বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
কালিগঞ্জে আছিয়া লুতফর প্রিপারেটরি স্কুলে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত সলেমান মামুন ব্যারিস্টার সুমন দুই দিনের রিমান্ডে ডিএমপির ৩৮তম পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা আলেমরাই এক দিন এদেশে নেতৃত্ব দেবেন।।ধর্ম উপদেষ্টা কে এই নতুন ডিএমপি কমিশনার? দৌলতপুরে বসতবাড়িতে ডাকাতির সময় মা-ছেলেকে হত্যার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ আজ সার্চ কমিটির বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার কথা জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় জরুরি। – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পাবনায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রিফিলের সময় বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের চালক নিহত, আহত একজন

খৈয়াম কাদেরঃ নব্বইয়ের চিত্তপ্লাবী নিরীক্ষার কবি- তৌফিক জহুর

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০২০, ৬.৩৬ এএম
  • ২৭২ বার পঠিত

 

ত্রিশের আধুনিক বাংলা কবিতার বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করলে আমরা উপলব্ধি করি বিদেশী অর্থাৎ ইংরেজি কবিতার ভাবাচ্ছন্ন প্যাটার্ন। কথাটা এজন্য বললাম, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর সূর্যের আলোর তেজে সেসময় সকল কবি প্রতিভার বিচ্ছুরণ সঠিক মাত্রায় হচ্ছিল না। একথা এজন্য বলছি, আধুনিক কবিতার প্রস্তুতি পর্ব লিখতে যেয়ে এই বিষয়টি ড. বাসন্তীকুমার মুখোপাধ্যায় লিখছেন এভাবে, ” সাধারণত কল্লোল কালিকলম উত্তরা প্রগতির যুগটিকেই আধুনিক কবিতার জন্মলগ্ন বলে ধরা হয়,যদিও আমরা জানি ইতিহাসেরও ইতিহাস আছে। কল্লোল কালিকলম উত্তরার আগে আছে মোহিতলাল যতীন্দ্রনাথ নজরুলের যুগ। কল্লোল যুগের লেখকরা এই তিন কাব্যরথীর প্রভাবেই রবীন্দ্রনাথ কে অস্বীকার করার সাহস পেয়েছিলেন।রবীন্দ্রনাথের পর প্রথম বিশিষ্ট কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। সে যুগে রবীন্দ্রনাথের চারিপাশে আর যে সকল কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ থেকে তাঁরা স্বতন্ত্র হতে পারেননি”। ( আধুনিক বাংলা কবিতার রূপরেখা, পৃষ্ঠা -৬৭)। এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ আধুনিকতার শুরু যে সময় টা ধরা হয় তার পরবর্তী ভাংচুর ও অস্বীকারের মূল প্রবণতা ত্রিশের দশক থেকে। ইংরেজি সাহিত্যের প্যাটার্ন আসতে থাকে এই সময় থেকে। রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় যাঁরা রবীন্দ্রনাথের পরও নতুন কথা নতুনভাবে বলা যায় একথা ভেবেছিলেন ও সে কথা আমাদের শোনাতে চেয়েছিলেন জীবনানন্দ দাশ তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করতে পারেন। তিনি ইংরেজি সাহিত্য পাঠ করা কবি। কবি অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বুদ্ধদেব বসু, জীবনানন্দ দাশ এই পঞ্চ পান্ডব ভদ্রলোকবৃন্দ ইংরেজি সাহিত্যের অলিগলি চষে বেড়িয়েছেন। দশকওয়ারী আলোচনা নয়, আমরা কথা বলবো নব্বই দশকের কবি খৈয়াম কাদেরের কবিতার বাগান নিয়ে, তাই আমরা সেদিকে যাবো। খৈয়াম কাদেরের কবিতার অলিগলিতে ত্রিশের আধুনিকতার ও পরবর্তী ধারার কবিতার প্যাটার্ন লক্ষ্য করি। এটাই আশা জাগানিয়া বিষয়। তাঁর কবিতা পাঠে আগ্রহ হই। তাঁর চিন্তা ও আবেগের জগতে প্রবেশে আমরা আশান্বিত হই। বিশ্ব সাহিত্যের আঙিনায় যাঁরা বিচরণ করে স্বজাতির জন্য মাতৃভাষায় সাহিত্য সৃষ্টির উল্লাসে মেতে ওঠেন তাদের হাত বেয়েই বেরিয়ে আসে অাধুনিকতম সাহিত্য। ত্রিশের আধুনিক কবিদের মতোই কবি খৈয়াম কাদের একজন ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। তাঁর কবিতার বিষয় ও প্রকরণ নিয়ে আমরা কিছু আলোচনা করবো।

০২.
রবীন্দ্র যুগে রবীন্দ্রনাথ ব্যতীত অন্য কবির পক্ষে নতুন ভাষা সৃষ্টি করা ছিলো সুকঠিন, তারও চেয়ে কঠিন ছিল নতুন ভাষা ও ভাবের জগতে পাঠক সাধারণকে সহজ বিশ্বাস নেবার অবসর দেয়া। জীবনানন্দ দাশ সেই কঠিন ব্রতই গ্রহণ করেছিলেন এবং সাফল্য অর্জন করেছিলেন, তাঁর সমসাময়িক ও অব্যবহিত পরবর্তী কবিদের উপর তাঁর রচনার প্রভাব। নব্বই দশকের সময়টা ছিলো এক উত্তাল সময় ডিঙানো পরবর্তী থিতু হওয়ার একটা নতুন প্লাটফর্ম, দেশে দেশে গণতন্ত্র নতুন থিয়োরিতে সেসময় হাজির। কবিতা কিংবা গল্প, উপন্যাসের পালেও লেগেছিল নতুন বৈকালিক হাওয়া। বাংলাদেশের সাহিত্য আঙিনায় নব্বই দশক নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ একসময়। জীবনানন্দের প্রবল উপস্থিতি এই দশকে দৃশ্যমান। সেই সময়ের প্রতিনিধি এবং কবিতার জমিতে চাষবাস করতে হাজির কবি খৈয়াম কাদের। ত্রিশোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতার গদ্য ফর্মে কবিতা চর্চার মহাবিস্ফোরণ নব্বইয়ে। খৈয়াম কাদেরও এই ঘরানার। তাঁর কবিতার মধ্যে একটা বিষয় দারুণ ভাবে লক্ষ্য করা যায়, তাহলো সচরাচর ব্যবহার হয়না এমন শব্দ অত্যন্ত দক্ষ হাতে তিনি বুনন করেন তাঁর কবিতায়। আমি, তুমি,সে এর বাহিরেও অসংখ্য শব্দ বাংলা কবিতার চারপাশে ঘুরঘুর করে, সেটা খৈয়াম কাদেরের কবিতা পাঠ করলে টের পাওয়া যায়। এই শব্দের বৃষ্টি নিয়ে আমরা কথা বলবো পরের অংশে।

খৈয়াম কাদেরের পারদ বিশ্বাস (১৯৯৯), লাঙলের খেয়া ভাঙ্গে জীবনের গতি (২০১১), ধারাপাত প্রেম (২০১৩), শেরোয়ানী মাঠ (২০১৭) কাব্যগ্রন্থগুলো পাঠ করলে নতুন শব্দের আনাগোনা দেখা যায়। খৈয়াম কাদের ছন্দ নিয়েও কাজ করেছেন। তাঁর কবিতায় ছন্দ আসে পরিকল্পিত পথে। কবি যেন জানেনই, পৃথিবীতে তাঁর কবিতার শরীর ছন্দে আবৃত। একটা জগৎ সৃষ্টির চেষ্টা করেন কবিতার মধ্যে। নিজের জগৎ। ছন্দ নিয়ে কবি লিখেছেন কবিতা।কিন্তু যেভাবে কবিতা তাঁর কলমের ডগায় এসেছে তিনি সেভাবেই নির্মাণ করেছেন তার কবিতার বাথান। ত্রিশের আধুনিক কবিতার ডালপালা যেভাবে বিস্তার লাভ করে কবিতার পাঠকদের মনে একটা বিশাল ঘোরের আবহ তৈরি করেছিলো।খৈয়াম কাদের সে পথেই হেঁটে যান নতুন নতুন শব্দের আদর নিয়েঃ

১. নারীর নিবাস জুড়ে অজস্র নক্ষত্র জাগে
যেনো রাতের আকাশ থেকে
প্রণয় বিলাসে কাঁদে জোছনার চোখ ( পারদ বিশ্বাস)

২.ইচ্ছার বিরুদ্ধে এই ইথারের বন চাষ করি
হায়েনার আসমান ধুয়ে তিয়াস লগনে আমি
হলাহল পান করি আগুনের ঘাম
ও বৃষ্টির জ্বালা। ( বিলেতের ঘাস)

৩. দেহাতি পাল্কির অপসৃয়ন যদি নশ্বর নামে ওড়ে
নিশির শিশিরে পোড়ে অস্তি- বাস্ত্তুর নৈঋক সেতু
তাহলে সৃষ্টির ভস্ম থেকে সহসা উত্থিত হয়
নতুন ফিনিক্স। মনুষ্য মনন যাকে লয় নামে জানে
চোখের আড়াল মানে নিত্যের বিনাশ, সে তো কেবলই
এক রূপের বদল,তাই শতদল ইথারের
সুরক্ষ জিম্মায় জাগে
জীবজ্য বিশ্বের বাণীর বিভাস।( বাণীর বিভাস)

তিনটি কবিতার ছোটো ছোটো উদ্ধৃতি দিলাম। কবিতাগুলোর মধ্যে নতুন নতুন শব্দের বৃষ্টি লক্ষ্যণীয়। নিরীক্ষার কবি খৈয়াম কাদের। শুধু প্রেমের বা ভালোবাসা নয় কবির কবিতার মধ্যে মৃত্যুচিন্তাও এসেছে অনেকবার। স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার মধ্যে মৃত্যু চিন্তা এঁকেছেন জীবনানন্দ দাশও তাঁর কবিতায় মৃত্যু এঁকেছেন। তিনিও মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন চিত্রকল্পময় কবিতা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেনঃ

“হৃদয় হৃদয় মোর সাধ কিরে যায় তোর
ঘুমাইতে ওই মৃত তারাটির পাশে
ওই আঁধার সাগরে
এই গভীর নিশীথে
ওই অতল আকাশে।”
( তারকার আত্মহত্যাঃ সন্ধ্যা সঙ্গীত)।

সেখানে জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন,

“হৃদয়ের অবিরল অন্ধকারের ভিতর সূর্যকে ডুবিয়ে ফেলে
আবার ঘুমাতে চেয়েছি আমি,
অন্ধকারের স্তনের ভিতর যোনির ভিতর অনন্ত মৃত্যুর মতো মিশে মিশে থাকতে চেয়েছি।”
(অন্ধকারঃ বনলতা সেন)।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও আধুনিক বাংলা কবিতার শ্রেষ্ঠ পুরুষ জীবনানন্দ দাশ এর মৃত্যু চিন্তা এমন। আরো আছে। আমি স্থানাভাবে দুটি কবিতার রেফারেন্স দিয়েছি।সেখানে ষাট বছর পর নব্বই দশকের কবি খৈয়াম কাদেরের মৃত্যু চিন্তা আমরা লক্ষ্য করি। সময় পাল্টেছে। এন্ড্রয়েড যুগে একজন কবির মৃত্যু চিন্তা কেমন। আধুনিক এ যুগে একজন কবির মৃত্যু চিন্তার প্যাটার্ন কেমন তা আমরা লক্ষ্য করিঃ

” চারখানা হাতল জড়ানো দেহদীর্ঘ এই
পালঙ্ক সুন্দর ওহে
তোমার আমার মাঝে
আর কতদূর পথ?
কোন লগ্নে তুমি
সোহাগের ডালা খুলে
কাছে ডেকে নেবে,
সহসা থামিয়ে দেবে
কাদায় নির্মিত এই
পবনের রথ?
…………………
আঁধারের আচ্ছন্ন সাজানো মাটির ঘরে
পোকামাকড়ের উদবাহু আহবান
লোবান মাখানো আচকান আর
বাঁশ -মৃত্তিকার ঘন সামিয়ানা ছুঁয়ে
সুরক্ষ দেয়াল উঠে যায়,
সরে যায় আলোর শকট
তার আদিকার আদ্য
অন্ধকারে। ”
( লোবান মাখানো আচকান)

০৩.

খৈয়াম কাদেরের কবিতার বিষয়ে আর একটি আলোচনা জরুরি। তিনি তাঁর সকল কবিতায় অগ্রজের ভাবনা, গদ্য ও পদ্যের ব্যবধান দূর করার মানসে সাধারণ মানুষের মুখের ভাষাকে কবিতায় স্থান দেননি। যে কথাটি উপরে আলোচনা শুরু করেছিলাম। তিনি সর্বদা এমন সব শব্দ প্রয়োগ করছেন, কবিতা পাঠে মনে হয় অপ্রচলিত, কিন্তু সমাজে বিদ্যমান আভিধানিক শব্দে তা উপস্থিত এজন্য সেই শব্দগুলোর প্রতি খৈয়াম কাদেরের আকর্ষণ বেশি। এদিক দিয়ে নব্বই দশকে তাঁর কবিতার শব্দচয়ন কে আমরা ব্যতিক্রমী বলতে পারি। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বলেছেন, ” মালার্মে প্রবর্তিত কাব্যাদর্শই আমার অন্বিষ্ট। আমিও মানি যে কবিতার মুখ্য উপাদান শব্দ “…( সংবর্ত এর মুখবন্ধ)। খৈয়াম কাদেরের কবিতার গভীরে প্রবেশ করলে আমরা লক্ষ্য করি শব্দ আর অর্থের হিসাব। শব্দের অন্তঃশীল আবেগ, সমাবেশ ও ধ্বনিবৈচিত্র এবং কোনো কোনো কবিতায় ছন্দের শোভনতা তাঁর কবিতার আকাশকে বাচনঅর্থে অতিক্রম করে নতুন যে ভূমন্ডলে বিচরণ করে তা ব্যঙ্গার্থের সৃষ্টি করে, তার জন্যই সেই কবিতা হয়ে ওঠে বিশিষ্ট শব্দের আদর। যার রেশ হৃদয়ে ছড়িয়ে যায় সেই কবিতা পাঠে।
আবার খৈয়াম কাদেরের কবিতায় প্রেম ভালোবাসার বিষয়টি এমনভাবে ব্যঞ্জনা তৈরি করে যা পাঠে আমরা সুক্ষ্ম কিন্তু বিরাট ব্যাপ্তির দিকে অগ্রসর হই। খৈয়ামের প্রেমের রস আস্বাদনে আমাদের মন ভরে ওঠে। যদিও রসের অনুভূতির জাত আলাদা। সাধারণ সুখদুঃখের ভাবগ্রামে তার স্থান নেই। তীব্র আনন্দ আর মর্মান্তিক বেদনার বুননে তা হয়ে ওঠে অপরূপ। লক্ষ্য করি,

০১ “আমার হৃদয় যেনো ভাঁজ করা রুমালের দলা
এখানে অঙ্কিত এক ঋষির ভূগোল।
বিনত রাতের কাছে খত লিখে বলি,
শূন্যে জমিয়েছি মোহরানা তার
বিহানের শুভ্র বাটে
কামনার ঘাম
চোখ মেলে চেয়ে দেখো সজন দাঁড়িয়ে
এখন তোমার ঘাটে,
বাহুতে জড়িয়ে তাকে
জলে ডুবে যাও
জীবনের বাঁকে বাঁকে পানশি ঘুরাও।”
( মবাগুন দাহে পোড়ে মনসিজ্ ক্ষ্যাপা)

০২” দুহাত বাড়িয়ে তাই গাঙচিল বিকেলের
এই দিনান্ত দীঘল আহবান,
চাঁদের সখির মতো
বাতাসের সাঁকো বেয়ে
আমার সত্তায় নেমে এসো,
শিশিরের স্নান সেরে
বৃক্ষ বালকের
পাগল পরাগে
মাখো
সবুজের সংলাপ”।
( প্রেমতোয়া নারী)

০৪.

একজন কবিকে চিরটাকাল একাই পথ চলতে হয়। কবির কোনো বন্ধু কোনো স্বজন কোনো গুরু থাকেনা। কবিতার পথে কবির পথচলা তাই মসৃণ নয়। চড়াই উৎরাই পেরিয়ে কবিকে ক্রমাগত সামনের দিকে এগুতে হয়। এভাবে চলতে চলতেই একদিন কবি তাঁর নিজস্ব রাজপথের প্রকৌশলী হয়ে যান। অসংখ্য শব্দ থেকে বেছে যেভাবে কবি নির্মাণ করেন কবিতার শরীর তেমনি তাঁর নিজ সড়কে চলতে চলতে একটা নতুন ভাষা,নতুন আলোর দিশা কবি দেখিয়ে দেন পাঠক সমাজকে। জীবন থেকে যৌবন, কৈশোর থেকে দুর্দান্ত ছেলেবেলা এভাবে নয় কবি সামনের দিকে এগিয়ে যান। উল্টো রথে নয়, তিনি রচনা করেন একটার চেয়ে আর একটা শক্তিশালী কবিতা। মানব সমাজের সামগ্রিক অভিজ্ঞতার তুলনায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে কবি নির্মাণ করেন অজয় অমর অক্ষয় কবিতা। যা কাল পেরিয়ে মহাকালের দরোজায় কড়া নাড়ে। নারীর প্রতি, প্রকৃতির প্রতি, কবি খৈয়াম কাদেরের ভাবনার যে বিস্তৃতি তা কেবলই কবিতার প্রতি দুর্বার আকর্ষণ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের পেছনে মরণ, দিবসের পেছনে রজনী, আশার পেছনে ভয়ের, রূপের পেছনে ঐশ্বরিক সত্য হিসেবে গ্রহন করেছেন, সেখানে নব্বই দশকের কবি খৈয়াম কাদের সকল বিষয়ে তৃষ্ণা নিয়ে লিখেছেন। এখানে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তুলনা নয়, এটা সময় ও চিন্তার ব্যবধান বুঝানোর জন্য বলা হচ্ছে। গুরুদেবের এবং তাঁর পরবর্তী আধুনিক বাংলা কবিতার কবিদের নিয়ে সমসাময়িক কবিদের কাব্য বিশ্লেষণ করা যেতেই পারে। এতে বাংলা কবিতার সর্বশেষ হালফিল অবস্থা কি তা বোঝা যায়। মৃত্যু নিয়ে সব কবিই লিখেছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ আর আল মাহমুদের কবিতায় মৃত্যু চিন্তা পাশাপাশি রেখে আলোচনা করলে বেরিয়ে আসে কবিতার নান্দনিকতা, শিল্পরস, ভাব, আবেগ,রূপক, উপমার কারুকাজ। কে কতোটা দক্ষতার সাথে এঁকেছেন তাঁর চিন্তায় মৃত্যুকে।

০৫.

কবি খৈয়াম কাদের এখনো লিখছেন। তাঁকে নিয়ে সর্বশেষ রায় দেয়ার সময় এখনো আসেনি। কারণ, তাঁর কলমের ডগা বেয়ে নেমে আসা আদুরে শব্দগুলো এখনো অবাক সচল। তবে শব্দ নিয়ে খেলা এই শব্দ প্রকৌশলী এভাবে শব্দের চাষবাস করলে অনেকদূর যাবেন একথা বলা যায়। কবিতা যেহেতু একটা জীবন চায় আর খৈয়াম কাদের অহর্নিশ কবিতার রূপ সাগরে ডুবে আছেন বিধায় আমরা সামনের দিকে একটা নতুন কবিতার সাম্রাজ্যের প্রাসাদ দেখতে পাই। যে প্রাসাদ নির্মাণের প্রকৌশলী খৈয়াম কাদের স্বয়ং।

( আজ ২০ নভেম্বর। কবির শুভ জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনের শুভ কামনা করছি ও তাঁর শতায়ু প্রার্থনা করছি)
২০/১১/২০২০

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
      1
23242526272829
30      
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com