কোন ব্যক্তির মৃত্যু হলে সেই মৃত্যুর কারণ জানতে Autopsy বা পোষ্ট মর্টেম করা হয়ে থাকে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চিকিৎসক বা পুলিশের ভরসা এই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। কারণ অপরাধের ক্ষেত্রে হত্যার তদন্ত করার কাজেও কাজে আসে এই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। আসলে অন্ধকার বা অজানা তথ্য জানার জন্যই এটা করা হয়।
বাংলায় ‘পোস্টমর্টেম’কে বলা হয় ‘ময়না তদন্ত’। কিন্তু বাংলায় কেন ‘পোস্টমর্টেম’কে ‘ময়না তদন্ত’ বলে হয়তো অনেকেই জানেন না। স্বাভাবিক ভাবেই মনে প্রশ্ন আসতে পারে পোস্টমর্টেমের ‘ময়না তদন্ত’ নাম কেন! তা হলে কি এর সঙ্গে ময়না পাখির কোনও মিল আছে?
কিন্তু প্রকৃত অর্থেই এই ময়না পাখির সঙ্গে পোস্টমর্টেমের সম্পর্ক বেশ গভীর। আসলে ময়না পাখি দেখতে মিশমিশে কালো হয়ে থাকে। যদিও এর ঠোঁট হলুদ। এই পাখি প্রায় ৩ হতে ১৩ রকম ভাবে ডাকতে পারে। অন্ধকারে ময়না পাখিকে দেখা দুষ্কর। অন্ধকারের কালোয় নিজেকে লুকিয়ে রাখে ময়না পাখি। কেবলমাত্র অভিজ্ঞ মানুষ তার ডাক শুনে বুঝতে পারেন, এটা ময়না পাখির ডাক। অন্ধকারে না দেখা ময়না পাখিকে যেমন অন্ধকারে শুধু কণ্ঠস্বর শুনেই আবিষ্কার করা যায়, ঠিক তেমনি পোস্টমর্টেমেও অজানা কারণ বা অন্ধকারে থাকা কারণকে সামান্য সূত্র দিয়ে আবিষ্কার করা হয়ে থাকে……..
তবে এর চেয়েও যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা হচ্ছে….
উর্দু শব্দ MOAINA (معائنہ) যার অর্থ হচ্ছে ইংরেজিতে INSPECTION আর বাংলায় ‘নিরীক্ষা’, যা পরবর্তীতে বিবর্তিত হয়ে বাংলায় “ময়না তদন্ত” হিসেবে উচ্চারিত হয়ে আসছে! অর্থাৎ নিখুঁত নিরীক্ষার মাধ্যমে সামান্য সূত্র হতে শেষ পর্যন্ত আবিষ্কার হয় বড় কোনো অজানা রহস্যের, খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় প্রকৃত অপরাধী
সে কারণে পোস্ট মর্টেমের বাংলা করা হয়েছে ময়না তদন্ত…
লেখকঃ রাজশাহী পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক জনাব হাসান হাফিজুর রহমান ।