রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
ববিতে বরিশাল ইউনিভার্সিটি রিসার্চ এন্ড হায়ার এডুকেশন সোসাইটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ইবিতে আবাসিক শিক্ষার্থীকে রুম থেকে বের করার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সেই বানরটার কথা মনে আছে? টিকটকার ও মডেল মহিমা চৌধুরীর অন্তরঙ্গ ভিডিও ফাঁস কালিগঞ্জে চৌমুহনী হাইস্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত আগে আন্দোলন ছিলো ডাল-ভাতের জন্য, এখন দাবি মাছ-মাংসের দাম কমানোর : রাঙ্গুনিয়ায় তথ্যমন্ত্রী পিতৃ-মাতৃ ছায়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অন্ধ হাফেজ মাদ্রাসায় ইফতার সামগ্রী বিতরণ। আজ থেকে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন শ্রী টি এস শিবজ্ঞানম।। মধ্যবিত্ত’র শুটিংয়ের প্রতিটি দিন আনন্দময় ছিল : শিশির কালিগঞ্জে উপজেলা আ’লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে
নড়াইলে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর।।মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন

নড়াইলে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর।।মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন

উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ নড়াইল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন সবুজ শ্যামল ছায়া-ঘেরা শান্তির নীড় মাটির ঘর। যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে মাটির ঘর গরীবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, কিন্তু কালের আর্বতে আজ হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘরগুলো। মাটির ঘরের কদর কমিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক বন্যা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই মাটির ঘর ঠান্ডা থাকায় এক সময় এটাকে গরীবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরও বলা হতো। এ ঘর গরমের সময় আরামদায়ক। তাই অনেক গ্রামেই বিত্তশালীদেরও দোতলা মাটির ঘরও ছিল।

এখনও অনেক গ্রামে রয়েছে অথচ জেলায় কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও কনকনে শীতে আদর্শ বসবাস-উপযোগী মাটির তৈরি এসব ঘর আগের মতো এখন আর তেমন একটা নজরে পড়ে না। শুধু মাটির বাড়িই নয়, ছিল ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরী গোলা ঘর ও কুঠি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,  জেলার বিভিন্ন এলাকায় এক সময় প্রতিটি ঘর ছিল মাটির তৈরি। কিন্ত আধুনিকতার স্পর্শে এখন মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। গ্রামীণ অর্থনীতির গতি সচল হওয়ায় মাটির ঘরের পরিবর্তে তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর। কয়েক বছর পর পর মাটির ঘর সংস্কারের ঝক্কি-ঝামেলা ও ব্যয়বহুল দিক পর্যবেক্ষণ করে মাটির ঘরের পরিবর্তে দালান-কোটা বানাতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এখানকার মানুষ। গৃহিনী নাজমা বেগম জানান, মাটির ঘর তৈরি করতে প্রথমে এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো। এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগতো দেড় থেকে দু’মাস। এক সময় আমাদের এলাকার প্রতিটা ঘর মাটি দিয়ে তৈরি করা হত। অনেকেই মাটি, বাঁশ, টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরি করত। তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি একটি মাটির বাড়ি শত বছরেও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে কালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আর বড় বড় অট্রালিকার কাছে হার মানছে মাটির বাড়ি ঘর। মাটির ঘরে দেয়ালে কাট বা বাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খর বা টিনের ছাউনি দেয়া হতো। মাটির বাড়ি ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। সব ঘর বড় মাপের হয়না। গৃহিনীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘ স্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহী হচ্ছেন। এদিকে সদরের আজিজুল হক এর বাড়িতে দেখা মিলেছে মাটির তৈরি ঘর, তার কাছে জানতে চাইলে, আধুনিক যুগেও কেন তার বাড়িতে কেনই মাটির তৈর ঘর রয়েছে। এত তিনি জানান, মাটির তৈরি এই বাড়ি ঘর তারা পেয়েছেন পৈত্রিক ভাবে। তাদের পূর্ব পুরুষরাও এই মাটির তৈরি বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে গেছেন। তাই এখনও তারা এই বাড়িগুলো ভাঙ্গেনি। তবে মাটির বাড়ি বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশ মানুষ মাটির বাড়ি ভেঙে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় দীর্ঘস্থায়ীভাবে অনেক লোকের নিবাস কল্পে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি-ঘর তৈরি করছেন বলে অনেকের ধারণা।

Print Friendly, PDF & Email

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

Comments are closed.




© All rights reserved © MKProtidin.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com