মো: হৃদয় হাসান ( উল্লাপাড়া)
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার অবস্থা দিন দিন উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। সময়মতো চিকিৎসকরা হাসপাতালে উপস্থিত না হওয়ায় অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। হাসপাতালের পরিবেশও রোগীদের জন্য অনুকূল নয়—মূল ফটকের সামনেই বর্জ্য পোড়ানো হচ্ছে, যার ধোঁয়ায় চারপাশে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অসুস্থতার ঝুঁকিতে পড়ছে।
এই ৫০ শয্যার হাসপাতালটি উল্লাপাড়ার প্রায় ছয় লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা। অথচ সেবা নিতে এসে ন্যূনতম সহযোগিতাও পাচ্ছেন না অনেকে।
২৫ এপ্রিল সকালে, আলিপুর গ্রামের সাইদার খাঁন নামের এক বৃদ্ধ রোগী ডায়রিয়া ও পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন ভর্তি হওয়ার জন্য। কিন্তু কর্তব্যরত ডাক্তার অনুপস্থিত থাকায় চিকিৎসা না পেয়ে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জে। তখন সেখানে ছিলেন শুধু মেডিকেল অফিসার অলিউল্লাহ রহমান ও একজন ওয়ার্ড বয়, যারা স্যালাইন দিয়ে রোগীকে বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
রোগীর মেয়ে চায়না খাতুন অভিযোগ করেন, সকাল ৮টায় হাসপাতালে এলেও কোনো চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা দেননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাবার অবস্থা খারাপ, তাও ঠিকমতো ডাক্তার পেলাম না।”
পরবর্তীতে ফোন পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ আরমান হোসেন প্রায় পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালে আসেন। তিনি জানান, “ডিউটি ৮টা থেকে শুরু হলেও শুক্রবার ৯টার মধ্যে পৌঁছানো যাবে—এমনটাই নাকি বলা হয়েছে।” তবে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের দাবি করেন, “আমি ডাক্তারদের এমন কোনো নির্দেশ দিইনি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বলেন, “আমরা বহুবার স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের দাবি জানিয়েছি। কিছুদিন আগে ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে হাসপাতাল ঘুরে দেখেছি। তবুও পরিবর্তন না হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও জানান, হাসপাতালের সামনে বর্জ্য পোড়ানো সম্পূর্ণ বেআইনি, এবং এ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের সার্বিক অনিয়ম রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল
উল্লাপাড়া হাসপাতালে অনিয়মের ভাটা পড়েছে চিকিৎসা সেবায়, সময়মতো মিলছে না ডাক্তার