বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কর্তৃক মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে ৩০০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে অভিযান জোরদার করা হবে দুর্নীতি-চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস নির্মূলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের মতবিনিময় সভা  বড়লেখায় ফসলি জমির মাটি কাটার দায়ে ১ লাখ ৮০ হাজার জরিমানা। আগামী মাসে প্রতিষ্ঠিত হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর : উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডকে অধিদপ্তরে রুপান্তর করা হবে।” – উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বেলাবোতে পূবালী ব্যাংক শাখার দ্বার উদঘাটন  এসেনশিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানী লিমিটেডকে ঢেলে সাজাতে হবে- স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। আইনের বাইরে কোন কাজ করা যাবে না।। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সমকালীন রাজনীতির মরণফাঁদ !

সমকালীন রাজনীতির মরণফাঁদ !

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১.৩৭ এএম
  • ৪ বার পঠিত

 

রাজনীতি এখন কার হাতে! একদল বলছে, জালেমদের হাতে। অন্য দলের অভিযোগ মোনাফেকের দল সবকিছু শেষ করে দিচ্ছে। এসব অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পাশাপাশি ইদানীংকালে ক্ষুর পার্টি, রগকাটা দল, চাঁদাবাজ-দখলদার ইত্যাদি শব্দমালার সঙ্গে আন্ডাবাচ্চার দলের রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অনেকেই রাজনীতিকে নিচে নামাতে নামাতে অন্ধকারের গহিন অতলান্তের এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যেখান থেকে আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনের হিমালয়সম অভিযোগের খতিয়ান স্মরণ করা সত্যিই কষ্টকর বিষয়। উল্টো যেসব কথা শোনা যাচ্ছে তা হলো যেই লাউ, সেই কদু। আগেই ভালো ছিলাম, দেশটা কি তালেবান হয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি-ইত্যাদি-আরও কত কী।

আজকের নিবন্ধে আমি সমসাময়িক অভিযোগ বা পাল্টা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করব না। অর্থাৎ সাবেক জমানার চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট এখন কাদের দখলে! পরিবহন খাতে বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি, ব্যাংক দখল, টিভি স্টেশন দখল, লুটপাট, গরু চুরি, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সাম্রাজ্য দখল, মামলা-হামলা, ভিটেমাটি উচ্ছেদ নিয়ে কিছুই বলব না। অথবা বিশ বছর ধরে যারা গর্তে ছিল এবং প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করত তারা- হঠাৎ আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করার পর কীভাবে নাফরমানি-মোনাফেকি এবং খোদাদ্রোহীর মতো পাপাচারে লিপ্ত হয়ে পড়েছে তা নিয়েও কিছু বলব না। তার চেয়ে হাল আমলে যেসব শব্দ রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, সেগুলোর মধ্যে মোনাফেক ও জালেম নিয়ে কিঞ্চিৎ আলোচনা করে শিরোনাম প্রসঙ্গে চলে যাব।

আলোচনার শুরুতেই জালেম নিয়ে কিছু বলা যাক। জালেমির সঙ্গে জাহেল এবং জাহেলিয়াতের নিদারুণ একটি সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ জাহেল না হলে জুলুম সম্ভব নয়। আবার জাহেলিয়াত না হলে জুলুম বা জাহেল অকার্যকর। জুলুম শব্দটি বাংলায় অতিপরিচিত শব্দ। কিন্তু জাহেল এবং জাহেলিয়াত আমাদের দেশের শব্দ নয়। এটি আরব দেশের শব্দ। আইয়ামে জাহেলিয়াত বলতে জাজিরাতুল আরবের নজদ হেজাজ, বিলাদ আশশাম, বালাদে রুম, ইয়েমেনের হাজরামৌত থেকে হাইলের বিস্তীর্ণ মরুময় অঞ্চলে যে অন্ধকারময় যুগ প্রায় একশত বছর ধরে মানুষের জীবন পশুর চেয়েও অনিরাপদ, ঘৃণিত, ঝুঁকিপূর্ণ, নির্মম-নিষ্ঠুর বিচারহীন এবং বিবেকহীন জাহান্নামে পরিণত করেছিল- সেই সময়টিকেই বোঝানো হয়।

আরবিতে আইয়াম শব্দের অর্থ যুগ বা সময় আর জাহেলিয়াতের অর্থ হলো অন্ধকারময় বা অন্ধকারাচ্ছন্ন। আল্লাহর রসুল (সা.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তি কিংবা মদিনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্ববর্তী একশত বছরকে যেমন আইয়ামে জাহেলিয়াত বলা হয় তদ্রƒপ প্রায় সমসাময়িককালে বাংলাতেও আইয়ামে জাহেলিয়াত কাল ছিল ১০০ বছর ধরে। সম্রাট শশাংকের মৃত্যুর পর এই বাংলায় টানা ১০০ বছর ধরে যা চলছিল তা ইতিহাসে মাৎস্যন্যায় বলে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। ইতিহাসের আইয়ামে জাহেলিয়াত বা মাৎস্যন্যায় যা-ই বলুন না কেন উভয় ক্ষেত্রে মানুষের মনমস্তিষ্ক সর্বদা ভয়, আতঙ্ক, সন্দেহ ও অবিশ্বাসে পূর্ণ থাকি। পছন্দ না হলে মেরে ফেলা, বড় বড় মানুষকে অপদস্থ করার জন্য বন্যপশু, প্রশিক্ষিত হিংস্র পশু অথবা ভাড়া করা পশু প্রবৃত্তির লোকজনকে লেলিয়ে দেওয়ার কাজ যখন ভালভাতের মতো হয়ে যায় তখন সেটাকে আইয়ামে জাহেলিয়াত বলা যায়।

জাহেলিয়াতের যুগেই জাহেলরা বাস করে। এরাই হিটলার এরাই আবু লাহাব কিংবা আবু জেহেল। বিচারবিবেচনাহীন মনমস্তিষ্ক, লোভলালসায় পূর্ণ চরিত্র-অভ্যাস, অত্যাচার খুনখারাবিতে সিদ্ধহস্ত অঙ্গপতঙ্গ, চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, পাপাচার, ভ্রষ্টাচার, অন্যের লোভনীয় ধনসম্পদ, স্ত্রী-কন্যা, পদপদবি ছিনিয়ে নেওয়ার দুর্বার ক্ষমতাধর লোকজনকেই জালেম বলা হয়। আর জাহেল অর্থাৎ মূর্খ-বোধহীন-বিবেকহীন না হলে জালেম হওয়া যায় না। আর যুগটি যদি আইয়ামে জাহেলিয়াত না হয় তবে সেখানে জালেম পয়দা হয় না, জালেমের প্রজনন হয় না এবং জালেমরা টিকে থাকতে পারে না। সুতরাং যারা প্রতিপক্ষকে জালেম বলে গালি দিচ্ছেন তারা আসলে কী বোঝাতে চাচ্ছেন তা বোধ করি সম্মানিত পাঠক এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন।

হাল আমলে যারা জালেম বলে প্রতিপক্ষের রাজনীতির মতাদর্শের লোকজনকে গালি দিয়েছেন- সেই জবাবে কথিত জালেমরা পাল্টা গালি দিয়ে বলছেন ওরা মোনাফেক। এখন প্রশ্ন হলো, মোনাফেক কী এবং কারা। ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশ্লেষণ করলে আপনি কি জালেমদের নিকৃষ্ট লোক মনে করবেন নাকি মোনাফেকদের। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার উচিত মোনাফেক শব্দের প্রকৃত ব্যাখ্যা জেনে নেওয়া। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান অনুযায়ী মোনাফেক সম্পর্কে আমি যা বুঝি তা আপনাদের সদয় অবগতির জন্য নিম্নে পেশ করলাম।

মোনাফেকের কোনো বাংলা প্রতিশব্দ নেই। ইংরেজিতেও নেই বরং কোরআন নাজিল হওয়ার আগে শব্দটি আরব দেশে ছিল কি না, তা নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। মোনাফেকের দুটি নিকৃষ্ট উদাহরণ হলো আবদুল্লাহ বিন উবাই এবং ভণ্ড নবী মুসায়লামা তুল কাজ্জাব। ইসলামের ঘোরতর দুশমন যথা সায়বা-উতবা, আবু লাহাব, আবু জেহেলের মতো কাফিরকেও মোনাফেক বলে গালি দেওয়া হয়নি। আবার ইবলিশ শয়তান-দাজ্জাল-ইয়াজুজ, মাজুস অথবা আদিকালের ফেরাউন হামান-কারুন প্রমুখকেও মোনাফেক বলা হয়নি। সুতরাং মোনাফেক হলো এমন এক ভয়ংকর শব্দ যা কাফের মুসরিক-শয়তান-ভয়ংকর পশু-কীটপতঙ্ক কিংবা মরণঘাতী রোগবালাইয়ের অনুঘটক ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য নয়, তাহলে মোনাফেক কী?

মোনাফেক হলো এমন এক নিকৃষ্ট প্রাণী, যারা সুরতে মানুষ এবং নিজেদের প্রয়োজনে কিংবা স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা যে কোনো সুরত ধরতে পারে। শয়তানও সুরত পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু শয়তানের সঙ্গে মোনাফেকের পার্থক্য হলো, শয়তান আল্লাহকে মান্য করে, ভয় করে এবং নিজের সীমা অতিক্রমের চেষ্টা করে না। শয়তান শুধু একবারই আল্লাহর অবাধ্য হয়েছিল এবং একবারই আল্লাহ কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল। অন্যদিকে মোনাফেক সুযোগ পেলেই আল্লাহর অবাধ্য হয়, প্রতিমুহূর্তে অকৃতজ্ঞের মতো চিন্তা করে এবং নিজেদের হালত পরিবর্তন করে। মোনাফেকরা নবী রসুল আল্লাহ খোদা-ফেরেশতা হাশর-নসর কিছুই বিশ্বাস করে না। কিন্তু প্রয়োজনের সময় এমন ভনিতা করে যে তাদের মতো পীর, আউলিয়া, দরবেশ, ফকির, সাধুসন্ন্যাসী দুনিয়াতে দ্বিতীয়টি নেই।

আজকের নিবন্ধে জালেম এবং মোনাফেক নিয়ে আর বিস্তারিত আলোচনা করব না। যারা এসব গালিগালাজ করছেন তারা ওসব কেন করছেন তা কেবল তারাই ভালো বলতে পারবেন। সুতরাং ওসব বিষয়ে সময় ব্যয় না করে আমরা এখন শিরোনাম প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করি। এ কথা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই যে বর্তমানে আমরা সবাই ইতিহাসের জটিলতম সময় পার করছি। বিশেষত যারা রাজনীতি করেন, তারা সবাই সময়ের মরণফাঁদের কবলে পড়েছেন। ফলে আজকের দিনে কেউ বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন না যে আমি ভালো আছি, নিরাপদ আছি এবং আজকের দিনটির পরিবর্তে আগামীকাল আরও ভালো যাবে। বরং প্রতিটি মানুষ যার যার অবস্থানে ততটা অসন্তুষ্ট এবং কাজকর্ম-কথাবার্তা এবং আচরণে এতটা অধৈর্যশীলতা-অস্থিরতা এবং চারিত্রিক দুর্বলতা প্রকাশ করে চলেছেন যা আমার জীবদ্দশায় ইতোপূর্বে দেখিনি।

বর্তমান সময়ের রাজনীতির যে মরণফাঁদ তৈরি হয়েছে তা কেবল রাজনীতিবিদদের মরণঝুঁকি বাড়ায়নি বরং রাষ্ট্রীয় কর্মে নিযুক্ত সব গুরুত্বপূর্ণ আমলা-কামলা-বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক-সাধু-সজ্জন প্রমুখের জীবন ও জীবিকাকে মরণফাঁদের মধ্যে আটকে ফেলেছে। ফলে পুরো দেশ-কাল-মিত্র-উজির-নাজির-মন্ত্রী-কোতোয়ালকে হাতকড়া, ফাঁসির ফাঁদ, কবর বা শশ্মানের আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে আর এসব কিছু ঘটেছে রাজনীতির মোনাফেক এবং রাজনীতির জালেমদের কারণে।

মোনাফেক ও জালেমরা প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার জন্য সর্বোচ্চ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। গোলাবারুদ, লাঠি-গুলি, খন্তা-কোদাল-কুড়াল-চাপাতি-দা-বঁটি, ক্ষুর-কেঁচি, লগি-বৈঠা ইত্যাদি যখন যেভাবে প্রয়োজন এবং যেখানে প্রয়োজন তা ব্যবহার করেছে। তারা প্রতিপক্ষের চরিত্রহনন- মনোবল ভেঙে দেওয়া অথবা আর্থিক ভিত্তি ভেঙেচুরে চুরমার করে দেওয়ার জন্য কুকুরের চেয়ে নিকৃষ্ট, হায়েনার চেয়েও ভয়ংকর, শেয়ালের চেয়েও ধূর্ত, শুয়োরের চেয়েও পূতিদুর্গন্ধময় এবং জারজের চেয়েও ভয়ংকর মানসিক বৈকল্যে আক্রান্ত লোকজনকে অর্থ-পদপদবির বিনিময়ে লেলিয়ে দিয়েছে। তারা নিজেদের দল ভারী করার জন্য অর্থাৎ বেশি বেশি মোনাফেক তৈরির জন্য আল্লাহ এবং রসুল বিতর্কিত হন এবং আল্লাহর সৃষ্টিকুলের ভারসাম্য বিনষ্ট হয় তার জন্য সর্বোচ্চ অর্থ-শ্রম ও বুদ্ধি বিনিয়োগ করেছেন। অন্যদিকে জাহেলরা পুরো যুগকে আইয়ামে জাহেলিয়াত বানানোর জন্য জ্ঞানবিজ্ঞান, সততা, ন্যায়নিষ্ঠতা মানবিক গুণাবলি ইত্যাদির কবর রচনা করে রাতকে বানিয়ে ফেলেছে হজরত ইউনূস (আ.)-কে গিলে ফেলা মাছের পেটের বীভৎস অন্ধকারের মতো। আর দিনকে বানিয়েছে কালবেশাখীর কবলে পড়া অমাবস্যার রজনীর মতো।

উল্লেখিত অবস্থার কারণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অর্থনীতি, সমাজনীতি, পরিবার, ঘরসংসার, ব্যবসাবাণিজ্য, চিন্তাচেতনা, আহারবিহার, বিনোদন ইত্যাদি এসব কিছুই বিকৃত হয়ে পড়েছে এবং সর্বত্র প্রাকৃতিক আলো নিভে গেছে এবং মোনাফেকি ও জালেমের মশাল দিয়ে আগুনের হোলিখেলা শুরু হয়েছে। আর এই হোলিখেলার সবচেয়ে ভয়ংকর অধিক্ষেত্রটি যে রাজনীতি তা বোধ করি আমরা সবাই কমবেশি অনুধাবন করি।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com