারিত স্থান।পরিবেশ কে সুন্দর করতে তৈরি করেছে ফুলের বাগান।গোটা জমিদার বাড়ি ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে এবং ঝুঁকপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে দেওয়ালে লাগিয়েছে সচেতনতা মূলক সাইন বোর্ড।যাতে লেখা ধীরে চলুন, সাবধানে চলুন।এছাড়াও গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গোটা জমিদার বাড়ির দেওয়ালে লাগিয়েছে সচেতনতা মূলক স্টিকার।যাতে লেখা আছে জমিদার বাড়ি আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন কাজের নেতৃত্ব দাতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ সালমান ফার্ফি ও আশিফ ইকবাল বলেন আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে নিজ উদ্যোগে নিজেস্ব অর্থায়নে আমাদের সরকারি সম্পদ যত্ন করার চেষ্টা করছি।আমরা হরিপুর জমিদার বাড়ির ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হাতে হাতে লিফলেট বিতরণ করছি।আমরা জারা কাজ করেছি তারা অনেকেই বাইরে পড়াশোনা করি।আমরা চলে জাওয়ার পর এই জমিদার বাড়িটি আবার নোংরা হলে খুবই কষ্ট পাবো।আমাদের একার পক্ষে এই কাজ চলমান রাখা সম্ভব না।সরকারের পক্ষ থেকে সুদৃষ্টি কামনা করছি। মাননিয় জেলা প্রশাসক ও হরিপুর উপজেলার নির্বাহি অফিসার মহোদয় যদি আমাদের কাজকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করে করেন তাহলে হরিপুর জমিদার বাড়িটি অবস্যয় পরিস্কার রাখা সম্ভব। আমরা শুনেছি জেলা প্রশাসক অনেক ভালো মানুষ ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি তার আলাদা টান রয়েছে। আশা করছি তিনি আমাদের সহয়াক হবেন।হরিপুর উপজেলার সরকারি মুসলেমউদ্দীন কলেজের সহকারি অধ্যাপক করিমুল ইসলাম বলেন,হরিপুর জমিদার বাড়িটি একটি ঐতিহ্য।আমি তরুণদের এমন কাজকে সাধুবাদ জানাই এবং তাদের অনুপ্রাণিত করতে চায়।এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজ।প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা কামনা করছি। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার,জেলা প্রশাসক ড.কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার জমিদার বাড়িটি একটি পুরনো ঐতিহ্য। যেটি উওর বঙ্গে বিশেষ ভাবে পরিচিত। জমিদার বাড়িটি সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে হরিপুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার সংস্কারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি সেটি পরিদর্শন করে একটি রিপোর্ট প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরে প্রেরণ করেন।সেখান থেকে একটি টিম আসবে।আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই সংস্কার করা হবে।উল্লেখ্য যে তথ্যসূত্রে জানা জায় এই জমিদার বাড়িটি ঘনশ্যাম কুন্ডুর বংশধরের দারা প্রতিষ্ঠিত। মুসলিম সাশন আমলে আনুমানিক ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে ঘনশ্যাম কন্ডু নামক এক ব্যবসায়ি এন্ডি কাপড়ের ব্যবসা করতে হরিপুরে আসেন। তখন মেহেরুন্নেসা এক বিধবা মুসলিম মহিলা এ অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। তাঁর বাড়ি মেদনিসাগর গ্রামে।জমিদারির খাজনা দিতে হতো তাজপুর পরগণার ফৌজদারের নিকট। খাজনা অনাদায়ের কারণে মেহেরুন্নেসার জমিদারির কিছু অংশ নিলাম হয়ে গেলে ঘনশ্যাম কুণ্ডু কিনে নেন। ঘনশ্যামের পরবর্তী বংশধর দের একজন রাঘবেন্দ্র রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বৃটিশ আমল হরিপুর রাজবাড়ির কাজ শুরু করেন। কিন্তু তার সময়ে রাজবাড়ির কাজ শেষ হয়নি। রাঘবেন্দ্র রায়ের পুত্র জগেন্দ্র নারায়ণ রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজবাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এ সময় তিনি বৃটিশ সরকার করতৃক রাজর্ষী উপাধিতে ভূষিত হন। জগেন্দ্র নারায়ণ রায়ের সমাপ্তকৃত রাজবাড়ির দ্বিতল ভবনে লতাপাতার নকশা এবং পূর্ব দেয়ালের শীর্ষে রাজর্ষী জগেন্দ্র নারায়ণের চৌদ্দটি অবক্ষ মূর্তি আছে। তা ছাড়া ভবনটির পূর্ব পাশে একটি শিব মন্দির এবং মন্দিরের সামনে নাট মন্দির রয়েছে। রাজবাড়িতে ছিল একটি বড় পাঠাগার যার অস্তিত্ব এখন নেই। রাজবাড়িটির যে সিংহদরজা ছিল তাও নিশ্চিহ্ন হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
      1
23242526272829
30      
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com