শামীমা রহমান,ইবি প্রতিনিধি।।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইফফাত আরার বিরুদ্ধে ক্লাস নেওয়ায় স্বেচ্ছাচারিতা, ইন্টারনাল মার্কস টেম্পারিং এবং পরীক্ষার হলে ও ভাইভা বোর্ডে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন বিভাগের ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের একাংশ। প্রশাসন জবাব চাইলে আমি যথাযথভাবে জবাব দিতে প্রস্তুত বলে জানান অভিযুক্ত শিক্ষিকা।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, “সহকারী অধ্যাপক ইফফাত আরা গত কয়েক বছরে কোনো ব্যাচের অ্যাসাইনমেন্ট ও কোর্স সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেননি। তিনি নিয়মিত ক্লাস নেন না, দীর্ঘ ১১ মাস ছুটিতে ছিলেন, সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেননি এবং ফিল্ডওয়ার্কে অংশ নেননি। এছাড়া, ইনকোর্স পরীক্ষা ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমতো ইন্টারনাল মার্কস প্রদান করেছেন।”
অভিযোগে আরও বলা হয়, “পরীক্ষার হলে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং ভাইভা বোর্ডে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেন। নবাগত ব্যাচের ক্ষেত্রে তিনি নিয়মিত কোর্স কন্টেন্ট না পড়িয়ে ভূগোলবিষয়ক সাধারণ আলোচনা করে সময় নষ্ট করেন। পরীক্ষার হলে কোনো কোনো শিক্ষার্থীর খাতা কেড়ে নিয়ে ৪০ মিনিট আটকে রাখেন এবং খাতা চাইতে গেলে দুর্ব্যবহার করেন।”
অভিযোগপত্রে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, “তিনি পরীক্ষার হলে খাতা কেড়ে নিয়ে বলেন, ‘আমার চোখের সামনে থেকে সরে যা।’ এমন দাম্ভিক আচরণ এবং মানসিক নির্যাতনের কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন এবং তাদের একাডেমিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।”
অভিযোগের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ইফফাত আরা বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা প্রতিটি অভিযোগই মিথ্যা এবং প্রতিহিংসামূলক। বলা হচ্ছে, আমি ইনকোর্স পরীক্ষা ছাড়াই নাম্বার দিয়েছি, কিন্তু আমাদের নিয়মেই উল্লেখ রয়েছে যে টিউটোরিয়াল, প্রেজেন্টেশন বা অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে ইন্টারনাল নাম্বার দেওয়া যায়। আমি ইনকোর্স না নিলেও প্রতিটি কোর্সে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়েছি এবং সেই ভিত্তিতে নাম্বার দিয়েছি।”
সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, “সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়। সাবেক সভাপতি সজল স্যারের সময় ঝামেলাসহ সব বিষয়গুলো দেখে মনে হয়েছে দায়িত্ব না নেওয়াই ভালো। তাই আমি দায়িত্ব গ্রহণ করিনি।”
পরীক্ষার হলে খাতা নিয়ে ৪০ মিনিট আটকে রাখার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “পরীক্ষার হলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কেউ যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, তাহলে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমাকে ব্যবস্থা নিতে হয়। যে শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, তিনি বারবার অন্যের খাতা দেখছিলেন। তাই আমি দায়িত্ব পালন করেছি।”
ভাইভা বোর্ডে দুর্ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, “ভাইভা বোর্ডে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারার দায় শিক্ষার্থীর। একসঙ্গে চারটি ব্যাচের সঙ্গে আমি দুর্ব্যবহার করেছি, এটি বাস্তবসম্মত নয়। প্রশাসন আমার কাছে জবাব চাইলে আমি যথাযথভাবে জবাব দেব।”