শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বাইরে কম আসায় নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমতে শুরু করেছে।
সোমবার (১২ জানুয়ারি) সকাল থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
শীত বাড়ায় বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পুরনো কাপড়ের দোকানে বেশ ভিড় বেড়েছে।
এছাড়া শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরার বেশ কিছু এলাকায় পুরনো কাপড়, কাগজ ও গাছের ডালপালা পুড়িয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় নিম্নআয়ের মানুষদের।
শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেট এলাকার বাদাম বিক্রেতা রবিউল ইসলাম পত্রদূতকে বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার বেচাকেনা খারাপ যাচ্ছে। অন্য সময় আমার বিক্রি হতো আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। শীতের রাতে বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা।
পাকাপোল মোড় এলাকার পিঠা বিক্রেতা রেজাউল করিম বলেন, শীতকাল আসায় আমার পিঠার দোকানে বেচাকেনা বেড়েছে। কিন্তু শীত হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় পিঠা বিক্রি কমতে শুরু করেছে। শীতের তীব্রতা বেশি থাকায় মানুষ ঘর থেকে বাইরে কম আসছে। এ কারণেই পিঠা বিক্রি কম হচ্ছে। দুইদিন আগেও পিঠা বিক্রি করেছি এক বাজার থেকে ১৫’শ টাকার। শুক্রবার রাতে পিঠা বিক্রি করেছে সাড়ে ৪’শ টাকার। শীত বাড়তে থাকলে বিক্রি আরও কমে যাবে।
শহরের কাটিয়া এলাকায় শুক্রবার শীতের সকালে কাজ করছিলেন রাজমিস্ত্রি আবুল কাদের। একটি দোকানে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। কথা হলে তিনি বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। আমাদের শীত, বৃষ্টি, রোদ বলে কিছু নেই। যখন কাজ থাকে তখনই কাজ করতে হয়। অনেক সময় টানা চার-পাঁচ দিন মিস্ত্রির কাজ পাই না, তখন বসে থাকতে হয়।
তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজমিস্ত্রির কাজ করে ৭০০ টাকা মজুরি পাই। এ টাকা দিয়ে আমি নিজে চলি ও গ্রামের বাড়ি শ্যামনগর বউ-বাচ্চার জন্য টাকা পাঠাই। যখন কাজ পাই না তখন জমানো টাকা ও মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চলতে হয়।
ফুড অফিস মোড় এলাকার চা দোকানদার রবিউল ইসলাম বলেন, শীত বেড়ে যাওয়ার আমার চায়ের দোকানে বেচাকেনা কমতে শুরু করেছে। গত দুইদিন ধরে আমার বেচাকেনা খুবই কমে গেছে। মানুষজন ঘর থেকে বাইরে আসতে চাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন দোকানে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার বেচাকেনা করতাম। সেই বেচাকেনার প্রায় ৪৫ শতাংশ কমে এসেছে। এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।