রাজধানী উত্তরা জুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো ভূয়া সাংবাদিকদের ছবিসহ তালিকা চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামি শুক্রবার দেশপত্র পত্রিকায় দুই পাতা জুড়ে তাদের নানা অপকর্মসহ পরিচিতি বিশেষভাবে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনার কাছেও কী এমন ভূয়া সাংবাদিকের অপকর্মের বিবরণ জানা আছে? আছে কি তার ছবিসহ পরিচিতি? তাহলে আর দেরি কেন আজ এখনই পাঠিয়ে দিন আমাদের মেইলে () অথবা আমার এই ফেইসবুক আইডি’র ইনবক্সে। অপসাংবাদিকতামুক্ত জনপদ গড়ে তুলুন, সুস্থ্য পরিবেশ উপহার দিন
===============
‘বিটিভি’র রাজু’ এই পরিচয় প্রচার করে ভ‚য়াবাজ নারীখেকো প্রতারক রাজুকে কোলে নিয়ে উত্তরার একশ্রেণীর সাংবাদিক দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। রাজুর অপরাধ, অপকর্ম চাঁদাবাজি, বখড়াবাজি ছিটে ফোটা গলধঃকরণের জঘণ্যতায় যাদের জীবন কাটে তারাই সাংবাদিকতার ধ্বংসকান্ডেও মুখে কুলুপ এটে বসে থাকেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজু ও তার সাঙ্গাতরা যখন বুকে পিঠে সাংবাদিক লেখা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে গোটা উত্তরা জুড়ে চাঁদাবাজির মচ্ছব করেছে-তখন প্রকৃত সাংবাদিক দাবিদার হিসেবে আপনি সে চাঁদাবাজির হিস্যাটুকু হাতিয়ে নিয়েই চুপ ছিলেন? সংঘবদ্ধ রাজু চক্র যখন নারীদেহ বেচাকেনার হাট বসিয়েছে-আসল সাংবাদিক হিসেবে আপনিও সেখানে মৌজ মাস্তিতে লিপ্ত ছিলেন? মাদক সরবরাহ দিয়ে বৃহত্তর উত্তরা জুড়ে রাজু’রা যখন মাদকের হাটবাজার বসিয়েছে-আপনি কী সেখানকার খদ্দের ছিলেন? নাকি আপনিও খুচরা মাদক ব্যবসায়িদেরই একজন? তা না হলে এতসব অপকর্মের বিরোধিতা করে একটা লাইন নিউজ কেন আপনার পত্রিকায় বা অনলাইন পোর্টালটিতে প্রকাশ করেননি? কেন আপনার টিভিতে তা প্রচার করেননি? গোটা উত্তরার মধ্যে সাংবাদিক সম্পাদক আসাদ জং, তরুণ সংবাদ কর্মি সুমন, রফিকুল ইসলাম, রুবি আক্তার, মাহফুজ খোকন, উত্তরা সংবাদের তারেক, এটিভি জালাল, মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমা, তুহিন সারোয়ার, কামরুল হাসান রনি, জমির, রকি, মহাসীন মাদবরসহ হাতে কয়েকজনকে সাংবাদিকতার মর্যাদার প্রশ্নে সরব থাকতে দেখেছি…তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা আর অফুরন্ত ভালবাসা !!!
বিমানবন্দর থেকে উত্তরা পর্যন্ত পা ফেললে তান্ডব সৃষ্টিকারী কথিত সাংবাদিকদের অভাব তো দেখি না। ভূয়া সাংবাদিক, ফেসবুক সাংবাদিক, সোর্স সাংবাদিক, দলবাজ সাংবাদিক, টোয়েন্টিফোর ডট কম মার্কার সাংবাদিক-সম্পাদক, আইপি টিভি, ফেসবুক লাইভ সাংবাদিক-আরো কত শত পদ পদবীর সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে উত্তরাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ। কোথাও দু’ লাইন না লিখেও শুধু আইডি কার্ড কিনেই রাতারাতি সাংবাদিক বনেছেন কেউ কেউ। সরাসরি বারবণিতা থেকে সাংবাদিক সেজেছেন আবার কেউবা বারবণিতা কাম সাংবাদিক হয়ে জীবন সংসার চালাচ্ছেন। ভূয়াবাজির মাধ্যমে সাংবাদিক পরিচয়ে জীবিকা নির্বাহের পরও কী পেশাটির প্রতি এতটুকু মমত্ব জাগে না? পেশাটির সম্মান রক্ষায় এতটুকুও কী দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হয় না? চাঁদাবাজির যোগ্যতা না থাকার, বখড়াবাজির ভাগীদার না হওয়ায় মূলধারার পেশাজীবী সাংবাদিকদের প্রতি অশ্রদ্ধাবোধ জন্ম নেয় কোন্ বিবেক থেকে?
সহকর্মি কোনো সাংবাদিক বন্ধু প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হলে উল্টো তারই বিরুদ্ধে ভূমিকা নেয়ার মতো ‘জাত বেঈমান’ সাজতে একটুও দ্বিধা হয় না? অপরাধ অপকর্মকারীদের হাতে সহকর্মি সাংবাদিক ভাইটি যখন হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর যন্ত্রণায় কাতরায় তখনও কেউ কেউ হামলাকারীর সঙ্গে মদের আসরে বসে অট্ট হাসিতে মেতে উঠেন। আহত সাংবাদিকের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা আদায় করে নিজেরাই তা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। ছিঃ ছিঃ ছিঃ! কোন্ মাটিতে তৈরি আপনি? আপনিও কী কোনো মায়ের গর্ভেই জন্ম নিয়েছেন? বিশ্বাস করতে বেশ কষ্ট হয়।
সচেতন মানুষজন মাঝে মধ্যেই বিণয়ের সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন: র্যাবের হাতে ভূয়া র্যাব ধরা পড়ে, ডিবির হাত থেকে ভূয়া ডিবির গ্রুপও নিস্তার পায় না। কিন্তু ভূয়া সাংবাদিক, সোর্স সাংবাদিক, প্রতারক সাংবাদিক দমনে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর দায়িত্বটা কি? উত্তরা জুড়ে ডজন ডজন প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাবসহ নানা নামের সাংবাদিক সংগঠন গজিয়ে উঠেছে। খোদ উত্তরা থেকেই বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়, আছে আইপি টিভি চ্যানেলও। গতকালই তো দাপিয়ে বেড়ানো দাপুটে ‘সাংবাদিক চাঁদাবাজ’ মোঃ রাজু আহমেদ যে ভূয়া সাংবাদিক, তিনি যে বিটিভি’র মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বেড়ান তা প্রমান করে দিলাম….এরপর ২৪টি ঘন্টা পেরিয়ে গেল, উত্তরার পেশাজীবী সাংবাদিক সংগঠনগুলো কী ভূমিকা রাখলেন? সাংবাদিকতার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে, কলঙ্ক মোচনে সর্বোপরি চিহ্নিত অপরাধীদের কবল থেকে সাংবাদিক ও সাংবাদিকতাকে রক্ষা করতে আপনাদের কী কোনো দায়িত্ববোধই নেই? সেখানে বিবেকবোধও কী কঠিন শীতের নারকেল তেলের মতো জমে আছে শিশিতে?
তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার ইনভেস্টিগেশন সেল এর ইনচার্জ সাঈদুর রহমান রিমন এর ফেসবুক থেকে।