সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, সরকার জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কোন ভেদাভেদ নয় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘জাতীয় সমাজ সেবা দিবস’ ২০২৫ উদযাপনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘নেই পাশে কেউ যার, সমাজ সেবা আছে তার’ শপথ নিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা কাজ করতে চাই।
তিনি আজ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংলগ্ন দক্ষিণ প্লাজায় মানিক মিয়া এভিনিউতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজ সেবা অধিদপ্তর আয়োজিত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুত’ জাতীয় সমাজসেবা দিবস’ ২০২৫ উদযাপনের অংশ হিসেবে দুই প্রজন্মের লড়াকু নবীন- প্রবীণের সমন্বয়ে প্রথম পর্বে ওয়াকাথন শেষে দ্বিতীয় পর্বে কল্যাণ রাষ্ট্র বিষয়ে মুক্ত আড্ডায় তিনি একথা বলেন।
জাতীয় সমাজসেবা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের প্রথম অংশে বেলুন উড়িয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে ওয়াকথনের শুভ সূচনা করেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দ্বিতীয় পর্বে মুক্ত আড্ডা অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ মধ্যমণি হিসেবে বক্তৃতা করেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার) ডক্টর মোঃ আমিনুল ইসলাম । আড্ডা অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তৃতা করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান খান, সমাপনী করেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ মহিউদ্দিন। এছাড়া আড্ডা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, কথা বলো নারী প্ল্যাটফর্মের পক্ষে জুলাই কন্যারা, শিক্ষার্থী, মানবাধিকার কর্মী ,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীবৃন্দ, এনজিওর প্রতিনিধিবৃন্দ বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা সেবা পেতে সহায়তা, শিশু ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে করনীয় বিভিন্ন বিষয়ে বাঁধাগুলো দূরীকরণ এবং কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
উপদেষ্টা বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেশের দুস্থ, অসহায়, অনগ্রসর, প্রান্তিক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা, প্রবীণ, প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়ন এবং সমাজের অনগ্রসর অংশকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের সদর কার্যালয়সহ জেলা ও উপজেলা মিলিয়ে মোট ১,০৩৬ টি কার্যালয় রয়েছে। এ অধিদপ্তর সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ৫৪টি কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের অনগ্রসর, বঞ্চিত, দরিদ্র ও সমস্যাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কল্যাণসাধন, সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান ও ক্ষমতায়নের কাজ করে যাচ্ছে। সুসংহত এসব সামাজিক সেবা প্রদানের ফলে দেশের জনগণের জীবনমান উন্নত হচ্ছে।
সরকার জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
আমি বিশ্বাস করি, জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৫ উদযাপনের মাধ্যমে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও উৎসাহী ব্যক্তিগণ জনকল্যাণমুখী কাজে উজ্জীবিত হবে।
জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করছি এবং দিবসটি উদ্যাপনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
পরে তিনি ওয়াকাথনে অংশগ্রহণকারী বিজয়দের মধ্যে সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ করেন।