নির্বাচনকালে প্রার্থীকে শ্রেষ্ঠ করে তোলাই নেতা এবং কর্মিদের কাজ। পছন্দের নেতাকে তার সর্বগুণের ঝাঁঝালো বক্তব্যে, তার উন্নয়ন কর্মকান্ডের বিশেষ বিশেষ দক্ষতায় গুণের শীর্ষে পৌঁছে দেয়াই খেয়ে না খেয়ে কাজ করা কর্মিদের কাজ। এসব গুণ থাকাও চাট্টিখানি কথা নয়।প্রার্থীকে আষ্টেপৃষ্টে ধরে রাখা ভালোবাসার কর্মিরা,একচেটিয়া অনুগত,দলপ্রিয়, প্রতীক প্রিয় কর্মিরা কিছু কৌশলগত একটি অস্পষ্ট নির্দেশনার জন্য সারাজীবন পথেই পড়ে থাকে।
পড়ে থাকে ঝুঁকিতে চক্ষুশূল হয়ে। এর মানে এটা নয় যে কর্মিগণ বোকা বা রাজনীতি বোঝেনা।
আসলে তারা দলের প্রাণ ও দলের জন্য অত্যন্ত আস্থাভাজন।
অনেক সময় গনতন্ত্র ও ভাষিক শিষ্ঠাচারের দোহাই দিয়ে নির্বাচনকালীন সময়ে প্রর্থীরা, পক্ষের বা প্রতিপক্ষকে অপদস্থ করতে অপ্রোয়োজনীয়, অপ্রাসঙ্গিক, আনুমানিক, অভদ্র,রুচিহীন, অশোভন ভাষণ, অশালীন ব্যবহার,চারিত্রিক বিপর্যয় ঘটিয়ে ধ্বংসাত্মক বা বানোয়াট গল্প তৈরী করে স্ব স্ব প্রার্থীকে অন্য প্রার্থী হতে আলোচনার সমালোচনার শীর্ষ অন্ধকার বা আলোকিত অবস্থান তৈরি করে।
কেউ বা দলীয় আনুগত্য দেখিয়ে ভাইরাল হবার সুযোগ নিতে, মাঠে না গিয়ে ঘরে বসে টকশো লাইভে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে অতি উৎসাহী হয়ে ভুল তথ্য দিয়ে দেশ, দল, সরকার ও জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে।
ফলে নিজেদের যৌক্তিকতা হারানোর ফলে দোষ দায় ফেলে এই বোলে যে সরকার গুরুত্বহীন ।
আর অমুক তমুক করে দিবো বোলেও বালাখল্য বিবৃতি দেন যে প্রার্থীরা তারা বেশির ভাগই ভুল প্রমাণিত হয় তাদের মুখের কথার বা ওয়াদার কোনো প্রতিবেদন প্রমাণ রাখা হয়না বোলেই। যে জন্য কার্যকরীতাও পরিলক্ষিত হয়না। এতে করে রাজনীতিক শীর্ষস্থানীয় এবং তৃণ ব্যক্তিত্বরাও গুরুত্ব হারায়।
নেতাদের পারস্পরিক ক্রন্দল, অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যে কর্মি ও নাগরিকদের প্রতি কতোটা প্রভাব পড়ে তা বলতে গেলে বলতে হয়, নির্বাচন চলাকালীন সময় বা পাশের পর নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে গুরুত্বপূর্ণ সভা সমাবেশেও বক্তব্যের মধ্যে নারী,ক্রীড়া,প্রসাধনী টেনে বা নাম বিকৃত করে সম্মানহীন সম্বোধনে রুঢ়তায় হেঁকে নাপাকী প্রাণীর বাচ্চার বা অমইক্যা,তমইক্যা ব্যঙ্গ করা আদৌ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নয়। সে প্রার্থী কর্মি নেতা কেউই বঙ্গবন্ধু আদর্শিত নেতা নয়।
চরম বিপদে জনগনের দুঃখের সময়ে সহমর্মি হয়ে সত্যিকে শিকার করবে,চেষ্টা, ভরসা দিয়ে সমাধান করাতো দূরের কথা বরং বৈস্যিক মহামারীর চাইতেও মারাত্মক বোলে, চুবানোর প্রসঙ্গ তুলে, এই বেয়াদব চুপ,ফেবিকল আঠা লাগায়ে গদিতে বসেছে বোলে, অতীত বাপ দাদার গুষ্ঠি উদ্ধারে অহংকার বা খিতাবি গেয়ে নিজেদের ফুটানি জাহির করতে থাকা প্রার্থীর কর্মি মিলনেও এই সমস্ত রুচিহীন ভাষা, গায়ের জোর, সংগঠন শক্তি, টাকার কেরামতি দেখিয়ে প্রার্থীরা বা কিছু হেব্বি নেতারা দেশ,সরকার, জনতা ও দলকে হাস্যকর তথা সম্মানহানীকর পরিস্থিতিতে ফেলে।
আর এই সব অসংযমী বাক- বচনেই রাষ্ট্র পরিচালক ও দল গুরুত্বহীন হয়ে মহা সংকটে পতিত হয়।
আমাদের বঙ্গবন্ধু বাক সংযমী ছিলেন। তিঁনি সব সময় ছোট বড় সবাইকে আপনি বোলেই সম্বোধন করতেন। তিনি ভাষণে প্রমাণ করেছেন এই বক্তব্যে যে,’তিনি আমার কথা রাখলেন না।’ তিঁনি রাখলেন ভুট্টু সাহেবের কথা। আরো বোলেছেন,’আসুন বসুন বিচার করুন।’
দেশ পরাধীন অবস্থায়ও সব সময় বঙ্গবন্ধু স্পষ্টত বলতেন এবং চাঁছাছোলা স্পষ্ট নির্দেশ দিতেন।
তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে শীর্ষ নেতাদেরও উচিত স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া।
বতর্মান প্রেক্ষাপট হতে বলতেই হয়, ডামি বা বিদ্রোহী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নির্বাচনী কলা কৌশল অবলম্বন না করে পরিষ্কার নির্দেশ দেয়াই সমুচিত। কেননা আর যাই হোক প্রার্থীর জোটের শরীকরা অন্তত চক্ষুশূল হতে রেহাই পাবে।
খুলে বললে বলতে হয়, নির্বাচনকালে দলীয় সিনিয়র অনকেই মনোনয়নে মনোনীত। আবার কেউ বা মনোনয়ন না পেয়েও নেতাদের ডামি নামে অভিহিত আর মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিদ্রোহী হলেও ভোটে নির্বাচিত হয়েই আসতে হবে জনপ্রিয়তা নিয়ে এই নির্দেশনা। তবে কর্মিদের অবস্থা কি?
একটু গভীরের লক্ষ্য করলে বুঝা যায় ওসব কারণেও কর্মিরা সম্মানের রাজনীতিতে গুরুত্ব হারায় কারণ হলো সবাই দলের একনিষ্ঠ কর্মি। প্রতীকি চিহ্ন বহনকারীর জোটের কর্মিদের জনপ্রিয় নেতাকে ইচ্ছে থাকলেও প্রতীকের সম্মানে বা পরবর্তীকালে দলচ্যুত হবার বাঁধা থাকায় প্রিয় প্রার্থী হলেও কাজ করতে ব্যর্থ ।
অপরদিকে একই কর্মির প্রতি স্নেহ ভালোবাসা থাকলেও স্পষ্টত নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে স্বতন্ত্রের লোক দলীয় প্রিয় প্রার্থী হলেও দলের বিপরীতে আসল কর্মিরা কাজ করতে পারেনা।
আবার কিছু নেতা স্বতন্ত্র /বিদ্রোহী হবার কারণে পক্ষ বিপক্ষের ভোট পেয়ে প্রতীকের সম্মান না পেয়েও ভোটে বিজয়লাভ করে। দলীয় হলেও প্রতীকের জোটের কর্মিগুলোর হাত পা প্রতীক সম্মানের কাছে বাধা থাকে তাই যারা স্বতন্ত্রতে জীতে ওদের কাছে সেই কর্মিদের হতে হয় কোনঠাসা।তাই কর্মিগণ যেহেতু দল,দেশ,এবং সরকারের প্রাণ সেহেতু শীর্ষ নির্দেশনা স্পষ্টত হওয়া অত্যাবশ্যক।
নির্দেশনায় কৌশলগত গোপনীয়তা বা কৌশল না রেখে সরাসরি নির্দেশনাটাও জনতার মনে বিশ্বস্ততা ও আস্থার জায়গা করতে সক্ষম।কর্মিদের বেকায়দায় ফেলে জাতীর গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংকট কালের সংকট তৈরী না করে,কর্মি জীবনের নিরাপত্তায়, বাস্তবিক সংকটের মুক্তিতে একটি মাত্র স্পষ্টত নির্দেশনাই জাতীর নির্বাচনী সংকটময় মুহুর্তে অত্যন্ত জরুরি।